দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : ‘সমঝোতার জন্য নয়, প্রধানমন্ত্রীর ফোন ছিল লোক দেখানো’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

জাতীয় প্রেস ক্লাব ভিআইপি লাউঞ্জে ‘বিএনপির সহযোগী সংগঠন ঐক্য পরিষদ’ সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরীর স্মরণসভায় বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মওদুদু বলেন, ‘আমরা মনে করি, সংলাপের দরজা এখনও খোলা আছে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াত আমাদের নেত্রী (খালেদা জিয়া) প্রত্যাখ্যান করেননি। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, আমাদের নির্ধারিত কর্মসূচি ২৯ অক্টোবর শেষ হলে আমারা যে কোন সময় আলোচনায় বসতে রাজি আছি। কিন্তু সে আলোচনা হতে হবে নির্বাচনকালীন সময়ে নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা নিয়ে।’

প্রধানমন্ত্রী ‘অপ্রয়োজনীয়’ কথা বলে প্রকৃত উদ্দেশ্য হতাশায় পরিণত করেন বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি এ নেতা।

মওদুদ বলেন, ‘আমরা সবসময় সংলাপ ও সমঝোতার পক্ষে। এ জন্য পৌনে পাঁচ বছর অপেক্ষায় ছিলাম। বর্তমান সঙ্কট সরকার সৃষ্টি করেছেন। তাই এর সমাধান তাদেরকেই করতে হবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘সমঝোতার মাধ্যমে চলমান সঙ্কট সমাধান না হলে বাংলাদেশের মানুষের জন্য রাজপথ ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প পথ থাকবে না।’

মওদুদ আহমদ বলেন, ‘অনেক তিক্ততার পরও প্রধানমন্ত্রীর ফোন খুশির খবর, যাকে নীতিগতভাবে স্বাগত জানাই। কিন্তু লাল টেলিফোনকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য দেশের মানুষ আশা করেনি। তিনি ইচ্ছা করলে লাল ফোন নয়, নরমাল ফোন এমনকি সেল ফোনে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করতে পারতেন।’

প্রচলিত তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে কারো ফোন রেকর্ড, অনুমতি না নিয়ে প্রচার করা বেআইনি উল্লেখ করে সাবেক এ আইনমন্ত্রী আরো জানান, ‘এ ক্ষেত্রে যদি প্রচার করতেই হয় উভয়পক্ষের মতের ভিত্তিতে তা করা প্রয়োজন ছিল। ফোনালাপ প্রচারকে যদি দেশের মানুষ বিতর্কও মনে করেন, তাতে অনেক পয়েন্টে খালেদা জিয়ার বিজয় হয়েছে।’

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রীর ফোনালাপ যত খুশি প্রচার করেন, এতে খালেদা জিয়ারই লাভ হবে।’

গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধন প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, ‘আগে দলীয় মনোনয়ন পেতে কমপক্ষে তিন বছর দলীয় সদস্য হিসেবে থাকতে হতো। সংশোধনী এনে দুটি ক্ষতি করা হয়েছে- একদিকে রাজনীতিকে রাজনীতিবিদদের কাছে রাখতে চান না, অন্যদিকে নিজ দলের নেতার্মীদের অপমান করেছে সরকার।’

রাজনীতিকে ধ্বংস করতে এবং দলীয় স্বার্থেই এ সংশোধনী আনা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

নির্বাচন কমিশনকে সরকারের দোসর উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন অথর্ব, অদক্ষ ও সরকারের সেবাদাসী। এদের প্রতি আমাদের কোনো শ্রদ্ধা ও আস্থা নেই।’

মরহুম সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরীকে সংবেদনশীন, মননশীল মানুষ হিসেবে আখ্যা দিয়ে মওদুদ আরো বলেন, সাংবাদিকতার জীবনে তিনি নিজেকে একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ইচ্ছা পোষণ করেন তিনি।

ঐক্য পরিষদের সভাপতি মেজর (অব.) মোহাম্মদ হানিফের সভাপতিত্বে সভায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

(দিরিপোর্ট২৪/এমএইচ/এমএআর/অক্টোবর ৩১, ২০১৩)