নূরুজ্জামান তানিম, দ্য রিপোর্ট: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শিগগিরই চালু হতে যাওয়া নতুন অটোমেটেড ট্রেডিং সিস্টেমের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সম্প্রতি ট্রেডিং সিস্টেম সম্পর্কে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিএসইসির পরিচালক মনসুর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি গত ২১ জানুয়ারি ডিএসইর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ডিএসই) বরাবর পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ডিএসইর বর্তমান ট্রেডিং সিস্টেমে মাঝে মধ্যেই লেনদেন নিষ্পত্তিতে বিঘ্ন ঘটছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে ডিএসইর স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার ও প্রকাশিত হয়েছে। যা ডিএসইকে অনেক সমালোচিত করেছে। এ পরিস্থিতিতে এমন একটি ট্রেডিং সিস্টেম চালু করা উচিত যা নিরবচ্ছিন্নভাবে লেনদেন নিষ্পত্তি করবে। এটা ডিএসইর কাছে প্রত্যাশা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে ডিএসইর নতুন অটোমেটেড ট্রেডিং সিস্টেম চালুর অগ্রগতি সম্পর্কিত সকল তথ্যাদি দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ডিএসইর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্বপন কুমার বালা বিএসইসির চিঠি পেয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

ডিএসইর সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘এ বিষয়ে বিএসইসি যদি চিঠি পাঠিয়ে থাকে, তাহলে তার জবার দেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শেয়ারবাজারের লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য নতুন অটোমেটেড ট্রেডিং সিস্টেম চালু করার জন্য কাজ চলছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের জন্য উপযোগী প্রযুক্তির সফটওয়্যার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা (প্রেজেনটেশন) দিয়েছে। আশা করছি শিগগিরই নতুন ট্রেডিং সিস্টেমটি দ্রুত চালু করতে সক্ষম হব।

জানা গেছে, শেয়ারবাজারের লেনদেন নিষ্পত্তির সফটওয়্যার ম্যাচিং ইঞ্জিন (এমই) বা কোর ইঞ্জিন ও অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস) আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছে ডিএসই। এ লক্ষ্যে ডিএসইর প্রতিনিধিরা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) পরিদর্শন করেছেন। এতে সিএসইর ব্যবহৃত সফটওয়্যার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পেয়েছে ডিএসই। এ ছাড়া বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের জন্য উপযোগী প্রযুক্তির সফটওয়্যার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা (প্রেজেনটেশন) দিয়েছে। ম্যাচিং ইঞ্জিনের জন্য নাসডাক, মিলিনিয়াম আইটি ও ফাইন্যান্সিয়াল টেকনোলজিস ইন্ডিয়া লিমিটেড (এফটিআইএল) প্রেজেন্টেশন দিয়েছে। এ ছাড়া অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের জন্য ফ্লেক্সট্রেড, ওমনিস, টাটা, এফটিআইএল ও পোলারিস প্রেজেন্টেশন দিয়েছে। বিশেষ করে নাসডাক বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের জন্য উপযোগী প্রযুক্তির সফটওয়্যার সম্পর্কে একটি স্টাডি রিপোর্ট ডিএসইতে দাখিল করেছে। ওই স্টাডি রিপোর্ট ও প্রেজেন্টেশনগুলো বুয়েটের অধ্যাপক ড. কায়কোবাদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের এক্সপার্ট প্যানেল ডিএসইর অটোমেশন যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। ওই প্রতিবেদন অনুসারে সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এখন শুধু সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে দর-দাম নির্ধারণ করা বাকি আছে। শিগগিরই এ প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে ডিএসই কর্তৃপক্ষ দ্য রিপোর্টকে নিশ্চিত করেছেন।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/ডব্লিউএন/এএল/জানুয়ারি ২৩, ২০১৪)