thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

গ্রেফতার ৫২৯ নেতাকর্মীর তালিকা ইসিকে দিল বিএনপি

২০১৮ নভেম্বর ২১ ২৩:২১:৫২
গ্রেফতার ৫২৯ নেতাকর্মীর তালিকা ইসিকে দিল বিএনপি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বাংলাদেশে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অভিযোগ করেছে, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকেএ পর্যন্ত তাদের দলের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে - যার মধ্যে মনোনয়নপ্রত্যাশী কয়েকজন নেতাও রয়েছেন ।

আটককৃত ৫২৯ জনের একটি তালিকা নির্বাচন কমিশনে দিয়ে বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেছেন, সরকার পুলিশকে ব্যবহার করে সারাদেশে বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। খবর বিবিসির।

পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে বিএনপি নেতারা বলেছেন, "নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় পুলিশের ভূমিকা এখন তাদের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।"

তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দাবি করেছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দু'দিন আগে গত ৬ই নভেম্বর ঢাকায় বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমাবেশ করেছিল।

সেই সমাবেশ শেষে গ্রেফতার হন টাঙ্গাইল-৭ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ। তিনি এবারও ঐ আসন থেকে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী।

তার স্ত্রী ফাতেমা আজাদ বলছিলেন, তার স্বামীর বিরুদ্ধে পুরোনো কোন মামলা না থাকলেও তাকে এখন ঢাকার পল্টন থানায় একটি নাশকতার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

বিএনপি অভিযোগ করেছে, তফসিল ঘোষণার পর গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে তাদের দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী মোট পাঁচজন নেতা রয়েছেন।

তাদের মধ্যে ঢাকায় দলীয় মনোনয়নের আবেদন নিতে এসে গ্রেফতার হওয়া বাগেরহাটের বিএনপি নেতা ইব্রাহিম হোসেন এবং নেত্রকোনার আনোয়ারুল হকের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না থাকলেও কেন গ্রেফতার করা হয়েছে - তার কারণ তারা জানতে পারেননি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তফসিলের পর থেকে এপর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া তাদের দলের ৫২৯ জন নেতা কর্মির তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছেন। এর আগেও বিএনপি দুই দফায় তাদের দলের গ্রেফতারকৃতদের তালিকা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনে।

পুলিশ প্রশাসন নিয়ে বিএনপি উদ্বিগ্ন কেন?

বিএনপি নেতা মি: আলমগীর বলছেন, 'পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা সরকারের পক্ষে কাজ করছেন।'

পুলিশ প্রশাসনের পক্ষপাতিত্ব এবং উর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে বিএনপি তাদের এ অভিযোগ নির্বাচন কমিশনেও জানিয়েছে।

এমন অভিযোগের ব্যাপারে বিএনপি নেতাদের যুক্তি হচ্ছে, কোন মামলা না থাকলেও বিএনপি নেতা কর্মিদের গ্রেফতারের পরই 'গায়েবী মামলা' দেয়া হচ্ছে।অনেক ক্ষেত্রে কয়েক বছরের পুরোনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে।

বিএনপি নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে তাদের সংলাপে এখন আর কোন মামলা না করা এবং রাজনৈতিক নেতা কর্মিদের গ্রেফতার না করার আশ্বাস তারা পেয়েছিলেন।

কিন্তু এরপরও গ্রেফতার অব্যাহত থাকার ঘটনার পিছনে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষপাতিত্ব রয়েছে বলে তারা মনে করেন।

এমন প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর কতটা নিয়ন্ত্রণ রাখছে, এ নিয়েও বিএনপি নেতাদের সন্দেহ রয়েছে।

সরকার কি বলছে?

পুলিশের উর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, বিএনপিসহ বিরোধী জোট রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে নানান ধরণের বক্তব্য দিচ্ছে।

মন্ত্রী দাবি করেছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে।

একজন নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগ্রেডিয়ার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলছিলেন, গ্রেফতারের ব্যাপারে বিএনপির অভিযোগ তদন্ত করা হবে।

এদিকে নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেছেন, বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করবে।

তিনি জানান, সেই বৈঠকে ১২ দফা নির্দেশনা দেয়া হবে।

তিনি উল্লেখ করেছেন, ভোটকেন্দ্র ভোটারদের নিরাপত্তা দেয়া, নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ সুষ্ঠু রাখা এবং ভোটের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করার বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করা হবে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/নভেম্বর ২১,২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর