thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

রাজনৈতিক দল গড়ছেন মিয়ানমারের সাবেক সেনাপ্রধান

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ০২ ০৯:৩৩:২৫
রাজনৈতিক দল গড়ছেন মিয়ানমারের সাবেক সেনাপ্রধান

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : মিয়ানমারে সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের নেত্বত্বে রাজনৈতিক দল গঠন করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম ইরাবতি জানিয়েছে, সাবেক সেনাপ্রধানর ও পার্লামেন্টে নিম্নকক্ষের স্পিকার উ শোয়ে মানের নেতৃত্বে ওই দল গঠিত হতে যাচ্ছে।

আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় থাকা দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেসামরিক সরকারকে শক্তিশালী করতে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির প্রতি অব্যাহত সমর্থন থাকবে তাদের। সেনাপ্রাধান্যের সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই ওই রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের প্রসঙ্গ সামনে এলো।

১৯৬৫ সালে ডিফেন্স সার্ভিস অ্যাকাডেমি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন উ শোয়ে মান। দ্রুত পদোন্নতি পেতে থাকেন তিনি। ২০১০ সালে সেনাপ্রধান নিযুক্ত হন। একসময় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী তার নিয়ন্ত্রণে ছিলো। উ শায় মানকে তখন তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব মনে করা হতো। অবসরের পর ২০১০ সালে তিনি ইউনিয়ন সলিডারিটি ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) দলের হয়ে নির্বাচন করেন এবং নিম্নকক্ষের স্পিকার নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট উ থেন সেনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে পার্টির নেতৃত্ব হারান তিনি। সে বছর নির্বাচন করলেও এনএলডির কাছে হেরে যান।

আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় থাকা দলটির সম্ভাব্য নেতা নিম্নকক্ষের সাবেক আইনপ্রণেতা উ উইন ও। তিনি ইরাবতীকে বলেন, ‘এখনও দলের নাম ঠিক না করায় নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করা হয়নি। সম্ভাব্য তালিকায় ইউনিয়ন পার্টি, পিপলস অ্যাফেয়ার পার্টি, ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট পার্টি কিংবা সিটিজেনস পার্টি নামকরণের প্রস্তাব রয়েছে ।’ দলটিতে সাবেক সেনাকর্মকর্তাদের কেউ কেউ থাকবেন বলে নিশ্চিত করেছে ইরাবতি। তারা জানিয়েছে, বর্তমান লিগাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড স্পেশাল কেস অ্যাসেসমেন্ট কমিশনের অন্তত চারজন সদস্য থাকবেন ওই দলে।

পার্টির নেতৃত্বের পাশাপাশি নির্বাচনে হেরে যাওয়া ২০১৬ সালে অং সান সু চি তাকে লিগাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড স্পেশাল কেস অ্যাসেসমেন্ট কমিশনের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। সু চির সঙ্গে তার বন্ধুত্বে ইউএসডিপি সমর্থকরা তাকে বেইমান বলে আখ্যা দেয়। তবে সাবেক আইনপ্রণেতা উ উইন ও বলছেন, ‘সু চি পার্লামেন্টে প্রবেশের পর থেকে আমরা তার পাশে আছি। যদিও আমরা হেরেছি ও পদত্যাগ করেছি। কিন্তু উ শায় মান লিগাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড স্পেশাল কেস অ্যাসেসমেন্ট কমিশনের মাধ্যমে সহায়তা করে গেছেন সু চিকে। কারণ আমরা চাই বেসামরিক সরকার শক্তিশালী ও স্থায়ী হোক। এই উদ্দেশ্য নিয়েই আমরা সহায়তা করছি। কেউ আমাদের সমর্থন দিচ্ছেন এবং কেউ সমালোচনা করছেন। তারপরও আমরা আমাদের লক্ষ্যে অটুট। যখন প্রয়োজন আমরা সাহায্য করবো। ’

উ উইন ও দাবি করেন, রাষ্ট্রক্ষমতা তাদের লক্ষ্য না, দেশের জন্য কাজ করতে চান। সেই কাজে যেন কোনও আইনি জটিলতা না হয়, তা নিশ্চিত করতেই রাজনৈতিক দল গঠনের মধ্য দিয়ে আত্মাপ্রকাশ করতে হচ্ছে তাদের। উ শায় মানের ঘনিষ্ঠ একজন দাবি করেছেন, সু চির সঙ্গে এই দল গঠন নিয়ে কথা হয়েছে।

ইউএসডিপির মুখপাত্র উ নান্দা হ্লা মিন্ত মন্তব্য করেছেন, ইউএসডিপি শীর্ষে যারাই থেকেছেন তারা দেশ ও জনগণের হয়ে কাজ করেছেন। তবে আমরা দুঃখিত যে এই দলটি গঠনে যার এত ভূমিকা ছিলো তিনি আজ অন্য ভূমিকা নিয়েছেন। উ নান্দা হ্লা অবশ্য স্বীকার করেছেন , উ শোয়ে মানে আলাদা দল গঠন করলে তাদের দলের ওপর নিশ্চিতভাবেই প্রভাব পড়বে।

রাজনীতি বিশ্লেষক ও নিম্নকক্ষের সাবেক আইনপ্রণেতা উ ইয়ে তুন মনে করছেন, উ শায়ে মানের দল বেশ খানিকটা জনসমর্থন আদায়ে সমর্থ হলেও নির্বাচনে জয় পাওয়ার মতো আসন নিশ্চিত করতে পারবেন না। তার মতে, এনএলডি সমর্থকরা কখনোই তাকে ভোট দেবেন না। শুধুমাত্র ইউএসডিপির সাবেক ও হতাশ সমর্থকরা তাকে সমর্থন দিতে পারে যা এনএলডিকেই শক্তিশালী করতে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর