thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল 24, ৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ৭ শাওয়াল 1445

উত্তরখানের মা-মেয়ে ও ছেলের আত্মহত্যার আলামত পাচ্ছে পুলিশ

২০১৯ মে ১৫ ২২:০৮:৫৪
উত্তরখানের মা-মেয়ে ও ছেলের আত্মহত্যার আলামত পাচ্ছে পুলিশ

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রাজধানীর উত্তরখানের একটি বাসা থেকে মা-মেয়ে ও ছেলের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা হলেও তদন্তে আত্মহত্যার আলামতই পাচ্ছে পুলিশ।

শুরুর দিকে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক তিনজনকেই হত্যার কথা বলেছিলেন। তবে আগের দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে গতকাল বুধবার চিকিৎসক বলেছেন, তিনজনের মধ্যে অন্তত একজন আত্মহত্যা করেছেন। কে আত্মহত্যা করেছেন তা পূর্ণাঙ্গ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এবং পুলিশের তদন্তের শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

গত রোববার রাতে উত্তরখানের চাপানেরটেক এলাকার একটি বাসার দরজা ভেঙে জাহানারা বেগম মুক্তা (৪৮), মেয়ে তাসফিয়া সুলতানা মিম (২০) ও ছেলে কাজী মুহিব হাসান রেসির লাশ উদ্ধার করা হয়। মেয়ে মিম শারীরিক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছিলেন। ছেলে কাজী মুহিব একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে তাদের ময়নাতদন্ত শেষ করে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ জানিয়েছিলেন, মা ও মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। ছেলেকে গলা কেটে হত্যার আলামত পেয়েছেন তারা। তবে মঙ্গলবার সোহেল মাহমুদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বুধবার দুপুরে তারা তাদের মতামত প্রকাশ করেন।

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ বলেন, তিনজনের মধ্যে দুজনকে হত্যার পর একজন আত্মহত্যা করেছেন। তারা ধারণা করছেন, হয়তো দুই সন্তানকে হত্যার পর মা নিজে আত্মহত্যা করেছেন। এমনও হতে পারে ছেলে তার মা ও বোনকে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেছেন।

এই চিকিৎসক বলেন, ঘটনাস্থল এবং পুলিশের বিবরণ থেকে বোঝা যায়, দরজা লক ছিল ও ভেতর থেকে ছিটকানি আটকানো ছিল। শাবল দিয়ে তা ভাঙা হয়েছে। দুটি কক্ষের বিছানায় রক্ত ও বমি পাওয়া গেছে। সেগুলো সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সিআইডিতে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া টেবিলে কীটনাশকের বোতল ও ঘুমের ওষুধের প্যাকেটে দুটো ওষুধ পাওয়া গেছে। ওই প্যাকেটে দশটি ট্যাবলেট থাকার কথা ছিল। আটটি নেই। পুলিশ দুটি ছুরি ও একটি বটি জব্দ করেছে। তা থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

ময়নাতদন্তের পর পর হত্যার আলামতের কথা বলার কারণও ব্যাখ্যা করেন সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ।

তিনি বলেন, তিনদিন পর মরদেহ উদ্ধার হওয়ার কারণে আঘাতের আলামত অনেক বদলে গেছে। কিন্ত দরজা ভেঙে তাদের উদ্ধার করা, ভেতরে চিরকুট পাওয়া এসব দেখে আত্মহত্যা ধারণা হচ্ছে। কিন্তু ছেলের গলাকাটার ধরন দেখে এখনও কিছুটা সন্দেহ রয়ে গেছে। এটি আত্মহত্যার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না। সব মিলিয়ে বলা যায়, তিনজনের একজন দুজনকে মেরে আত্মহত্যা করেছে। রাসায়নিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদন, পূর্ণাঙ্গ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও পুলিশের তদন্তের পর এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া যাবে।

এদিকে উত্তরখান থানার ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, বাসাটি থেকে র্দুগন্ধ বের হওয়ার খবরে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পুরো বাসাটির চারপাশ ভালো করে যাচাই করেছিলেন। দরজা-জানালা যে অবস্থায় ছিল, তাতে কেউ ভেতরে ঢুকে খুন করে পালিয়ে যাওয়ার আলামত মিলছিল না। শেষপর্যন্ত দরজা ভেঙে ভেতরে তিনজনের লাশ পাওয়া যায়। ভেতরে পাওয়া আলামত বিশ্নেষণ করে তারা ঘটনাটিকে আত্মহত্যাই ধারণা করে আসছেন।

ওসি বলেন, জাহানারার ভাই মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। তবে তাদের এখন পর্যন্ত তদন্তে ঘটনাটিকে আত্মহত্যাই মনে হচ্ছে।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ মে ১৫,২০১৯)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর