thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ 24, ১৪ চৈত্র ১৪৩০,  ১৯ রমজান 1445

২২ ঘণ্টা কাজ করি, ২ ঘণ্টা ঘুমাই: বেরোবি উপাচার্য

২০২১ মার্চ ০৪ ১৬:৪১:০৬
২২ ঘণ্টা কাজ করি, ২ ঘণ্টা ঘুমাই: বেরোবি উপাচার্য

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দিনের পর দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার বিষয় নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বারবার অভিযোগ করলেও রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ তা পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। ক্যাম্পাসে না থাকলেও ঢাকায় লিয়াজোঁ অফিসে বসে সপ্তাহে সাতদিন দৈনিক ২০ থেকে ২২ ঘণ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

আলোচিত এই উপাচার্য বলেছেন, প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দৈনিক ২০ থেকে ২২ ঘণ্টা কাজ করি। মাত্র দুই ঘণ্টা ঘুমাই। আর দায়িত্বে অবহেলা করা আমার চরিত্রে নেই।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের জন্য শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে দোষারোপ করেন বেরোবি উপাচার্য।

বেরোবি উপাচার্য বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ- আমাকে পাওয়া যায় না, আমি নিখোঁজ হয়ে যাই। আমি ঢাকায় থাকি। অথচ আমি প্রতিদিন ২০/২২ ঘণ্টা কাজ করি। ঢাকায় থাকলে লিয়াঁজো অফিসে কাজ করি। রংপুরে থাকলে বাসায় বসে কাজ করি। দায়িত্বগ্রহণের পর স্বাভাবিকভাবেই সব চলছিল। কিন্তু মিথ্যা ও অসংলগ্ন যেসব তথ্য সংবাদমাধ্যমে দেয়া হচ্ছে, তা জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করছে।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এখনো আমরা পাইনি। এর আগেই গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, আমার পরিচিত সবাই জানেন, আমি একজন কাজপাগল মানুষ। দায়িত্বে অবহেলা আমার চরিত্রে নেই। বাংলাদেশের যে প্রান্তেই থাকি না কেন, আমি বেরোবির উপাচার্য। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, উপাচার্যের পদ আবাসিক নয়, রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব আবাসিক।

উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা শিক্ষামন্ত্রীর আশ্রয়, প্রশ্রয় ও আশকারায় হয়েছে। আগের উপাচার্যের সময় একটি বিশেষ এলাকা থেকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারাই অবরোধ আন্দোলন করে আসছেন। আমাকে ঘেরাও করতেই নাকি ক্যাম্পাসে পাওয়া যায় না। এসব ছড়াচ্ছেন।

স্থানীয় রাজনীতির শিকার

নিজের বিরুদ্ধে আনা নানা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে কলিমুল্লাহ বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আমার সঙ্গে আঞ্চলিক রাজনীতি করছেন। আমি তার রাজনীতির শিকার। আমি যে অঞ্চল থেকে এসেছি সে অঞ্চলের একটা রাজনীতি এখানে কাজ করেছে। চাদঁপুরের স্থানীয় রাজনীতি এখানে প্রছন্নভাবে কাজ করেছে। আমি মনে করি এ ধরনের প্রতিহিংসার রাজনীতি শিক্ষাঙ্গণে করা মোটেও ঠিক নয়।

বেরোবির উপাচার্য অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর আমরা সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা তার সঙ্গে দেখা করতে যাই। সকাল ১০টার প্রোগ্রামে তিনি এসেছিলেন বিকেল ৪টায়। উপাচার্যদের পুরো দিন তার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। সেটা খুবই অসৌজন্যমূলক একটি কাজ হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনোই এমনটি ঘটেনি।

তিনি আরো বলেন, যতবার আমরা রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে সিডিউল বা ক্রোড়পত্রের জন্য বাণী চেয়েছি, পাইনি। কিন্তু উপমন্ত্রীর কাছে যতবার বাণী চেয়েছি, পেয়েছি। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর বাণী নিয়ে কখনো কার্পণ্য করেনি। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর বাণী কখনও পাইনি। আমি খোলামেলা কথা বলার মানুষ। আজ কিছু অপ্রিয় সত্য কথা বলতে এখানে এসেছি এবং পরিণতি বিবেচনা করেই এখানে এসেছি।

ড. কলিমুল্লাহ বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই যা অপপ্রচার, অপবাদ যা হয়েছে সব শিক্ষামন্ত্রীর আনুকূল্যে হয়েছে। আজকে লুকিয়ে-ছাপিয়ে কথা বলবো না। সব খোলাসা করতে এসেছি। আমি দীর্ঘদিন ধরে মিডিয়া ও নির্বাচন নিয়ে কাজ করি। সেজন্য আমি পরিষ্কার করে কথা বলতে পছন্দ করি। আমি কোনোদিন সত্য কথা বলতে পিছপা হইনি, আজও হবো না। পুরো বিষয়টি আমি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছি। এ পর্যন্ত আমি যা কিছু করেছি, সব কিছুই প্রধানমন্ত্রীর শ্রুতি নির্দেশে করেছি।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৪ মার্চ, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

শিক্ষা এর সর্বশেষ খবর

শিক্ষা - এর সব খবর