thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ 24, ১৫ চৈত্র ১৪৩০,  ১৯ রমজান 1445

২০২১ জুলাই ৩১ ১২:৪৭:৫৫

আব্দুল্লাহ শুভ,দ্য রিপোর্ট: বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ টানতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দুবাইতে একটি রোডশোর আয়োজন করে বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন।‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার:পটেনশিয়ালস অব বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেটস’শীর্ষক রোডশোটি বিদেশি ও অভিবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে সাড়া ফেলে । এরই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে রোডশোর আয়োজন করছে কমিশন।রোডশো চলাকালীন বেশ কিছু বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছে বাংলাদেশ।দেশের কমিশনের এমন পদক্ষেপ পুঁজিবাজার তথা অর্থনীতির উন্নয়নে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

গত বছর নতুন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের দায়িত্বগ্রহণের পরপরই মূলত এসইসির এই জয়যাত্রা শুরু হয়।দেশের পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরতে শুরু করে।এরই মধ্যে দেশের পুঁজিবাজার এশিয় অঞ্চলের সেরা বাজারের তকমা পেয়েছে।বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মুনাফা দেয়- এমন পরিসংখ্যানে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নড়েচড়ে বসেছে।

সঠিক সময়ে কমিশনের সঠিক সিদ্ধান্তই বাজারকে এমন চাঙা করেছে বলে মত বাজার সংশ্লিষ্টদের।তারা বলছেন,কমিশন শুধু নীতি কাঠামো প্রণয়ন বা বাজারের পরিবেশ নিয়ন্ত্রন করছে না বরং বাজারের উন্নয়নেও অবদান রাখছে।পুঁজিবাজারকে সুস্থ ও সুস্থ রাখার সকল ব্যবস্থাই গ্রহণ করছে কমিশন। তারা বলছেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ না আসলে বাজার তো আগাবেই না বরং বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। এজন্যই বাজারে নতুন বিনিয়োগ দরকার। কমিশন সেই কাজটাই করছে।বিদেশি বিনিয়োগ টানতে এমন রোডশোর চেয়ে ভাল কিছু হতে পারেনা ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশী বিনিয়োগকারীরা শুধু অর্থ দিয়েই নয়, বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা নিয়েও আসবে যা দক্ষ কর্মী তৈরি করবে যারা শেষ পর্যন্ত পুঁজিবাজারের উন্নতিতে অবদান রাখবে।

সাধারণত বিনিয়োগকারীরা নিয়ন্ত্রকদের ভয় পায়, কিন্তু যখন বিদেশী বিনিয়োগকারীরা দেখেন যে, উল্টো নিয়ন্ত্রকেরাই বিনিয়োগকারীদের কাছে এসে বলছে-‘আপনারা বিনিয়োগ করেন, আমরা আছি’ তখন বিনিয়োগকারীরা স্বস্তি পায়। এতে বিনিয়োগ বাড়ে, অর্থনীতি চাঙ্গা হয়।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান লাইট ক্যাসল পার্টনার সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম: দ্য ডিজিটাল গোল্ডমাইন’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে জানায় , বর্তমানে দেশে ১ হাজার ২০০টির বেশি স্টার্টআপ সক্রিয় রয়েছে। গত ১০ বছরের এসব স্টার্টআপ প্রায় ৩১ কোটি ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে যারমধ্যে ২০২০ সালেই এসেছে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি ডলার। রোডশোগুলো এমন স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে।সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন,

এরই মধ্যে,বাংলাদেশেরবাংলাদেশভিত্তিক শিক্ষা প্রযুক্তি স্টার্টআপ ‘শিখো’১৩ লাখ মার্কিন ডলার বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছে । রোডশোর মাধ্যমে বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতির চিত্র বিশ্বের কাছে তুলে ধরার মাধ্যমে অচিরেই আরও বিনিয়োগের ঘোষণা আসবে বলে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়েই বাজার বিশ্লেষক তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু বলেন,রোডশোর মাধ্যমে একদিকে যেমন বিদেশীরা বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবেন অন্যদিকে, অভিবাসী বাংলাদেশী বিনিয়োগকারীরাও দেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবেন । বিভিন্ন দেশে এমন প্রচারণামূলক রোডশো আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন -এতে বিনিয়োগ বাড়বে, দেশের পুঁজিবাজার শক্তিশালী হবে, তথা দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।

এ বিষয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান দ্য রিপোর্টকে জানান, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের গ্রোথ রেট এখন ২১ শতাংশের উপরে। এ জন্য তারা বাংলাদেশের বাজারের প্রতি আকর্ষিত হয়েছে এবং সূক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।এখন আমেরিকান বলেন,চাইনিজ বলেন –পৃথিবীর বহু দেশের বিনিয়োগকারীরা কমিশনে নিয়মিত আসা-যাওয়া করছেন। তারা সবাই এখন বাংলাদেশমুখী। যারা একটু দেখে শুনে বিনিয়োগ করছেন তারা সবাই এখন মুনাফা পাচ্ছেন। ক্ষুদ্রবিনিয়োগকারী কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী– সবাই মুনাফা পাচ্ছেন। এতে বিদেশিরা আগ্রহী হয়ে উঠছে। বড় বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ দেখাচ্ছে। রোডশোগুলো এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখছে।আগে বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছু নেতিবাচক সংবাদ যা ক্ষতি করেছিলো আমাদের– আমরা ইতোমধ্যে সে যায়গা থেকে বের হয়ে এসেছি। রোডশোগুলোতে আমরা সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সংশ্লিষ্টদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি যে বাংলাদেশ একটি উদিয়মান অর্থনীতির দেশ।এবং এখানে সম্ভাবনার প্রচুর সুযোগ রয়েছে।এই ইতিবাচক খবরগুলো আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পাচ্ছে।বিদেশি মিডিয়া বা পর্যবেক্ষকরাও সায় দিচ্ছেন যে, বাংলাদেশ ভাল করছে। তারা জেনে গেছে, এখন বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে গুড গভর্নেন্স চলে এসছে। বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগ করা যায়’।

দ্য রিপোর্ট/এএস/৩১জুলাই ২০২১

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর