thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

স্ববিরোধী চার সমস্যায় ব্যাংক ও আর্থিক খাত

২০১৯ জুলাই ০৬ ২২:৪৮:২১
স্ববিরোধী চার সমস্যায় ব্যাংক ও আর্থিক খাত

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ব্যাংক ও আর্থিক খাতে স্ববিরোধী চারটি পরিসংখ্যান দেখা যাচ্ছে উল্লেখ করে বিশ্লেষকরা বলেছেন, একদিকে অনেক বেশি খেলা‌পি ঋণ, তারল্য সংকট, ঋ‌ণের উচ্চ সুদহার। আর অন্যদিকে অধিক প‌রিচালন মুনাফা। এ চার সমস্যায় ঘুরপাক খা‌চ্ছে ব্যাংক ও আর্থিক খাত। এ কারণে খাত দুটি দুরবস্থার ম‌ধ্যে প‌ড়েছে।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ‘ব্যাংক ও আথিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য সমৃদ্ধ গবেষণা গ্রন্থ ব্যাংকিং অ্যালমানাক ২০১৭’ এর মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠা‌নে এসব কথা ব‌লেন দে‌শের অর্থ‌নৈ‌তিক বি‌শ্লেষক, ব্যাংকার ও গ‌বেষকরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অ‌তি‌থি ছি‌লেন সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম। আ‌রো উপস্থিত ছি‌লেন সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, বাংলা‌দেশ ব্যাং‌কের প‌রিচালক জামাল উ‌দ্দিন, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এর চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, সা‌বেক ডেপু‌টি গভর্নর নজরুল হুদা, এবিবির সা‌বেক চেয়ারম্যান নুরুল আ‌মিন, সাপ্তা‌হিক শিক্ষা বি‌চিত্রার সম্পাদক আবদার রহমান প্রমুখ।

ব্যাংক ও আর্থিক খা‌তের চার সমস্যা উ‌ল্লেখ ক‌রে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ব‌লেন, ব্যাং‌কিং খা‌তে স্ববি‌রোধী প‌রিসংখ্যান দেখা যা‌চ্ছে। এক দি‌কে খেলা‌পি ঋণ বে‌ড়ে যা‌চ্ছে, তারল্য সংকট চল‌ছে, ঋ‌ণের সুদহারও বেশি। কিন্ত অন্য‌দিকে ব্যাং‌কের প‌রিচালন মুনাফা বাড়‌ছে। এটা কো‌নো সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ব্যাং‌কিং খা‌তে ‌বি‌ভিন্ন ধরনের বৈষম্য রয়েছে এমন এক‌টি উদাহরণ দিয়ে তি‌নি ব‌লেন, ব্যাংক বে‌শিরভাগ আমান‌ত সংগ্র‌হ ক‌রে সাধারণ মানু‌ষের কাছ থে‌কে। কিন্তু ঋণ বণ্টনের সময় সু‌বিধা পা‌য় এক‌টি বি‌শেষ গো‌ষ্ঠি। এ‌টি বড় ধর‌নের বৈষম্য। এর নিরসন হওয়া দরকার।
জিল্লুর রহমান বলেন, এ খাতে সুশাসনের অভাব রয়েছে। এটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, অনেক সময় ফাঁকি দেওয়ার ফাঁদ রেখেই ঋণপত্র তৈরি করা হয়। যেটা দেখে ব্যাংকগুলো মনেকরে এই খাতে বিনিয়োগ করলে প্রচুর লাভ হবে। কিন্তু সেই ফাঁদে পা দেওয়ার সাথে সাথে ঋণটি পরিণত হয় খেলাপিতে। এসব ফাঁদ থেকে বেঁচে থাকতে অভ্যন্তরিণ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যাচায় বাছাই করে ঋণ বিরণ করতে হবে।

দে‌শের ব্যাংকিং খাত সমস্যার ম‌ধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকৃত ত‌থ্যের অভা‌বে অপা‌ত্রে ঋণ চলে যা‌চ্ছে। যা‌রা ঋণ পাওয়ার ‌যোগ্য নন তারাই ঋণ পা‌চ্ছে। এতে ক‌রে বাড়‌ছে ঋণ খেলা‌পি। যাদের আমানত নিয়ে ব্যাংক ব্যবসা করে তারা সহজে ঋণ পায়না। কিন্তু অন্যান্য মাধ্যমে যাদের মধ্যে ঋণ বিতরণ করা হয় সেগুলোই খেলাপিতে পরিণত হয়। এগুলোই এখন ব্যাংক খা‌তের মূল সমস্যা সমস্যা হয়ে দাঁঢ়িয়েছে।

তিনি বলেন, ঋণ খেলা‌পির বিবরণীতে যেসব তথ্য প্রকাশ করা হয় তাতে পুন:তফ‌সিল ও রাইট অফ (অবলোপন) করা ঋণের তথ্য দেয়া হ‌য় না। যার ফলে প্রকৃত ঋণ খেলা‌পির তথ্য প্রকাশ হ‌চ্ছে না। এগুলো যোগ কর‌লে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বেশি হবে। কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশে সবগুলোসহ এক সাথে প্রকাশ করা হয়। তাই খেলা‌পি ঋণ কমা‌তে প্র‌য়োজনীয় উ‌দ্যোগ নি‌তে হ‌বে। এক্ষেত্রে গবেষণা ধর্মী এই ‘অ্যালমেনাক’ গ্রন্থটি সহ‌যো‌গিতা কর‌বে।

বাংলা‌দেশ ব্যাং‌কের প‌রিচালক জামাল উ‌দ্দিন ব‌লেন, আমা‌দের ব্যাং‌কিং খা‌তের ৭০ শতাংশ ঋণ দীর্ঘ মেয়া‌দি। কিন্ত বে‌শিরভাগ আমানত স্বল্প মেয়া‌দি। এ চক্কর থে‌কে বের হ‌তে না পার‌লে এ খাত‌কে স্থি‌তিশীল করা ক‌ঠিন হবে। কারণ আমা‌দের ‌বিকল্প শ‌ক্তিশালী কো‌নো বন্ড মা‌র্কেট নেই।

অনুষ্ঠা‌নে বক্তারা জানা‌ন, দে‌শের সব ব্যাংক আ‌র্থিক প্র‌তিষ্ঠা‌নের তথ্য এক স‌ঙ্গে পাওয়া যা‌বে অ্যালমেনাক বইটিতে। বৈ‌দে‌শিক বা‌ণি‌জ্যি, দীর্ঘ মেয়াদী বি‌নি‌য়ো‌গ ও ব্যাং‌কের অবস্থা জান‌তে এ এটি সহায়তা কর‌বে। ত‌বে এটি গ‌বেষণা কা‌জে আ‌রো কার্যকর কর‌তে হালনাগাদ তথ্য দি‌য়ে প্রকা‌শের দা‌বি জানা‌নো হয় অনুষ্ঠানে।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ জুলাই ০৬,২০১৯)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর

অর্থ ও বাণিজ্য - এর সব খবর