thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ 24, ৫ চৈত্র ১৪৩০,  ৯ রমজান 1445

নেইমারদের বিদায়, ফাইনালে উঠে ম্যানসিটির ইতিহাস

২০২১ মে ০৫ ১০:৩৮:১৮
নেইমারদের বিদায়, ফাইনালে উঠে ম্যানসিটির ইতিহাস

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান হলো। প্রথমবার চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল খেলার টিকিট কাটলো ম্যানচেস্টার সিটি। ৫১ বছর পর কোনও ইউরোপিয়ান ফাইনালে তারা। ইতিহাস গড়ার পথে তারা বিদায় করেছে গত আসরের রানার্সআপ পিএসজিকে। তাতে আবারও শিরোপার খুব কাছ থেকে ফিরে যেতে হলো নেইমার-কিলিয়ান এমবাপ্পেদের।

পিএসজিকে ঘুরে দাঁড়াতেই দেয়নি পার্ক দে প্রিন্সেস থেকে গত সপ্তাহে ২-১ গোলে প্রথম লেগ জিতে ফিরে আসা ম্যানসিটি। মঙ্গলবার ইতিহাদ স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ তারা ১০ জনের পিএসজিকে হারিয়েছে ২-০ গোলে। জোড়া গোল করেছেন রিয়াদ মাহরেজ। তাতে দুই লেগের অগ্রগামিতায় ৪-১ গোলে জিতে ফাইনালে তারা।

গোটা মৌসুমে যেমন খেলেছে, তেমন পারফরম্যান্স শিষ্যদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করেছিলেন পেপ গার্দিওলা। কোচের প্রত্যাশা মতোই দারুণ খেলেছে ম্যানসিটি। প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগে ওঠার সুযোগ নষ্ট হতে দেয়নি তারা। চোট আক্রান্ত এমবাপ্পে পুরো ম্যাচ বেঞ্চে বসে থাকায় তার অভাব ভালোভাবে টের পায় ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা।

অবশ্য শুরুতেই বিপদে পড়েছিল ম্যানসিটি। ৭ মিনিটে নেইমারের ক্রস বক্সের মধ্যে ওলাক্সান্দার জিনচেঙ্কো বিপদমুক্ত করেছিলেন। পিএসজির খেলোয়াড়রা হ্যান্ডবলের দাবি করলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। কিন্তু স্বাগতিকরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলে রেফারি ভিএআর যাচাই করেন। রিপ্লেতে বল জিনচেঙ্কোর হাতে নয়, কাঁধ ছুঁতে দেখা গেছে। বাতিল হয় পেনাল্টির সিদ্ধান্ত।

কিছুক্ষণ পরই জালের দেখা পায় সিটিজেনরা। গোলকিপার এডারসন পিএসজির বক্সে বল তৈরি করে দেন। জিনচেঙ্কো বাঁ প্রান্ত থেকে বক্সের সামনে কেভিন ডি ব্রুইনার কাছে বল পাঠান। বেলজিয়ান তারকার শট বক্সের মাঝখান থেকে মারকুইনহোস বিপদমুক্ত করলেও বল দূরের পোস্টে দাঁড়ানো রিয়াদ মাহরেজের সামনে পড়ে। আড়াআড়ি শটে কেইলর নাভাসের পায়ের ফাঁক দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ৩০ বছর বয়সী আলজেরিয়ান উইঙ্গার।

১১ মিনিটের এই লক্ষ্যভেদে কোনও ইংলিশ ক্লাবের জার্সিতে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের দুই লেগেই গোল করলেন মাহরেজ। এর আগে ২০১৮ সালে এই সাফল্য দেখান লিভারপুলের সাদিও মানে।

নেইমার ১৫ মিনিটে ম্যানসিটির বক্সের একটু সামনে ফ্রি কিক আদায় করেন। তার শট প্রতিপক্ষের রক্ষণদেয়াল ছুঁয়ে মাঠের বাইরে যায়। কর্নার পায় পিএসজি। নেইমারের ভাসানো বল পেয়ে দূরের পোস্টে মারকুইনহোসকে দেন আনহেল দি মারিয়া। সবার চেয়ে উঁচুতে লাফিয়ে হেড করেন মারকুইনহোস, কিন্তু ক্রসবারে আঘাত করে বল।

