সিলেট অফিস : দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষামূলকভাবে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) উড়ানো হয়েছে চালকবিহীন বিমান ড্রোন। বুধবার বেলা ১টা ২৭ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ড্রোনটি চালানো হয়। তবে ড্রোনের মোটর নষ্ট হয়ে যাওয়ার ৫০ সেকেন্ড পর মাটিতে পড়ে যায় চালকবিহীন বিমান।

ড্রোন তৈরি দলনেতা রেজুয়ানুল হক নাবিল দ্য রিপোর্টকে জানান, যন্ত্রটিতে এখনও ড্রোনের বৈশিষ্ট্য আসেনি। এটাকে এবার ড্রোনে রূপান্তরের পালা চলছে। তবে ড্রোনের জন্য যে ডিসিসি (ড্রোন কন্ট্রোলার সেন্টার) প্রয়োজন তার সফটওয়্যারের কাজ আমরা ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছি। ডিসিসি’র সঙ্গে এয়ারক্রাফটের ইন্টারফেসিং সংযুক্ত করা হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এবং প্রয়োজনে ডিসিসি’র অপারেটরের সাহায্যে চালানো যাবে।

তিনি আরও জানান, আমরা এ বছরের প্রথম দিকেই ঘোষণা দেই এপ্রিলে মেনুয়্যাল মুডে উড়াতে পারব। যদিও কাজ শুরুর ২৭ দিনের মধ্যেই আমরা উড়াতে এবং ডিসিসি এর সফটওয়্যার বানাতে সক্ষম হই।

ড্রোনের ব্যাপারে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থী আছে। সরকার যদি এই শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন আবিষ্কার ও গবেষণা কাজের জন্য আর্থিক সহায়তা করে তা হলে শিক্ষার্থীরা দেশের জন্য অনেক কিছু করতে পারবে। আমদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এটা প্রমাণ করেছে।’

ড্রোনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বিক নিরাপত্তায় ড্রোন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের দেশে যে সব ড্রোন ব্যবহার করা হয় তা অনেক বেশি মূল্য দিয়ে বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়। এ সব ড্রোন নষ্ট হলে আবার বাইরে থেকেই ঠিক করাতে হয় যা খুবই ব্যয়বহুল। কিন্তু আমাদের দেশে তৈরি করা হলে অনেক কম খরচে এবং সমস্যা হলে দেশেই মেরামত করা যাবে।’

ড্রোনের কাজ সম্পর্কে নাবিল জানান, এ যন্ত্র আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় পাহারা দিতে পারে। দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহজেই ড্রোন ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া যুদ্ধক্ষেত্রেও এটি যুদ্ধ বিমান হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

ড্রোন তৈরির টিমে রয়েছেন পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রেজুয়ানুল হক নাবিল, মারুফ হোসেন রাহাত ও রবি কর্মকার। প্রজেক্টটির দায়িত্বে আছেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে প্রায় ১৫ মিনিটের মধ্যে প্রথমবারের মতো আকাশে উড়ানো হয় ড্রোন। প্রথম থেকে এখন পর্যন্ত ড্রোন তৈরি করতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পুরো খরচই বহন করেছেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল।

২০১০ সালে মুঠোফোনে ভর্তি প্রক্রিয়া, গত বছরের ১৪ এপ্রিল দেশের প্রথম বাংলা সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকা, ১৯ জুলাই দেশীয় প্রযুক্তির ট্র্যাকিং ডিভাইস, ৩ ডিসেম্বর অন্ধদের জন্য ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস আবিষ্কার করেছে শাবি শিক্ষার্থীরা।

(দ্য রিপোর্ট/এমজেসি/এমসি/সা/জানুয়ারি ২৯, ২০১৪)