thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

চার বছরে ৮২ লাখ ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান

২০১৩ নভেম্বর ১৩ ২১:২৮:৩৪
চার বছরে ৮২ লাখ ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান

জোসনা জামান, দিরিপোর্ট : গত চার বছরে ৮২ লাখ ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। যা অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি। এ সময়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ গড় প্রবৃদ্ধির কারণে ৬ মিলিয়নেরও বেশি (৬২ লাখ) লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে প্রায় ২ মিলিয়ন (২০ লাখ) মানুষ কাজের উদ্দেশে বিদেশে গেছেন।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের সর্বশেষ চালচিত্র শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে দেশের সামগ্রিক বিবেচনায় অর্থনীতি যে কোনো সময়ের চেয়ে সমৃদ্ধ, বিস্তৃত, স্থিতিশীল এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটমুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম দিরিপোর্টকে জানান, দেশের অর্থনীতি ধারাবাহিকভাবে অগ্রসরমান। যা অতীতের যেকোনো প্রবৃদ্ধি প্রবণতা থেকে অনেক বেশি গতিময়। রাজস্ব সম্পদ বৃদ্ধিতে অভাবনীয় গতির সঞ্চার হয়েছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতি অতীতের সমস্ত অর্জনকে ছাড়িয়ে গেছে। এ গতিময় সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রবণতার মাধ্যমে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য একটি সমৃদ্ধ, স্থিতিশীল অর্থনীতি রেখে যাচ্ছে।

তিনি আরো জানান, অর্থনৈতিক সূচকগুলো এখনও স্থিতিশীল আছে। এ অবস্থায় সরকারি বিনিয়োগ বাস্তবায়নের উপর জোর দিতে হবে। নির্বাচনী ডামাডোলের মধ্যেও যাতে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিক বিবেচনা করে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে কোনো ধরনের শিথিলতা গ্রহণযোগ্য হবে না।

প্রতিবেদনে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, গত চার অর্থবছরে গড় বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ভারতে যেখানে ৫ শতাংশ, পাকিস্তানে ৩ শতাংশ, বিকাশমান উন্নয়নশীল দেশসমূহে ৫ শতাংশ ও বৈশ্বিক গড় প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ১ শতাংশের সঙ্গে তুলনা করলে বৈশ্বিক মন্দা ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের এ অর্জন বেশ প্রশংসনীয়। চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরেও প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের উপরে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জাতীয় সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, গত তিন বছর ধরে সঞ্চয়ে উর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে যেখানে জাতীয় সঞ্চয় ছিল ২৭ দশমিক ৭ শতাংশ সেখানে ২০১২-১৩ অর্থবছরে এসে তা দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৫ শতাংশে।

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সরকারি খাতে অধিক বিনিয়োগের কারণে জিডিপিতে মোট বিনিয়োগের অংশ অতীতের সকল রেকর্ড অঙ্ক অতিক্রম করেছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরের তুলনায় সরকারি ও বেসরকারি উভয় বিনিয়োগই বেড়েছে।

মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, তুলনামূলকভাবে ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সাধারণ ও খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমেছে।

রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, গত তিন বছরের রাজস্ব আদায়ের চিত্র বেশ ভালো প্রবৃদ্ধির ধারণা দেয়। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ৪৪৮ কোটি সাত লাখ টাকা। সেখানে ২০১২-১৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৯৬ কোটি ৮ লাখ টাকা।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরে জিডিপিতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অংশ ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে জিডিপিতে সংশোধিত এডিপির অংশ ছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ, সেটি বেড়ে ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গত চার বছরে সংশোধিত এডিপির বাস্তবায়ন ছিল রেকর্ড।

প্রতিবেদনে সরকারি ঋণের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, গত চার বছরে ভারসাম্যপূর্ণ রাজস্ব ও মুদ্রানীতির কারণে ব্যাংক ব্যবস্থা ও বহিঃউৎস থেকে গৃহীত সরকারি ঋণ কমবেশি নিয়ন্ত্রিত ছিল। সরকারি ঋণের পরিমাণ জিডিপির ৫ শতাংশের নিচে ছিল। এর আরও একটি কারণ হলো চার বছরে দেশের রাজস্ব সংগ্রহের উচ্চহার।

রপ্তানির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল জিডিপির ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ, যা ২০১২-১৩ অর্থবছরে এসে দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৮ শতাংশে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য ও সেবা রপ্তানি করা হয়েছে। এটি আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।

আমদানির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৮ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের দ্রব্য ও সেবাপণ্য আমদানি করা হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের আমদানি ব্যয়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।

বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে রেকর্ড ১৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত চার বছর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সবসময় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের উপরে ছিল।

বৈদেশিক সাহায্যের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তা ছাড় হয়েছিল ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেখানে ২০১২-১৩ অর্থবছরে ছাড় হয়েছে ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অনুদান ও ঋণ বিতরণের পরিমাণ আগের যোকোন সময়ের চেয়ে বেশি।

(দিরিপোর্ট/জেজে/এমএআর/এইচএসএম/নভেম্বর ১৩, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর