thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

সিলেট বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রের দ্বার খুলল

২০১৮ নভেম্বর ০২ ২১:৩৭:৪২
সিলেট বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রের দ্বার খুলল

সিলেট প্রতিনিধি : অবশেষে দ্বার খুলে দেওয়া হলো সিলেট নগরীর টিলাগড় এলাকায় অবস্থিত সিলেট বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রের। প্রায় এক যুগ পর নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে আলোর মুখ দেখল দেশের তৃতীয় এই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র। শুক্রবার দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় এটি। নামমাত্র মূল্যে প্রবেশ করে তারা দেখতে পান বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী।

ইতিমধ্যে এখানে ৫৯টি প্রাণী আনা হয়েছে। প্রবেশদ্বার খুলে দেওয়ার পর পরই প্রাণী দেখার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন দর্শনার্থীরা। সকাল থেকেই শত শত দর্শনার্থীর আগমন ঘটে।

সিলেট বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে নগরীর টিলাগড়ে শুরু হয় টিলাগড় ইকো পার্কের নির্মাণ কাজ। পাহাড়-টিলাবেষ্টিত ও ঘন সবুজে আচ্ছাদিত ১১২ একর আয়তনের এই ইকো পার্ক তৈরিতে প্রথম পর্যায়ে ব্যয় হয় ১ কোটি ১৮ লাখ ১৪ হাজার টাকা। ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় টিলাগড় ইকো পার্কে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। সংরক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য সে বছর ৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা বরাদ্দও দেওয়া হয়। ওই প্রকল্পের কাজ তিন বছরের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। ৩ বছরে ৬ কোটি টাকার কাজ হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় ৪ কোটি টাকা ফিরিয়ে নেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। ২০১৬ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রটি সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দপ্তরের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

সেখানে প্রাণীদের জন্য ময়ূর শেড, গণ্ডার শেড, হরিণ শেড ও হাতি শেড তৈরি করা হয়। লোকবল সংকটের কারণে পরিত্যক্ত অবস্থায় শেডগুলো পড়ে থাকে প্রায় দু'বছর।

সম্প্রতি গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে দুটি জেব্রাসহ ৯ প্রজাতির ৫৮টি প্রাণী আনা হয়। এর মধ্যে দু'টি হরিণ, ১২টি ময়ূর, চারটি আফ্রিকান প্যারট, একটি গোল্ডেন ফিজেন্ট পাখি, তিনটি সিলভার ফিজেন্ট পাখি, তিনটি ম্যাকাও পাখি, চারটি সান কানিউর, একটি অজগর ও ৩০টি লাভ বার্ডও রয়েছে। আগামী সপ্তাহে যুক্ত হবে আরও দু'টি হরিণ। ডিসেম্বরে আনা হবে বাঘ।

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরএসএম মনিরুল ইসলাম বলেন, শিগগিরই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে এখানে সব ধরনের প্রাণী আনা হবে। উদ্বোধনের পর অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত (শীতকালীন সময়সূচি) সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা এবং ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এ সংরক্ষণ কেন্দ্র। এখন নামমাত্র ফি পরিশোধ করতে হবে দর্শনার্থীদের।

তিনি জানান, আগামীতে সিংহ, বিয়ার, হনুমান, বেজি, বনরুই, বাঘডাস, বনবিড়াল, শিয়াল, খেকশিয়াল, গন্ডার, এশীয় হাতি, পরিযায়ী পাখি, জলজ পাখি, বনছাগল, বিভিন্ন প্রজাতির বানর, কালো ভালুক, মিঠা পানির কুমির, নীল গাই, জলহস্তী আনার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশীয় জীবজন্তুর আশ্রয়স্থল হিসেবে হলেও এখানে নেপাল, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও সৌদি আরব থেকে বেশির ভাগ প্রাণী নিয়ে আসা হবে।

তিনি আরও জানান, প্রকল্পের জন্য ৪০ প্রজাতির প্রায় সোয়া চারশ' প্রাণী কেনা হবে, যার মধ্যে দু'শ প্রাণীই থাকবে বিরল ও নতুন। এছাড়া, এখানে প্রাণীদের স্বাস্থ্য ও নানা ধরণের সেবার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি থেকে চিকিৎসা ও খাদ্যের মান পরীক্ষার জন্য আধুনিকমানের উপকরণ কেনা হবে।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/নভেম্বর ০২,২০১৮)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর