thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ 24, ১৫ চৈত্র ১৪৩০,  ১৯ রমজান 1445

ওয়ারীবাসীর ‘চাওয়ার’ কাছে অসহায় স্বেচ্ছাসেবীরা

২০২০ জুলাই ০৬ ১৫:০৪:২৭
ওয়ারীবাসীর ‘চাওয়ার’ কাছে অসহায় স্বেচ্ছাসেবীরা

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: লকডাউন শুরুর প্রথম দুই দিন ভাবলাম এখন লোকজন বেশি বের হচ্ছে। আস্তে আস্তে হয়তো ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু না। ওয়ারীবাসীর চাওয়ার শেষ নেই। করোনার এই মহামারি উপেক্ষা করে কেউ কেউ বাইরে ঘুরে বেড়ানোর জন‌্যও বের হতে চান। অসময়ে ফোন করে জরুরি প্রয়োজন নয়, এমন কিছু এনে দেওয়ারও দাবি করেন। তাদের চাওয়ার যেন শেষ নেই।

ওয়ারীতে দায়িত্বপালনরত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস‌্য মো. সাঈদ এসব কথা বলেন।

করোনার বিস্তার রোধে গত ৪ জুলাই থেকে ২১ দিনের লকডাউন শুরু হয়েছে রাজধানীর ওয়ারীতে। লকডাউনের শুরু থেকেই সেখানে দায়িত্ব পালন করছে সাঈদ।

সোমবার (৬ জুলাই) দুপুরে তিনি বলেন, ‘গত দুই দিনের চেয়ে আজ বেশি লোক বের হচ্ছেন। তাদের বের হতে না দিলে ফোন ধরিয়ে দিয়ে বলেন অমক (স্থানীয় নেতা) ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন, তমক ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। অনেকে ফোর্স করেই বের হয়ে যাচ্ছেন। একজন নারীকে দেখিয়ে বলেন, গত দুইদিন তার বান্ধবী এসে গেটে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বের হতে না দিলে তিনিসহ তার বান্ধবী বাজে মন্তব‌্য করেন। একপর্যায়ে জোর করেই বের হয়ে যান। আবার জোর করেই ঢোকেন। আমরা অনেকটা অসহায়। তাদের এসব কর্মকাণ্ড দেখে মন চাই গেট খুলে দেই। তারা তাদের ইচ্ছেমত বের হোক।’

আজ সকাল থেকে দেখা যায়, অনেকে বের হওয়ার জন‌্য হট কেক গলি ও ওয়ারী থানার পাশে র‌্যানকিন স্ট্রিট গেটে ভিড় করেছেন। গেটের সামনে সামাজিক দূরত্ব না মেনেই অনেকই দাঁড়িয়ে আছেন। স্বেচ্ছাসেবীরা বার বার অনুরোধ করলেও তারা শুনছেন না। অনেকেই স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে, পুলিশের কাছে, টহলরত সেনাবাহিনীর কাছে গিয়ে বের হওয়ার অনুরোধ করছেন। অনেকে আবার স্বেচ্ছাসেবীদের হুমকি দিচ্ছেন।’

রোববার সকাল থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ৮০ জন নাম লিখিয়ে বাইরে বের হয়েছেন। গেট দিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এক্ষেত্রে এলাকার লোকজন বিভিন্ন অলনাইন সেবা প্রতিষ্ঠানে বা আত্মীয়-স্বজনদের ফোন দিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস আনছেন।

তোফাজ্জল হোসেন নামে আরেক স্বেচ্ছাসেবী বলেন, ‘আমরা তো তাদের সাহায্যের জন্য এসেছি। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে এমন আচরণ করছেন মনে হচ্ছে আমরা তাদের আরও ক্ষতি করছি। অনেকে নাম এন্ট্রি না করেই জোর করে বের হয়ে যাচ্ছেন। তাদের বলা হচ্ছে, এরপর আপনারা কিন্তু আর ঢুকতে পারবেন না। কে শোনে কার কথা।’

সেখানে দায়িত্বরত ওয়ারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান জানান, ওয়ারীতে যে এতো ধরনের পেশার লোক বাস করেন জানা ছিল না। সকাল থেকে অনেকে নানা অজুহাত দেখিয়ে বের হয়ে গেছেন। অনেকে আবার কারো কারো কাছে ফোন দিয়ে কথা বলিয়ে বের হচ্ছেন। এলাকার লোকজন যদি সচেতন না হন তাহলে লকডাউন দিয়ে কোনো কাজ হবে না।

ওয়ারীর বাসিন্দা আফতাব উদ্দিন নামে একজন বলেন, ‘বংশালে আমার অফিস। অফিসে না গেলে আমার অনেক সমস্যা হবে। কর্মচারীদের বেতন আটকে যাবে। আমার তো বের হতেই হবে।’

লকডাউন মেনে চলা উচিত কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘এটা তো আমাদের ভালোর জন্যই। তারপরও কিছু কিছু সমস্যা তো থাকেই।’

প্রসঙ্গত, ওয়ারীর টিপু সুলতান রোড, যোগীনগর রোড ওজয়কালী মন্দির থেকে বলধা গার্ডেন (আউটার রোড) এবং লারমিনি স্ট্রিট, হেয়ার স্ট্রিট, ওয়্যার স্ট্রিট ও নবাব স্ট্রিট (ইনার রোড) লকডাউনের আওতায় রয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৬জুলাই, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর