thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

এনআইডি কার্ড সংশোধনে বিড়ম্বনা

২০১৯ জুলাই ২৪ ১২:৩০:২৭
এনআইডি কার্ড সংশোধনে বিড়ম্বনা

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এই এনআইডি কার্ড অনেক কাজেই অপরিহার্। কিন্তু অনেক কার্ডে তথ্য ভুল থাকায় তা কার্ডধারীদের বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০০৭-০৮ সাল থেকে বাংলাদেশে বায়োমেট্রিক আইডেনটিফিকেশন বিদ্যমান। যাদের বয়স ১৮ বা তার চেয়ে বেশি তারা সকলে কেন্দ্রীয় বায়োমেট্রিক তথ্যভাণ্ডারের সাথে যুক্ত, যা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ব্যবহার করে নির্বাচনে ও অন্যান্য ক্ষেত্রে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে স্মার্ট জাতীয় পরিচয় পত্র (স্মর্ট কার্ড) দেয়া শুরু করে নির্বাচন কমিশনের এনআইডি শাখা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আইডি কার্ডে তথ্য ভুল থাকায় তা সংশোধনের জন্য রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন অফিস এবং জেলা ও থানা নির্বাচন অফিসগুলোতে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ যে, এই ভুলের জন্য ইসির কর্মীরাই দায়ী। তাদের ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের। কার্ডের তথ্য সংশোধনের জন্য গুনতে হচ্ছে টাকা। সাথে ভোগান্তি তো আছেই। কার্ সংশোধনে মাসের পর মাস ও অনেক ক্ষেত্রে বছরও লেগে যায়।

অনেকে অভিযোগ করেছেন, যখন জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার কাজ শুরু হয় তখন ইসির অদক্ষ কর্মীরা তথ্য সংরক্ষরণ যে ভুল করেছেন তারই কারণে আজকে নাগরিকদের এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

মেয়ের আইডি কার্ডে নামের বানান সংশোধন করার জন্য বিক্রমপুর থেকে আলমগীর ফকির এসেছেন আগারগাঁও নির্বাচনী অফিসে। তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ২ মাস ধরে বিক্রমপুর থানা নির্বাচন অফিসে যাচ্ছি আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য। কিন্তু সেখানে দিনের পর দিন ঘুরিয়েছে। তাই সরাসরি আগারগাঁওয়ে চলে এসেছি দেখি এখান থেকে সংশোধন করা যায় কিনা।

আলমগীর ফকির অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে আমাদের ভুলের কারণে তো আইডি কার্ডে নাম ভুল আসেনি। ইসির লোকদের ভুলেই এমন হয়েছে। তাহলে কেন আমরা বা আমি এর জন্য ভোগান্তিতে পরবো?’

অপর একজন মোহাম্মদ আহমাদ আনফাল বলেন, ‘আমার আইডি কার্ডে সব কিছুই ঠিক আছে। শুধু ভোটার এলাকা ভুল এসেছে। আমার ভোটার এলাকা হচ্ছে মিরপুর ১০ কিন্ত আইডি কার্ড হাতে পাওয়ার পরে দেখি ভোটার এলাকা দেওয়া আছে মিরপুর ১২ নম্বর। তাদের ভুলের কারণে আজ আমাকে সারাদিন এই গরমের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি যখন আইডি কার্ডের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেই বা ফরম পূরণ করি তখন কিন্তু আমি সব তথ্য সঠিকভাবেই দিয়েছি। কিন্তু তাদের ভুলের কারণে এখন আমাকে মাইগ্রেশনের জন্য টাকা দিতে হচ্ছে।’

এ বিষয়ে ইসির যুগ্মসচিব ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) মো. আবদুল বাতেন বলেন, ‘আমরা সকলেই জানি ২০০৭ বা ২০০৮ সালের দিকে যখন প্রথম ছবিযুক্ত জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয়েছে তখন দেশের প্রায় ৯ কোটির মতো নাগরিককে এই কার্ড দেওয়া হয়। তখন ভুলের সংখ্যাও অনেক বেশি হয়েছে সেটা স্বীকার করছি।’

এই ভুলের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে ভুলের কারণ হচ্ছে যাদের দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিলো তাদের এক কথায় ধরে এনে কাজ করানো হয়েছিলো। যার কারণে তাদের পর্াপ্ত প্রশিক্ষণ ছিলো না। তাই ব্যাপক ভুল হয়েছে, যার ঘানি এখনো টানতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কমিশন থেকে বার বার নাগরিকদের ভুল সংশোধন করার জন্য সুযোগ দিয়েছি। তখন যারা ভুল সংশোধন করেননি তারা এখন করছেন।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের মাঠ পর্ায়ের কর্মকর্তা ও কর্মী যারা আছেন তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। যারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংশোধন করছেন তারা সবাই প্রশিক্ষিত। আগের মতো তাদের আর ভুল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই বলে আমি মনে করি। তারপরও কিছু ভুল হতেই পারে সেটা হয়তো ৫ শতাংশের মতো হবে। তবে আমরা চেষ্টা করছি এই ভুলের সংখ্যা শুন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সেই জন্য আমরা এখন ছবি তোলার সময় প্রাথমিকভাবে এনআইডি কার্ডের একটা প্রিন্ট কপি দেই। সেটা দেখে যদি ওই ভোটার বলে তার আইডি কার্ডের সকল তথ্য সঠিক আছে তবেই আমরা সেটা চূড়ান্তভাবে প্রিন্ট করতে দেই।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জুলাই ২,২০১৯)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর