thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল 24, ১১ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৫ শাওয়াল 1445

ছাত্রলীগকে আদর্শ নিয়ে চলতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

২০২০ জানুয়ারি ০৪ ২০:৪৬:০৬
ছাত্রলীগকে আদর্শ নিয়ে চলতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আদর্শ ও নীতি ছাড়া কোনোদিন নেতৃত্ব তৈরি হয় না। নীতি ছাড়া কেউ কোনোদিন মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। জাতিকে কিছু দিতে পারে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছিলেন। কারণ তার মধ্যে নীতি ও আদর্শ ছিল। শনিবার (৪ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা নীতি নিয়ে, আদর্শ নিয়ে ছাত্রলীগকে পরিচালিত হতে হবে। এর মাধ্যমেই আগামীতে দেশ পরিচালনায় যোগ্য নেতৃত্ব পাওয়া যাবে। আগামী দিনের নেতৃত্ব যেন প্রজন্মের পর প্রজন্মের ধারাবাহিকতায় আসে। এ নেতৃত্ব যেন ছাত্রলীগের মধ্য দিয়ে তৈরি হয় সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিতে হবে। পাকিস্তান আমলে আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রচলন চালুর চেষ্টা করা হলে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল ছাত্রলীগ।

তিনি বলেন, ভাষার বিরুদ্ধে, দেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যখন আঘাত আসে তখনই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা ভাবতে শুরু করেন। কারাগারে বসেও তিনি নানা দিকনির্দেশনা দিতেন, ছাত্রলীগকে সংগঠিত করেন। মানুষের মাঝে স্বাধীনতার চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। সেভাবেই সংগঠন গড়ে তোলা ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ শুরু করেন বঙ্গবন্ধু।

মাঠ পর্যায়ে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতো ছাত্রলীগ
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মসূচি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের কাজ বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগের ওপর অর্পণ করতেন। জয়বাংলা স্লোগানের মাধ্যমে মানুষকে জাগ্রত করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন ছাত্রলীগকে।

তিনি বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছিল ছাত্রলীগ। এ আন্দোলনে আমার মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব দিকনির্দেশনা দিতেন। কিন্তু তিনি নেপথ্যে থাকতেন। বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে যেসব নির্দেশনা দিতেন তা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে পৌঁছে দিতেন মা। জাতির পিতা তাই বলতেন, বাঙালির ইতিহাস ছাত্রলীগের ইতিহাস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রলীগ প্রতিবাদ গড়ে তুলেছিল। আমাকে বিদেশ থেকে দেশে আনার ব্যাপারে যে দাবি সেটাও তুলেছিল ছাত্রলীগ। জাতির যেকোনো ক্রান্তিকালে ছাত্রলীগই এগিয়ে এসেছে। একটা সংগঠন হিসেবে সারাদেশে ছাত্রলীগের ভূমিকা রয়েছে। এসব অবদানের কথা ভেবেই ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে চলতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গোয়েন্দা বাহিনীর রিপোর্ট প্রকাশ হবে
সরকারপ্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গোয়েন্দা বাহিনীর নানা গোপন নথি গত ২০ বছর ধরে পড়ছি। ১৪ খণ্ডে এসব রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে। এসব রিপোর্ট থেকে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। এতে বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও ইতিহাসের অনেক অজানা তথ্য খুঁজে পাওয়া যাবে।

বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে ১৫ টাকা ফাইন দিয়ে মুচলেকা নিয়ে আপসের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু তিনি আপস করেননি। নিজের জীবনে কী হবে না হবে তা ভাবতেন না। নিজে কী পাবেন তা নয় বাঙালির প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে তিনি ভাবতেন।’ স্বাধীনতার দাবিই ছিল তার জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য মন্তব্য করে বঙ্গবন্ধ কন্যা বলেন, জাতির পিতাকে আমার দাদা আইন বিষয়ে পড়তে বিলাতে পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি। বাঙালির অধিকার নিয়েই তিনি ভাবতেন।

ছাত্রলীগই মুরুব্বি সংগঠন
বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল উল্লেখ করে বাঙালি জাতির ইতিহাসে ছাত্রলীগের নানা অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ নানা সংগ্রামে ছাত্রলীগের অবদান স্মরণ করে তিনি বলেন, ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেদিক থেকে ভাবতে গেলে ছাত্রলীগই মুরুব্বি সংগঠন।

জিয়াউর রহমান রাজনীতিকে অসুস্থ ধারায় নিয়ে গেছেন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ছাত্রলীগের হাতে কলম তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু জিয়াউর রহমান বিপরীত ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করেছেন। একটা সুস্থ রাজনৈতিক ধারাকে অসুস্থ ধারায় নিয়ে গেছেন। মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। সাত খুন মামলার আসামিকে মুক্তি দিয়েছিলেন।

বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তিনি ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ভারমুক্ত ঘোষণা করে তাদের পূর্ণাঙ্গ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা দেন।

এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে পায়রা উড়িয়ে, পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন তিনি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জ্যেষ্ঠ নেতা ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালেদ মোহাম্মদ আলী।

দুই দিনব্যাপী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে রবিবার (৫ জানুয়ারি) পালিত হবে রক্তদান কর্মসূচি। এরপর শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষ হবে। ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ সংগঠনের সারাদেশের বর্তমান ও সাবেক নেতারা উপস্থিত রয়েছেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জানুয়ারি ০৪,২০২০)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর