thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

কলড্রপ ক্ষতিপূরণ চেয়ে ৬ কোম্পানির বিরুদ্ধে রিট

২০১৮ ডিসেম্বর ১৩ ১১:২৭:২৭
কলড্রপ ক্ষতিপূরণ চেয়ে ৬ কোম্পানির বিরুদ্ধে রিট

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : গ্রাহকদের মতামত না নিয়ে মোবাইল ফোনের কলচার্জ বৃদ্ধি, কলড্রপে গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ না দেওয়া ও বিরক্তিকর ক্ষুদে বার্তা প্রেরণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য রিটটি কার্যতালিকায় উঠে এসেছে।

আইন সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোটার্স ফোরামের সদস্য এম.বদিউজ্জামান, মেহেদী হাসান ডালিম, মুঠো ফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমদ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাশিদুল হাসান বাদী হয়ে বুধবার (১২ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন।

রিটকারীদের পক্ষের আইনজীবী হিসেবে আছেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।

রিটে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের অধিকার সুরক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে রুল জারি এবং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে মোবাইল গ্রাহকদের অধিকার তত্ত্বাবধান,পর্যবেক্ষণ এবং সুরক্ষায় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

এছাড়া কলড্রপে গ্রাহকদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ ও ক্ষতিপূরণ দিতে আলাদা কমিটি গঠনের আর্জি জানানো হয়েছে।

পাশাপাশি পুনরায় কলরেট ও অন্যান্য চার্জ বাড়ানো ও মোবাইল গ্রাহকদের অনাবশ্যক ক্ষুদে বার্তা প্রেরণে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে।

রিটে টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান ,সেক্রেটারি, মোবাইল অপারেটর গ্রামীণ ফোন লিমিটেড, এয়ারটেল লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড, বাংলালিংক লিমিটেড ও টেলিটকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান জানান, এমনিতেই পাশ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে মোবাইল কলচার্জ বেশি। এরপরে গ্রাহকের মতামত না নিয়ে চলতি বছরের আগস্ট মাসে অতিরিক্ত কলরেট চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা গ্রাহকদের অধিকারের পরিপন্থী ও বেআইনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের(বিটিআরসি) প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ১৩ মাসে ২২২ কোটি বার কলড্রপ করেছে মোবাইল অপারেটরগুলো।

এর মধ্যে দেশে গ্রাহক সংখ্যায় শীর্ষে থাকা গ্রামীণফোন কলড্রপের ক্ষেত্রেও শীর্ষে অবস্থান করছে। গত ১৩ মাসে এ অপারেটরের কল ড্রপ হয়েছে ১০৩ কোটি ৪৩ লাখ বার। একই সময়ে গ্রাহক সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রবির কলড্রপ হয়েছে ৭৬ কোটি ১৮ লাখ বার। সক্রিয়তার বিবেচনায় গ্রামীণফোনের ৭কোটি ৭ লাখ এবং রবি ও এয়ারটেলের রয়েছে ৪ কোটি ৬১ লাখ সংযোগ। গত ১৩মাসে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর মোট কলড্রপ হয়েছে ২২২ কোটি বার।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৩ মাসেদেশের সব মোবাইল ফোন অপারেটরের কলড্রপের পরিসংখ্যান নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন(বিটিআরসি)।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, গ্রামীণফোন ও রবির পর সবচেয়ে বেশি কলড্রপ হয়েছে বাংলালিংকের ৩৬ কোটি ৫৪ লাখ আর টেলিটকের আনুমানিক ৬ কোটি বার। বাংলালিংকের সংযোগ রয়েছে ৩ কোটি ৩৪ লাখ এবং সরকারি মোবাইল অপারেটরটেলিটকের রয়েছে ৩৮ লাখ ৭৩ হাজার সংযোগ।

২০১৪ সালে কয়েকটি অপারেটর কলড্রপের বিপরীতে গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু করে। এ নিয়ে তারা প্রচারও চালায়। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই ঘোষণা ছাড়া ক্ষতিপূরণ বন্ধ করে দেয় অপারেটরগুলো। এ নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এমনকি সরকারের একাধিক মন্ত্রীও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরপর গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে অপারেটরগুলোর কাছ থেকে কলড্রপের বিপরীতে ক্ষতিপূরণ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত বছরের জানুয়ারি থেকে কলড্রপের জন্য গ্রাহককেক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা অপারেটরগুলোর। কিন্তু অপারেটরদের পক্ষ থেকে এবিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। এই প্রেক্ষিতে রিট পিটিশনারদের পক্ষ থেকে গত ১০ ডিসেম্বর বিবাদীদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। নির্ধারিত সময়ে নোটিশের জবাব না পেয়ে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করেছেন বলে জানান রিটকারীদের আইনজীবী।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/ডিসেম্বর ১৩, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর