thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

আজ লোকসভায় উঠছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল

২০১৯ ডিসেম্বর ০৯ ১০:৫২:৪৮
আজ লোকসভায় উঠছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি সোমবার লোকসভায় উত্থাপন করতে চলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পার্লামেন্ট একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এই বিল পাশ করতে মোদি সরকারকে তেমন বেগ পেতে হবে না বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা। কিন্তু এই বিলকে ঘিরে শাসক ও বিরোধী মহলে তুমুল বাক বিতণ্ডার প্রস্তুতি চলছে। কেননা শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে কংগ্রেসসহ ভারতের বিরোধী দলগুলো।

এর আগে গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতের মন্ত্রিসভায় এই বিতর্কিত বিলটি পাশ হয়। ওই বিলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন, পার্সি, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সে দেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু মুসলিম শরণার্থীদের বিষয়ে বিলে কিছু বলা হয়নি। এর অর্থ হচ্ছে, পার্শ্ববর্তী ওই তিন দেশ থেকে আসা মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনকে ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া হবে না।

সোমবার এই বিল উত্থাপনের সময় লোকসভায় উপস্থিত থাকছেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তারা দু’জনই নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে ঝাড়খণ্ড রাজ্যে অবস্থান করছেন।

তবে লোকসভায় উপস্থিত থাকছেন রাহুলের মা ও কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। দলের সংসদ সদস্যদের নিয়ে তিনি এই বিলের বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ নিয়ে রোববার তিনি দিল্লির দশ জনপথে কংগ্রেস কার্যালয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পরে লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এই বিলের পুরোপুরি বিরোধিতা করব। আমাদের সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্য, সংস্কৃতি লঙ্ঘিত হবে এই বিলের মাধ্যমে।’

একই সঙ্গে তিনি উত্তর-পূর্ব গণতান্ত্রিক জোটের দলগুলিকে কংগ্রেসের সাংসদ গৌরব গগৈ আবেদন করেছেন, বিজেপির সঙ্গে না গিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে।

এ বিলের সমালোচনা করে কংগ্রেসের সাংসদ শশী তারুর বলেছেন, ‘এই বিল পাশ হওয়ার অর্থ হচ্ছে গান্ধীজির আদর্শকে মুছে দিয়ে জিন্নার নীতিকে আঁকড়ে ধরা। এভাবে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দিলে ভারত পাকিস্তানের হিন্দু সংস্করণে পরিণত হবে।’

একই অবস্থান নিয়েছে ভারতীয় কম্যুনিস্ট পার্টিও (সিপিএম)। তারা বিলে দু’টি সংশোধনী আনছে। সেখানে ‘আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টান’ বাক্যটি মুছে দিয়ে শুধু ‘প্রতিবেশী দেশগুলি’ ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে দলের নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘এটি আরএসএস ও বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি। এতে কেন শুধু তিনটি প্রতিবেশী দেশের কথা উল্লেখ থাকবে? কোনও বৈষম্য না রেখে সব ধর্মের ব্যক্তিদের সমান সুযোগ দেওয়া উচিত।’

লোকসভায় এই বিলের বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূলও। এই দলের সাংসদরা লোকসভায় এই বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন বলেও জানা গেছে। তবে এ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সিদ্ধান্ত সংসদীয় নেতাদের শেষ মুহূর্তে জানাবেন। আপাতত স্থির হয়েছে, এই বিল নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগার। সুর চড়িয়ে

তবে বিরোধী দলগুলো যত বিরোধিতাই করুক না কেন, লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বিল পাশ নিয়ে বিজেপি মোটেও উদ্বিগ্ন নয়। বিজেপির দাবি বিলটি পাশ হওয়ার জন্য ১২০ সাংসদের সমর্থন প্রয়োজন। রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বিজেপির সঙ্গে সংঘাত চললেও বিলের পক্ষেই ভোট দেবে শিবসেনা। পাশাপাশি বিজেডি, টিআরএস, এআইএডিএমকের সমর্থন আদায় করার চেষ্টা করছে বিজেপি।

তবে রাজ্যসভাতে এটি পাস করাতে বেশ বেগ পেতে হবে মোদির দলকে। কারণ, সেখানে এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)’র। এ বিলের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আন্দোলন শুরু করেছে আসামের ছাত্রসমাজ। বিতর্কিত বিলের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার ১১ ঘণ্টার বনধ ডেকেছে আসামের নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়ন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ডিসেম্বর ০৯,২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর