thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ 24, ১৪ চৈত্র ১৪৩০,  ১৯ রমজান 1445

প্রধানমন্ত্রীর ইতালি সফরে গুরুত্ব পাবে বাণিজ্য ও অভিবাসন ইস্যু

২০২০ জানুয়ারি ১৭ ১২:০২:১২
প্রধানমন্ত্রীর ইতালি সফরে গুরুত্ব পাবে বাণিজ্য ও অভিবাসন ইস্যু

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী মাসের (ফেব্রুয়ারি) প্রথম সপ্তাহে দ্বিপক্ষীয় সফরে ইতালি যাবেন। এটি হবে এ বছর প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। ইতালির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কন্টের আমন্ত্রণে এই সফর করছেন শেখ হাসিনা। সফরে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অভিবাসন, রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চায় বাংলাদেশ। অন্যদিকে, সামরিক সহযোগিতা ও জ্বালানি খাতসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলাপ করতে আগ্রহী ইতালি।

এই সফরে ফরেন অফিস কনসালটেশন, উভয় দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমি সহযোগিতা এবং সংস্কৃতিক বিনিময় সহযোগিতাসহ অন্যান্য চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা আছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউরোপ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় অংশীদার এবং গত বছর লন্ডন সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইউরোপে অবস্থিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের সম্পর্কোন্নয়নে আরও কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।’ বিভিন্ন কারণে ইউরোপের মধ্যে ইতালির গুরুত্ব অন্যতম এবং এর মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক বার্তা দিতে সরকার আগ্রহী বলেও তিনি জানান।

রাজনৈতিক সম্পর্ক
এর আগে নেদারল্যান্ড, সুইডেনসহ অন্যান্য দেশে প্রধানমন্ত্রী সফর করলেও এবার সরকার গঠনের পর এটাই শেখ হাসিনার ইউরোপে প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউরোপকে আমরা কতটুকু গুরুত্ব দিচ্ছি, এই সফরের মাধ্যমে অন্যান্য দেশগুলোকে সে বিষয়ে একটি রাজনৈতিক বার্তা দিতে চাই।’

এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা চায় আরও বেশি সংখ্যক ইউরোপীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব বাংলাদেশ সফর করুক এবং আমাদের আরও রাজনৈতিক নেতৃত্বও ইউরোপীয় দেশ সফর করুক। তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন রাশিয়া, ফ্রান্স ও জার্মানিসহ অন্যান্য ইউরোপের দেশ সফর করেছেন।’

বাণিজ্য, বিনিয়োগ
বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২০০ কোটি ডলার অতিক্রম করেছে এবং এর মধ্যে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ১৬০ কোটি ডলারের বেশি।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘পরিসংখ্যান অনুযায়ী আমরা তৈরি পোশাক সবচেয়ে বেশি রফতানি করে থাকি। এরপর আছে চামড়াজাত পণ্য।’ তিনি জানান, ইতালি থেকে আমদানির পরিমাণ প্রায় ৬০ কোটি ডলার এবং এর মধ্যে বেশিরভাগ তৈরি পোশাক শিল্পের যন্ত্রপাতি।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা বাণিজ্য আরও বাড়াতে চাই এবং একইসঙ্গে বাংলাদেশে ইতালিয়ান বিনিয়োগকে উৎসাহিত করি।’

অভিবাসন
দুই দেশের জন্য অভিবাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, কেননা ইতালির হিসাব অনুযায়ী, প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার বাংলাদেশি দেশটিতে অবস্থান করছে। এ বিষয়ে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের পরে ইউরোপে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি আছে ইতালিতে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অবৈধপথে ইতালি গেছে।’

এই কর্মকর্তা বলেন, ইতালিতে দক্ষ কর্মীর স্থায়ী চাহিদা রয়েছে, যার একটি অংশ বাংলাদেশ মেটাতে পারে। আমরা চাই বৈধপথে ওই দেশে কর্মী পাঠাতে। তিনি বলেন, ‘দক্ষতা বৃদ্ধিতে তারা সহায়তা দিতে পারে। যাওয়ার পরে নির্দিষ্ট সময় পরে কর্মীরা দেশে ফেরতও আসবে। এর জন্য একটি মেকানিজম রয়েছে।’

আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘পরিশ্রমী হিসাবে বাংলাদেশিদের যথেষ্ট সুনাম আছে ইতালিতে এবং কর্মী হিসাবে তারা অনেক দক্ষ। এ জন্য আমরা চাই, বৈধপথে শ্রমিক পাঠাতে।’

উল্লেখ্য, আগে ইতালিতে বৈধপথে কৃষি শ্রমিক পাঠানোর একটি চুক্তি ছিল এবং এর অধীনে প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশি সেখানে গেলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফেরত এসেছে ১০০ এর কম শ্রমিক। এ কারণে ২০১২ সাল থেকে এটি বন্ধ করে দেয় রোম।

সামরিক সহযোগিতা
ইউরোপের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বাড়াতে চায় ইতালি। এ বিষয়ে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে এবং আমাদের জাতীয় স্বার্থের প্রতি খেয়াল রেখেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।’এ বিষয়ে কোনও চুক্তি হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জানুয়ারি ১৭,২০২০)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর