thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

মহা আয়োজন শেষ, অপেক্ষা স্বীকৃতির

২০১৪ মার্চ ২৬ ১৮:০৫:২১
মহা আয়োজন শেষ, অপেক্ষা স্বীকৃতির

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ জাতীয় সংগীত গাওয়া আড়াই লাখ মানুষের সঙ্গে কণ্ঠ মেলালো দেশের কোটি বাঙালি। বুধবার সকাল ১১টা ২০ মিনিটে মূল আয়োজনস্থলে জাতীয় সংগীত গাওয়া শুরু হলে দেশের সকল প্রান্তের মানুষ দাঁড়িয়ে সুর মেলান প্রাণের এ সংগীতে।

বিশ্ব রেকর্ড গড়ার এই বিশাল আয়োজনের স্বীকৃতি দিতে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের মনোনীত প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলেন। প্রতি ৫০ জনের ব্লকে একজন প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণ করেন। তাদের পর্যালোচনায় সঠিক সুর, সঠিক সময় ও উচ্চস্বরে একসঙ্গে জাতীয় সংগীতের প্রথম ১০ লাইন গাইতে পারলেই বাংলাদেশ স্থান করে নেবে গিনেস বুকে।

মহা এই আয়োজন সফলভাবে শেষ হয়েছে। এখন শুধু লিখিত স্বীকৃতির অপেক্ষা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল পৌনে ১১টায় এই মহা আয়োজনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের আগে দু’বার ও পরে একবার মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণে শুরু হয় জাতীয় সংগীত।

সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনায় আব্দুল জব্বার, ফাতেমা তুজ জোহরা, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, মিতা হক, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, তপন মাহমুদ, তিমির নন্দী, বুলবুল মহলানবীশ, শাহীন সামাদ, সুজিত মোস্তফা, ফরিদা পারভীন, চন্দনা মজুমদার ও ফকির আলমগীরসহ দেশবরেণ্য শিল্পীরা অংশ নেন। এ পর্বের পরিচালনা করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী সুজেয় শ্যাম। এতে অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষার্থী, গার্মেন্টস শ্রমিক, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার বাহিনীর সদস্যসহ সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষ।

সাড়ে তিন মিনিটের এই আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ সকল বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিও।ভোর থেকেই মূল আয়োজনে অংশ নিতে লাখ লাখ মানুষ প্যারেড গ্রাউন্ডমুখী হলেও নির্ধারিত সময়ের আগে ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে বাইরে অবস্থান করেই জাতীয় সংগীত গাইতে থাকেন অনেকে।

বাহ্যিক দিক দিয়ে পোশাক-আশাকে ভিন্নতা থাকলেও ভেতরে সবার একটাই প্রত্যয় জাতীয় সংগীতে বিশ্ব রেকর্ড। কোনো মোহ থেকে নয়, নিজ অর্থ ব্যয়ে প্রাণের তাগিদে ভিড় জমান আবাল, বৃদ্ধ, বণিতা। সামরিক বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতায় অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের তাগিদ থাকলেও দেশজ সংস্কৃতির আপন পরিচয় বিশ্বমাত্রিকতায় তুলে দেবার মানসিকতা নিয়ে নিজ নিজ দায়িত্বে মূল ভেন্যুতে প্রবেশ করেন তারা। পেছনের ভেদাভেদ ভুলে সব কালো দূর করার চিন্তায় একটি সুন্দর সময়ে ঐক্যবদ্ধ হবার চেতনা যে বাঙালির প্রবল তা আবারও প্রমাণ হল। মাত্রাতিরিক্ত লোক সমাগমে নিয়মশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলেও অনুষ্ঠান সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বিঘ্ন ঘটেনি এতটুকু।

ভোর থেকে শুরু হওয়া এ আয়োজনে আগত মানুষের একঘেয়েমি কাটাবার জন্য সকাল ৮টা থেকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীরা গান পরিবেশন করতে থাকেন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্যারেড গ্রাউন্ডের চারপাশে বিশেষ করে বিজয় সরণি, রোকেয়া সরণি, ফার্মগেট, খামারবাড়ি, জাহাঙ্গীর গেট পার হয়ে মহাখালী রেল ক্রসিং, আগারগাঁও হয়ে শিশুমেলা, মানিক মিয়া এভিনিউ হয়ে আসাদ গেট পর্যন্ত মানুষ দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাইতে থাকেন। মূল অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার ২০ মিনিট আগে থেকেই রাজধানীতে চলাচলকারী গণপরিবহন ও অন্যান্য পরিবহন থেমে যায়। এ সব পরিবহনে অবস্থানরত যাত্রীরাও অংশ নেন জাতীয় সংগীত গাওয়ার এই কর্মসূচিতে।এদিকে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সকাল ১১টা থেকে ১১টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে রেল থামিয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়ার এই বিশ্ব রেকর্ডে অংশ নেন। দেশের বিভিন্ন রেল স্টেশন ও জংশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতে অংশ নেন। ট্রেনের মধ্যে শব্দযন্ত্রে (স্পিকার) প্রচার করা হয় মূল অনুষ্ঠান। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম অফিসে কর্মরতরাও দাঁড়িয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন জাতীয় সংগীত গাওয়ার এই কর্মসূচিতে। একই সঙ্গে প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের কণ্ঠেও ধ্বনিত হয়েছে প্রাণের সুর ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’।

(দ্য রিপোর্ট/আরএইচ/এইচএসএম/এমএ/এমএআর/মার্চ ২৬, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর