thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

কে জ্বালাবেন আলো : রাষ্ট্রপতি না স্পিকার?

২০১৩ ডিসেম্বর ০৪ ১২:০৫:৩২
কে জ্বালাবেন আলো : রাষ্ট্রপতি না স্পিকার?

বিশেষ প্রতিনিধি, দ্য রিপোর্ট : সমঝোতা সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে প্রদীপের আলো কে জ্বালাবেন? রাষ্ট্রপতি না স্পিকার? এমন গুঞ্জনই চলছে রাজনৈতিক মহলে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণার পর এমন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনানুষ্ঠানিক আলোচনায়ও নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান নিয়ে এ ধরনের আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায়। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে এখনও আলোচনা চলছে বলেও জানা গেছে।

এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর ঢাকা সফর। তার ঢাকায় আসার এই খবরকে কেন্দ্র করে নানান কথা চাউর হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান কে হচ্ছেন, রাষ্ট্রপতি না স্পিকার-সেই প্রশ্নও।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার প্রধানের পদ ছাড়তে রাজি আছেন। তবে সেক্ষেত্রে তিনি চান স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীর হাতে দায়িত্ব থাক। তাকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার পেছনে শেখ হাসিনার এই পরিকল্পনাও কাজ করেছে বলে রাজনীতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

তবে প্রধান বিরোধী দল আগে সরকার প্রধানের পদ থেকে শেখ হাসিনাকে সরে দাঁড়ানোর দাবি জানালেও সরকার প্রধান কে হবেন? এ বিষয়ে কারো নাম প্রস্তাব করে নি।

নির্বাচনকালীন সময়ে রাষ্ট্রপতিকেই সরকার প্রধান হিসেবে দুই দল মানতে পারেন বলে অভিমত ব্যক্ত করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারানকোর মধ্যস্থতায় এ বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে বলে রাজনৈতিক মহলে জোর আলোচনা চলছে।

নির্বাচনকালীন সরকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ইতিবাচক সাড়া সম্পর্কে দ্য রিপোর্টের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের তিন নেতার সঙ্গে কথা বলা হয়। কেউই নাম প্রকাশ করে মন্তব্য করতে চাননি। তারা জানিয়েছেন, এমন একটি উদ্যোগ চলছে। এর বাইরে তাদের কিছু বলার নেই।

আওয়ামী লীগের ডাকে মন্ত্রিসভায় যোগদানকারী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মঙ্গলবার নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এ ঘটনা সমঝোতার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে সমঝোতা না হলে নির্বাচন বাতিল করে জরুরি অবস্থা জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

টেলিফোনে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীর মতামত জানতে চাইলে তিনি দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য আমি করব না। চলমান রাজনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে আমি মন্তব্য করি না।’

মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনার সঙ্গে বৈঠক শেষে মঙ্গলবার দুপুরে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনী সমস্যার সমাধান আসবে।’

জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতা বলেন, ‘এ রকম একটি আলোচনা চলছে। সরকার যদি এই বিষয়ে উদ্যোগ না নেয় তাহলে কোনো ফল আসবে না। পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে সরকারের সদিচ্ছার ওপর।’

দশম সংসদ নির্বাচন কোন ধরনের সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে এমন প্রশ্নে পুরোদেশ রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতেই তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখও অতিক্রান্ত হয়েছে।

নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান প্রশ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারি দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘এই সংকট উত্তরণে রাষ্ট্রপতিকেই অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। সাংবিধানিকভাবে স্পিকার সংকট উত্তরণে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবেন না। রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠন করে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করলেই কেবল এ সংকট সমাধান হবে।’

উল্লেখ্য, পারস্পারিক বিপরীত অবস্থানের জায়গায় দুই রাজনৈতিক জোটের অবস্থান সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বরাবরই আলোচনা হচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিয়ে আসছিলেন।

আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকেও সমঝোতার ব্যাপারে চাপ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এসব কিছু মিলিয়ে বহুমুখী সংকটে থাকা রাজনৈতিকস্থিতিশীলতা ফেরাতে সরকারের উদ্যোগকেই গুরুত্ব দিচ্ছে বিভিন্ন মহল।

ক্রমেই অনিশ্চয়তার পথে চলা রাজনীতির অঙ্গনে নানান সময় সমঝোতার অনানুষ্ঠানিক খবর পাওয়া যায়। তার কোনোটাই আলোর মুখ দেখেনি।

(দ্যরিপোর্ট/বিকে/এইচএসএম/ডিসেম্বর ০৪, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

বিশেষ সংবাদ এর সর্বশেষ খবর

বিশেষ সংবাদ - এর সব খবর