thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল 24, ১০ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৪ শাওয়াল 1445

জনশক্তি রফতানির সম্ভাবনা জাপানের শ্রমবাজারে

২০১৯ আগস্ট ২৩ ১১:৩১:০৩
জনশক্তি রফতানির সম্ভাবনা জাপানের শ্রমবাজারে

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : জনশক্তি রফতানির নতুন বাজারে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর জাপানের শ্রমবাজারে বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির দুয়ার খুলছে।

আগামী ২৭ আগস্ট জাপানে দুই দেশের সরকারের মধ্যে বিশেষ দক্ষতার জনশক্তি রফতানি নিয়ে চুক্তি হতে যাচ্ছে। এ জন্য বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রৌনক জাহানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ২৫ আগস্ট জাপান যাচ্ছে।

এ বিষয়ে প্রতিনিধি দলের সদস্য ও মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জাহাঙ্গীর আলম সমকালকে বলেন, অনেক দিন চেষ্টার পর জাপানে জনশক্তি রফতানির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গত মে মাসের শেষের দিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফর করেন। ওই সফরে এ বিষয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়। সে সময় জাপান সরকার বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক মত দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি সই হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে এই সমঝোতার খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। দুই দেশই খসড়া অনুমোদন করেছে।

বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজের উদ্দেশ্যে কর্মীরা গেলেও জাপানে সে সুযোগ ছিল না। দেশটির বিশেষায়িত সংস্থা 'ইন্টারন্যাশনাল ম্যানপাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (আইএম) জাপান'-এর সঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এক সমঝোতার মাধ্যমে গত বছর থেকে সীমিত পরিসরে কিছু কর্মী যাওয়া শুরু করেছে। ২০১৮ সালে সরকারি ব্যবস্থায় বাংলাদেশ থেকে ১৬৩ জন জাপানে কাজের উদ্দেশ্যে গেছেন। এ বছরের গত আট মাসে গেছেন প্রায় ১০০ জন। কিন্তু ২০১৫ সালে জাপান পাঁচ বছরে শিল্পকারখানা, নির্মাণকাজ, সেবাদানকারীসহ ১৪টি খাতে সাড়ে তিন লাখ দক্ষ জনশক্তি নেওয়ার ঘোষণা দেয়। দক্ষতার অভাব ও জাপান সরকারের পক্ষ থেকে সুযোগ না দেওয়ার কারণে বিশাল সম্ভাবনাময় এ বাজার এতদিন বাংলাদেশ ধরতে পারেনি। যদিও চীন, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড সরকারের সঙ্গে জনবল নেওয়ার জন্য চুক্তি করেছে জাপান। এখন দুই দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তি হলে বিশাল এ বাজারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ।

জানা গেছে, জাপানের সঙ্গে যে চুক্তি হতে যাচ্ছে, তাতে দেশটিতে ৯টি ট্রেডে লোক পাঠাতে পারবে বাংলাদেশ। এর মধ্যে নার্স, পরিচর্যা সেবাদানকারী, নির্মাণ ও কৃষি শ্রমিক অন্যতম। জাপানে লোক পাঠানোর জন্য ইতিমধ্যে দেশের ১১টি রিক্রুটিং এজেন্টকে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রণালয়। আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন। এসব এজেন্ট প্রতিষ্ঠান জাপান যেতে ইচ্ছুকদের দক্ষতা সৃষ্টিরও কাজ করবে। বিশেষ করে ভাষা শেখানোর কাজ করবে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত ২৭টি কেন্দ্রে ৪০ জন করে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। চার মাস মেয়াদি জাপানি ভাষা শেখার প্রশিক্ষণের পর তারা পরীক্ষায় বসেন। উত্তীর্ণ হলে আইএম জাপানের ব্যবস্থাপনায় আরও চার মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর শিক্ষানবিশ হিসেবে তাদের জাপানে নিয়ে যাওয়া হয়। চুক্তি হওয়ার পরেও এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

বিএমইটির কর্মকর্তারা বলেন, জাপান বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির বড় বাজার হতে পারে। এর অন্যতম কারণ জাপানে পরিচর্যা সেবা ও নার্সিংয়ের জন্য লোকের চাহিদা অনেক। দেশটিতে বয়স্ক নাগরিকের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এ খাতে চাহিদা বেশি। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের লোকের দক্ষতা ভালো। কৃষি ও নির্মাণ খাতেও বাংলাদেশ থেকে যেসব লোক বিদেশে গেছেন, তারা সুনাম করেছেন। ফলে জাপানের বাজারে ঢোকার সুযোগ পেলে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে যেতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/আগস্ট ২৩,২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জনশক্তি-এয়ারলাইন্স এর সর্বশেষ খবর

জনশক্তি-এয়ারলাইন্স - এর সব খবর