আহমদুল হাসান আসিক, দ্য রিপোর্ট : আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই মূলত দোহার উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের হাজার বিঘা গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় রাজনীতিতে দখলদারিত্ব এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বিশালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মোল্লা এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বাশার চকদারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। স্থানীয় লোকজন এবং পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলাউদ্দিন জাতীয় পার্টির প্রার্থী সালমা ইসলামকে সমর্থন করে। এতে করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ক্ষুব্ধ হয়। রবিবার সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল মান্নান খান হেরে গেলে মান্নানের ভাই মোতালেব খানের সহযোগী বাশার চকদার সেটা মেনে নিতে পারেনি। আর এ কারণেই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। যার ফলে সামান্য কথা কাটাকাটির জের ধরে নৃশংস এ ঘটনা ঘটে। আর এতে আলাউদ্দিন মোল্লার সমর্থক ৫ জন নিহত হয় এবং দু’ পক্ষের আরো অন্তত আহত হয় ২০ জন। তবে জমি দখল নিয়েও আলাউদ্দিনের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

সংঘর্ষের সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়রা জানায়, এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকলেও নীরব ভূমিকা পালন করেছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ঘটনার সময় মাত্র তিনজন সদস্য সেখানে ছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এডিশনাল ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, তিনজন পুলিশ সেখানে উপস্থিত ছিল। ঘটনাস্থল থেকে তারা ৩ জনকে আটক করে সাহসী ভূমিকা পালন করেছে। তবে পুলিশ যদি কোনো অবহেলা করে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে পুলিশ এটাকে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা নয় বলে দাবি করেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও এটাকে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা নয় বলে দাবি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে এডিশনাল ডিআইজি বলেন, তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব চলছে। নির্বাচনের পর সেটা অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা হিসেবে এটাকে বিবেচনা করা যাবে না।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, এটাকে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বলা যাবে না। কেননা এটার সঙ্গে নির্বাচন নয় বরং পারিবারিক দ্বন্দ্বই জড়িত। আপনারা এটা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন।

এদিকে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দোহার উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, নির্বাচন নয় পারিবারিক বিষয়টিই এখানে প্রাধান্য পেয়েছে। নির্বাচনে হেরে হয়তো ক্ষোভ বেড়েছে। তবে এটা কোনোভাবেই নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা নয়।

উল্লেখ্য, সহিংসতার ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়। তারা হলেন- মুসা খন্দকার (৫৫), ছেলে মাসুদ খন্দকার (২৮), ভাগ্নে রেজাউল (২৬), মকবুল হোসেন (৩৫) এবং আসলাম হোসেন (২০)। তবে দোহার থানা সূত্র জানায়, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩জন নিহত হয়েছেন। এখনো কারো বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি

(দ্য রিপোর্ট/এএইচএ/এপি/ এনআই/জানুয়ারি ০৬, ২০১৪)