thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ 24, ১৪ চৈত্র ১৪৩০,  ১৮ রমজান 1445

তিস্তা অভিমুখে বিএনপির লংমার্চ

‘দাবি আদায় না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি’

২০১৪ এপ্রিল ২৩ ১৪:৫৪:৩১
‘দাবি আদায় না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি’

তারেক সালমান, কাওসার আজম, হাসান মাহমুদ ও আব্দুল্লাহ আল মামুন, তিস্তা ব্যারেজ থেকে : তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না পেলে ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে বিএনপি।

বুধবার দুপুরে লালমনিরহাটের ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারেজের সামনে লংমার্চ পরবর্তী এক জনসভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই হুশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় আমাদের ১০ হাজার কিউসেক পানির প্রয়োজন। এক লংমার্চে তিস্তায় ৩ হাজার ৬ কিউসেক পানি বেড়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, তিস্তার পানি না দিলে ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করব।’

সকাল ১০টায় রংপুরের পাবলিক লাইব্রেরির পথসভা থেকে লংমার্চের গাড়িবহর বেলা ১২টার দিকে ডালিয়ার তিস্তা ব্যারেজে পৌঁছায়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ডালিয়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের হেলিপ্যাড মাঠে পায়ে হেঁটে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছালে নেতাকর্মীরা করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানায়।

সমাবেশে নেতাকর্মীরা ‘তিস্তা নদীর পানি দে, নইলে গদি ছেড়ে দে’, বাঁচতে হলে জিততে হবে’, খালেদা জিয়া এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে’ শ্লোগান দিয়ে পুরো এলাকা সরব করে রাখে। সমাবেশে কয়েকজন নারীশিল্পী তিস্তাকে নিয়ে ভাওয়াইয়া গান পরিবেশন করে। তিস্তা পাড়ে বসবাসকারী হতদরিদ্র কৃষক আসিম উদ্দিন পানির অভাবে তার দুঃখ-দুদর্শার কথা তুলে ধরে হৃদয়স্পর্শী বক্তব্য রাখেন।

মঙ্গলবার রাজধানী থেকে তিস্তা অভিমুখে লংমার্চ শুরু করে বিএনপি। দুইদিনে গাজীপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী ও রংপুরে পথসভা করে তারা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘তিস্তার এই লংমার্চ ভারত সরকার ও তার জনগণের বিরুদ্ধে নয়। আমরা ন্যায্য পানির হিস্যা আদায়ে আন্দোলন করছি। আমাদের দেশ ছোট হতে পারে। কিন্তু ১৬ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ আমাদের পদানত করতে পারবে না।’

তিস্তাসহ ৫৪টি নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণ করে ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে- এমন অভিযোগ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেতে চাই। দেশনেত্রীর নির্দেশে আমরা লংমার্চে এসেছি। নেত্রীর এক কর্মসূচিতে তিস্তায় ৩ হাজার ৬ কিউসেক পানি বেড়ে গেছে। আল-হামদুলিল্লাহ। আমাদের লংমার্চের জন্য পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা আমাদের কর্মসূচির প্রাথমিক সফলতা।’

ভারত সরকারের উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, ‘তিস্তার জন্য ১০ হাজার কিউসেক পানি আমাদের প্রয়োজন। ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব সুদৃঢ় তখনই হবে, যখন তিস্তার পানি ১০ হাজার কিউসেকে আসতে থাকবে।’

আওয়ামী লীগ সরকারকে নতজানু নীতির অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা কখনও তিস্তা পানি চুক্তি করতে পারবে না। কারণ এই সরকারের কোনো জনসমর্থন নেই। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। আর যাদের শক্তিতে তারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের এরা অখুশি করতে চায় না।’

তিস্তার পানির অভাবে এ অঞ্চলে মরুকরণ, কৃষিজাত ফসলের ক্ষতি, পরিবেশ বিপর্যয়ের বিষয়গুলো তুলে ধরেন এই সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী। বর্তমান সংকট উত্তরণে অতিদ্রুত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বচনের দাবিতে আন্দোলনের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানান তিনি। এ সময় লংমার্চ সফল করতে দলীয় নেতাকর্মীসহ গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে সমাবেশ অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান, জমির উদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ওসমান ফারুক, শামসুজ্জামান দুদু, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আহমদ খান, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম-মহাসচিব মিজানুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশীদ, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবীর খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, অঙ্গসংগঠনের মধ্যে মহানগরের আবদুস সালাম, যুবদলের সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মহিলা দলের শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের মীর সরফত আলী সপু, ছাত্রদলের বজলুল করীম চৌধুরী আবেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

স্থানীয় নেতাদের মধ্যে রংপুরের মুজাফফর হোসেন, নীলফামারীর লুৎফর রহমান মিন্টু, আনিসুর আরেফিন চৌধুরী, লালমনিরহাটের হাফিজুর রহমান বাবলা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

১৯ জোটের নেতাদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মজিবুর রহমান, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত আমেনি, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন বক্তব্য দেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে রাজশাহীর সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, শামীমুর রহমান শামীম, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন, মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নুরী আরা সাফা, হুমায়ুন ইসলাম খান, আবুল কালাম আজাদ, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, এমএ মালেক, হাফেজ আবদুল মালেক, রফিকুল ইসলাম মাহতাব, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, শফিউল বারী বাবু, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম আলিম, সুলতানুল হক নম্র চৌধুরী, ভিপি সাইফুল ইসলাম, জয়নাল আবেদিন চান, কামরুল মুনির, শফিউল হক মিলন, কাজী সাইদুল আলম বাবুল, শামসুল আলম তোফা, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, হারুনুর রশীদ, নাজিম উদ্দিন আহমেদসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশ পরিচালনা করেন দলের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম।

(দ্য রিপোর্ট/টিএস-কেএ/এমসি/এপ্রিল ২৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর