thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

আইয়ূব বাচ্চু: রূপালি গিটার ফেলে চলে যাওয়ার একবছর

২০১৯ অক্টোবর ১৮ ১০:৩১:১৫
আইয়ূব বাচ্চু: রূপালি গিটার ফেলে চলে যাওয়ার একবছর

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রূপালি গিটার ফেলে তিনি হুট করে চলে গিয়েছিলেন আজকের এই দিনে। দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে একটা বছর। অথচ এখনো মনে হয় না তিনি চলে গেছেন। কিন্তু শূন্যতা তো রয়েছে। যখন মনে হয় বহুদিন তিনি এলআরবিকে নিয়ে মঞ্চ কাঁপাননি, বহুদিন তার গিটারে সেই মনমাতানো ছন্দ ওঠেনি। সবাইকেই চলে যেতে হয় পরপারে। কিন্তু তার কীর্তি আর স্মৃতি ভক্তরা ধরে রাখবে আজীবন। ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর সকালে সবাইকে কাঁদিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন তিনি।

১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নন্দিত ব্যান্ড তারকা ও গিটার লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চুর। ছোটবেলা থেকেই গিটারের প্রেমে পড়েন তিনি। কলেজে জীবনে বন্ধুদের নিয়ে গোল্ডেন বয়েজ নামে একটা ব্যান্ডদল গড়ে তোলেন আইয়ুব বাচ্চু, পরে এর নাম পাল্টে রাখা হয় আগলি বয়েজ। বিয়েবাড়ি, জন্মদিন আর ছোটখাটো নানা অনুষ্ঠানে তাদের এই ব্যান্ডদল গান করতো। আইয়ুব বাচ্চুর বন্ধুরা যে যার মতো একেক দিকে ছড়িয়ে পড়লেও আইয়ুব বাচ্চু ব্যান্ডদল ফিলিংস’র সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান। এরপর ১৯৮০ সালে তিনি যোগ দেন সোলস ব্যান্ডে। এই ব্যান্ডের লিডগিটার বাজানোর দায়িত্বে ছিলেন টানা ১০ বছর। ১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল গড়ে তোলেন নতুন ব্যান্ড এলআরবি।

মা-বাবার আদরের ছেলে ছিলেন। কিন্তু সংগীতচর্চার জন্য খুব একটা অনুকূল পরিবেশ তিনি পেয়েছিলেন, তা কিন্তু নয়। সেই ছোটবেলা থেকেই সংসারে থেকেও বোহেমিয়ান আইয়ুব বাচ্চু। বাউন্ডুলে স্বভাবের জন্য সংসারের কিছুই যেন স্পর্শ করতে পারছিল না তাঁকে। বাবার ব্যবসায় মন বসে না, লেখাপড়ায় মন বসে না। অনিশ্চিত এক ভবিষ্যৎ ছিল তাঁর।

মাত্র ৬০০ টাকা নিয়ে ১৯৮৩ সালে ঢাকায় এসেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। উঠেছিলেন এলিফ্যান্ট রোডের এক হোটেলে। এরপর বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের অপ্রতিদ্বন্দ্বী তারকা হয়ে উঠলেন প্রতিভা আর কঠোর পরিশ্রমে।

সঙ্গীতের আঙিনায় আইয়ূব বাচ্চু একাধারে গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক এবং গায়ক হিসেবে জনপ্রিয়। মূলত রক ঘরানার কণ্ঠের অধিকারী হলেও আধুনিক গান, ক্লাসিকাল সংগীত এবং লোকগীতি দিয়েও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন তিনি। আইয়ূব বাচ্চুর কণ্ঠ দেওয়া প্রথম গান ‘হারানো বিকেলের গল্প’।

আইয়ূব বাচ্চুর প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম ‘রক্তগোলাপ’। আইয়ূব বাচ্চুর সফলতার শুরু দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ময়না’র মাধ্যমে। তিনি বেশ কিছু বাংলা ছবিতে প্লে-ব্যাকও করেছেন।

এছাড়া অসংখ্য অ্যালবামেও কণ্ঠ দিয়েছেন আইয়ূব বাচ্চু। এর মধ্যে ময়না, কষ্ট, প্রেম তুমি কষ্ট, দুটি মন, সময়, একা, পথের গান, ভাটির টানে মাটির গানে, জীবন, সাউন্ড অব, সাইলেন্স, রিমঝিম বৃষ্টি অ্যালবামগুলো উল্লেখযোগ্য।

আইয়ূব বাচ্চুর গাওয়া জনপ্রিয় কিছু গান সেই তুমি কেন অচেনা হলে, রূপালি গিটার, রাত জাগা পাখি হয়ে, কষ্ট পেতে ভালবাসি, মাধবী, ফেরারি মন, এখন অনেক রাত, ঘুমন্ত শহরে, বার মাস তোমায় ভালোবাসি, হাসতে দেখ গাইতে দেখ, এক আকাশের তারা, উড়াল দেব আকাশে।

তিনি হুট করেই আকাশে উড়াল দিয়েছিলেন অজস্র ভক্তকে কাঁদিয়ে। তার গানগুলো প্রতিটি কথা, সুর আর তার কণ্ঠ এখনো কানে লেগে আছে, মনে দাগ কেটে আছে। হাসি শেষে আজ সত্যিই তিনি একেবারে নীরব।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/অক্টোবর ১৮,২০১৯)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জলসা ঘর এর সর্বশেষ খবর

জলসা ঘর - এর সব খবর