thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ 24, ১৪ চৈত্র ১৪৩০,  ১৮ রমজান 1445

হাঁপানি বা অ্যাজমা (Asthma ) প্রতিকারের উপায়

২০১৯ এপ্রিল ২৬ ১৯:১৪:৪৭
হাঁপানি বা অ্যাজমা (Asthma ) প্রতিকারের উপায়

ডা. মো. শাহিনুর রহমান

হাঁপানি বা অ্যাজমা (Asthma) শব্দটি গ্রীক ভাষা থেকে এসেছে, যার অর্থ হয় হাঁপ ধরা বা হা করে শ্বাস নেওয়া। গ্রীক চিকিৎসক হিপোক্রেটিস যে কোন ধরনের শ্বাসকষ্টকে নাম দিয়েছিলেন হাঁপানি । হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট এমন একটা রোগ যার কোন সুনির্দিষ্ট কারণ নেই।

মূলত অ্যাজমা বা হাঁপানি শ্বাসনালির অসুখ হওয়াকে বুঝায়। হাঁপানি হলো সাময়িক আক্ষেপিক শ্বাসকষ্ট, তৎসহ বক্ষে চাপ বা কষিয়া ধরা বোধ এবং শ্বাসনালিতে সাঁই সাঁই শব্দ হওয়াকে বুঝায়। যদি কোন কারণে শ্বাসনালিগুলো অতিমাত্রায় সংবেদনশীল (হাইপারসেনসিটিভ) হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন ধরনের উত্তেজনায় উদ্দীপ্ত হয়ে বাতাস চলাচলের পথে বাধার সৃষ্টি হয়, ফলে শ্বাস নিতে বা ফেলতে কষ্ট হয়।

আমাদের শ্বাসনালি গুলি খুবই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যা ২ মিমি থেকে ৫ মিমি ব্যাস বিশিষ্ট এবং চারদিকে মাংশপেশি পরিবেষ্টিত। এ ক্ষুদ্র শ্বাসনালির ভেতর দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় খুব সহজেই বাতাস আসা-যাওয়া করতে পারে। যদি কখনও এলার্জিক বা উত্তেজক কোন জিনিস শরীরে প্রবেশ করে তখন শ্বাসনালির মাংস পেশিগুলো সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে ফলে শ্বাসনালি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় মিউকাস জাতীয় আঠালো কফ এবং ইনফেকশনের কারণে শ্বাসনালির ভেতরের মিউকাস আবরণী ফুলে ওঠে। ফলে শ্বাস নিতে ও ফেলতে কষ্ট হয়। আর মিউকাস জাতীয় আঠালো কফ উঠিয়ে ফেলার লক্ষ্যে অনবরত কাশি হতে থাকে এবং শ্বাস কষ্টও বাড়তে থাকে।

হাঁপানির প্রকারভেদ

হাঁপানি বা অ্যাজমা সাধারণত ৩ ধরনের হয়ে থাকে-

১. ব্রঙ্কিয়াল এজমা (Bronchial Asthma )

২. স্প্যাজমডিক এজমা ( Spasmodic Asthma)

৩. কার্ডিয়াক এজমা (Cardiac Asthma)

হাঁপানি বা অ্যাজমা (Asthma) হওয়ার কারণ

১. বংশগত কারণ (পূর্বে পিতা-মাতা, দাদা-দাদি, নানা-নানির কারো হাঁপানি থাকলে)

২. অতিশয় দুর্বলতা বা পুষ্টির অভাব থাকলে।

৩. অক্সিজেন হিসেবে যে বায়ু গ্রহন করা হয় সে বায়ুতে উপযুক্ত পরিমান অক্সিজেন না থাকলে।

৪. ঠান্ডা আবহাওয়া, আর্দ্রবায়ু ও জলাভূমিতে বসবাস করলে।

৫. ধুলোবালির মধ্যে থাকা মাইট নামের ক্ষুদ্র কীট, ফুলের পরাগরেণু থেকে; পশুপাখির পালক, ছত্রাক, মল্ট, ইস্ট, গুড়া, উগ্রগন্ধ, কুকুর, গরু প্রভৃতির দেহের গন্ধ শ্বাসনালীর মধ্যে প্রবেশ করলে।

৬. প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সিগারেটের ধোঁয়ার মধ্যে যারা থাকে তাদের এ রোগ হতে পারে বরং অনেক ক্ষেত্রেই ধুমপান হাঁপানির তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। হাঁপানির ওষুধের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়, কখনো কখনো ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী কার্যক্ষমতাও করে দেয়।

৭. মহিলাদের হরমোনের সমস্যার কারনেও হাঁপানি বা অ্যাজমা হতে পরে।

হাঁপানি বা অ্যাজমার লক্ষণ

১. হঠৎ শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হওয়া এবং সাথে শুষ্ক কাশি হওয়া।

২. শ্বাসনেবার ও ফেলার সময় বাঁশির মত সাঁ সাঁ শব্দ হওয়া এবং শ্বাস নেবার চেয়ে ফেলতে বেশি কষ্ট হওয়া।

৩. হঠাৎ করে দমবন্ধভাব অনুভব করা।

৪. গরম, ঠান্ড বা ধূলা লাগলে কাশি হওয়া অথবা শুধু শুষ্ক কাশি।

৫. সর্দি যত বেশি আঠাল বা শক্ত হয় রোগীর তত বেশি কষ্ট হয। শ্লেস্মা তরল হয়ে কফ বের হলে রোগী সুস্থ বোধ করে।

৬. পরিশ্রম করলে বুকের ভিতর বাঁশির মত সাঁ সাঁ শব্দ হওয়া।

৭. শ্বসকষ্ট অবস্থায় চিৎ হয়ে শুতে না পারা, উঠে বসলে কিছুটা আরাম পাওয়া অথবা ঘুম ভাংলে কাশি বা শ্বাসকষ্ট হওয়া। হাঁপানি বা অ্যাজমা (Asthma ) হলে

করণীয়

১. একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের সরণাপন্ন হওয়া। ( হোমিওপ্যাথিতে এর সফল চিকিৎসা রয়েছে)

২. হাঁপানির আক্রনের সময় ফুটন্ত পানির বাষ্প টানলে কিছুটা কম হয়।

৩. পুষ্টিকর ও লঘুপাক খাদ্য আহার করা ভাল।

৪. পুরাতন চালের ভাত, মাছ, শাকশব্জি ও লেবু উপকারী।


লেখক: ডা. মো. শাহিনুর রহমান, বিএঅনার্স এমএ, ডিএইচএমএস-ঢাকা, শেখ বদরুদ্দীন হোমিও চেম্বার ৪২/২ ঢালকানগর লেন গেণ্ডারিয়া ঢাকা-১২০৪; মোবাইল-০১৭১১-১৩৮-১৩৫।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/এপ্রিল ২৬,২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ খবর

স্বাস্থ্য - এর সব খবর