১৯ মিনিটে এডারসনের কাছ থেকে বল পেয়ে বার্নার্ডো সিলভা বিপদমুক্ত করার মুহূর্তে তা কেড়ে নেন দি মারিয়া। আর্জেন্টাইন তারকার দূর পাল্লার শট অল্পের জন্য গোলবারের পাশ দিয়ে যায়। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে ম্যানসিটির বক্সের মধ্যে আধিপত্য দেখায় ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু ফিনিশিংয়ের অভাবে তারা পাচ্ছিল না গোলের দেখা। বিরতিতে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে কাউন্টার অ্যাটাকে যায় সিটিজেনরা। ফের্নান্দিনিয়োর পাস থেকে মাহরেজের নেওয়া কোনাকুনি শট এবার রুখে দেন পিএসজি গোলকিপার নাভাস।

এক গোলে পিছিয়ে থাকা পিএসজি চাপ মাথায় নিয়ে বিরতিতে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে নেইমারের একটি দুর্দান্ত শট ব্লক করে ফরাসিদের হতাশ করেন জিনচেঙ্কো। ৬২ মিনিটে দলে দুটি বদল আনে পিএসজি। মাউরো ইকার্দির জায়গায় মোয়াসে কিন ও অ্যান্ডার হেরেরাকে উঠিয়ে হুলিয়ান ড্রাক্সলারকে নামায় তারা। তাতে বদলায়নি তাদের ভাগ্য। বরং ৬৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ম্যানসিটি। ডি ব্রুইনার সঙ্গে ওয়ান-টু পাস থেকে বক্সের মধ্যে ঢুকে ডা দিকে বল বাড়ান ফিল ফডেন। বল গড়িয়ে মাহরেজের সামনে পড়ে। নিজের দ্বিতীয় গোল করতে ভুল করেননি একটুও।

দুই গোল খেয়ে মারদাঙ্গা হয়ে ওঠে পিএসজি। মেজাজ ধরে রাখতে পারেনি তারা। তাতে ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে হয়েছে ২০ মিনিটেরও বেশি সময়। ৬৯ মিনিটে থ্রো ইনের সময় বল কাড়াকাড়ি করতে গিয়ে ফের্নান্দিনিয়োকে লাথি মারেন দি মারিয়া, সরাসরি তাকে লাল কার্ড দেখান রেফারি।

৭৭ মিনিটে কিম্পেম্বেকে কাটিয়ে বল নিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে লক্ষ্যে শট নেন ফডেন। তার আড়াআড়ি শট নাভাসের নাগালের বাইরে দিয়ে গেলেও গোলবারে আঘাত করে। হতাশায় মাথায় হাত দেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার।

যদিও ম্যাচ ছিল পুরোপুরি ম্যানসিটির হাতের মুঠোয়। শেষ পাঁচ মিনিটে ফডেনের বদলি হয়ে মাঠে নামেন বিদায়ী স্ট্রাইকার সের্হিয়ো আগুয়েরো। আক্রমণে তেমন ভূমিকা রাখতে পারেননি আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। তবে দারুণ জয় তাকেসহ পুরো দলকে ভাসিয়েছে আনন্দে।

আগামী ২৯ মে ইস্তানবুলের কামাল আতাতুর্ক স্টেডিয়ামে প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল খেলবে ম্যানসিটি। তাতে করে ১০ বছর পর আবারও ফাইনালের ডাগআউটে দেখা যাবে গার্দিওলাকে। ২০১১ সালে বার্সার কোচ হিসেবে দ্বিতীয় ও সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি জিতেছিলেন তিনি। তৃতীয় শিরোপার অপেক্ষায় থাকা এই স্প্যানিশ কোচকে কোন দলের বিপক্ষে রণকৌশল সাজাতে হবে, তা চূড়ান্ত হবে বুধবার (৫ মে) চেলসি ও রিয়াল মাদ্রিদের লড়াই শেষে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৫ মে, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

খেলা এর সর্বশেষ খবর

খেলা - এর সব খবর