thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল 24, ১০ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৪ শাওয়াল 1445

দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতাকারীদের শাস্তি উপজেলা নির্বাচনের পর

২০১৯ জুন ১৮ ১১:৪৬:০৮
দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতাকারীদের শাস্তি উপজেলা নির্বাচনের পর

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া দলের নেতা, এমপি ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে শাস্তির সিদ্ধান্ত হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এটা সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। দায়িত্বপ্রাপ্তরা এ নিয়ে কাজ করছেন। মঙ্গলবার (১৮ জুন) শেষ ধাপের নির্বাচন শেষ হওয়ার পর তাদের শাস্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে।

বিভিন্ন উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পছন্দের প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় কয়েকজন মন্ত্রী ও এমপি নিজেদের পছন্দের লোকজনকে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন বলে খোদ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আলোচনা হয়। কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই অভিযোগ করেন, প্রত্যক্ষ মদত দিয়ে নেতাকর্মীদের বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দিতেও বাধ্য করেছেন মন্ত্রী, এমপি এবং স্থানীয় নেতারা। তাদের কারণে নৌকার প্রার্থীর ভরাডুবি ঘটেছে। দলীয় স্বার্থবিরোধী এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত এসব মন্ত্রী ও এমপির কারণে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযাগ করেন নেতারা।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ৫ এপ্রিল দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যারা উপজেলা নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থীর বিরোধিতা করেছেন, বিদ্রোহীদের পক্ষ নিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব এমপি, মন্ত্রী নৌকার বিরোধিতা করেছেন বা আগামীতে করবেন, তাদের আর নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হবে না। এখন পর্যন্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলী এবং মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক এ বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিরোধিতাকারীদের তালিকা করার কাজ চলছে। সাংগঠনিক সম্পাদকদের এ নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। সব ধাপের উপজেলা নির্বাচন শেষ হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ঘোষণা আসবে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা সংক্রান্ত তৃণমূল থেকে কয়েক হাজার অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগে অনেক মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালী নেতার নাম রয়েছে। এগুলোর বিভাগ অনুযায়ী সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এসব তালিকা ধরে তদন্ত চলছে।

পাঁচটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয় এবারের উপজেলা নির্বাচন। মার্চে শুরু হয়ে ১৮ জুন সর্বশেষ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এসব নির্বাচনে অনেক জায়গায় দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বা দলের স্থানীয় নেতারা। প্রতিটি ধাপের নির্বাচনের আগে ও পরে দলীয় প্রার্থীরা তাদের বিরোধিতাকারীদের বিষয়ে কেন্দ্রে অভিযোগ দেন। কোথাও কোথাও মন্ত্রীরাও দল মনোনীত প্রার্থীর বিরোধিতায় নামেন।

সর্বশেষ ১৮ জুন অনুষ্ঠেয় মাদারীপুরের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও এমন ঘটনা ঘটেছে। এখানে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কমল কৃষ্ণ দে। কিন্তু তাকে চ্যালেঞ্জ করে প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় এমপি ও সাবেক নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের ভাই অ্যাডভোকেট ওবায়দুর রহমান খান। শাজাহান খান তার ভাইয়ের পক্ষ নিয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন। একইভাবে গাজীপুরের একটি উপজেলায় দল মনোনীত প্রার্থীর সরাসরি বিরোধিতা করেন একজন মন্ত্রী। এমনকি তিনি বিদ্রোহী প্রার্থীর মিছিলেও যোগ দেন। একই অভিযোগ আছে রংপুরের এক এমপির বিরুদ্ধে। দল মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে তিনি সরাসরি অবস্থান নেন। এমনকি নিজের অনুসারীকে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে দেন। যখন বুঝতে পারেন তার প্রার্থী হেরে যাচ্ছে, তখন নির্বাচন বন্ধের চেষ্টাও করেন।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও দু’জন সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অতীতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতাকারীদের তালিকা ইতোমধ্যে করা হয়েছে। ১৮ জুন সর্বশেষ ধাপের নির্বাচন হয়ে গেলে তালিকা চূড়ান্ত হবে। দলের কার্যনির্বাহী সংসদের পরবর্তী বৈঠকে সেগুলো জমা দেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর