thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

তারামন বিবির জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন

২০১৮ ডিসেম্বর ০১ ১৭:৪৩:৪৮
তারামন বিবির জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম নারী মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতীক তারামন বিবির জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।

মৃত্যুকালে তিনি স্বামী ও এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে যান। তারামন বিবি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস, ডায়েবেটিস আর শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন।

শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এরপর তিনটায় রাজিবপুর উপজেলার কাচারীপাড়া তালতলা কবরস্থানে তাকে দাফন সম্পন্ন হয়।

গার্ড অব অনারে অংশ নেন কুড়িগ্রামের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, পুলিশ সুপার মেহেদুল করিম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-পেশাজীবী ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

তারামন বিবি কুড়িগ্রাম জেলার চর রাজিবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আবদুস সোহবান এবং মায়ের নাম কুলসুম বিবি। তার স্বামীর নাম আবদুল মজিদ। তাদের এক ছেলে এক মেয়ে। ১৯৭১ সালে তারামন বিবি ১১ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেন। তখন ১১ নম্বর সেক্টরের নেতৃত্বে ছিলেন সেক্টর কমান্ডার আবু তাহের। মুহিব হাবিলদার নামে এক মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেন। তিনি তারামনকে ক্যাম্পে রান্নাবান্নার জন্য নিয়ে আসেন।

তখন তারামনের বয়স ছিল মাত্র ১৩ কিংবা ১৪ বছর। কিন্তু পরবর্তীতে তারামনের সাহস ও শক্তির পরিচয় পেয়ে মুহিব হাবিলদার তাকে অস্ত্র চালনা শেখান। একদিন দুপুরে খাবারের সময় তারামন ও তার সহযোদ্ধারা জানতে পারেন পাকবাহিনীর একটি গানবোট নিয়ে তাদের দিকে আসছে। তারামন তার সহযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধে অংশ নেন এবং তারা শত্রুদের পরাস্ত করতে সক্ষম হন। এরপর তারামন অনেক সম্মুখ যুদ্ধে পুরুষ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে অংশ নেন। অনেকবার তাদের ক্যাম্প পাকবাহিনী আক্রমণ করেছে, তবে ভাগ্যের জোরে তিনি প্রতিবার বেঁচে যান। যুদ্ধ শেষে ১৯৭৩ সালে তৎকালীন সরকার মুক্তিযুদ্ধে তারামন বিবিকে তার সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ‘বীরপ্রতীক’ উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তাকে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। ১৯৯৫ সালে ময়মনসিংহের একজন গবেষক প্রথম তাকে খুঁজে বের করেন। নারী সংগঠনগুলো তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। সেই সময় তাকে নিয়ে পত্রিকায় প্রচুর লেখালেখি হয়। অবশেষে ১৯৯৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর তৎকালীন সরকার এক অনাড়ম্বর পরিবেশে আনুষ্ঠানিকভাবে তারামন বিবিকে বীরত্বের পুরস্কার তার হাতে তুলে দেন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/ডিসেম্বর ০১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর