দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মতো জেলায় জেলায়ও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার সাক্ষর রাখতে একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে মানুষের ঢল নামে। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে শহীদ মিনারের বেদী। দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরের সেই খবর।

চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানান, বন্দর নগরী চট্টগ্রামে একুশের প্রথম প্রহর শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রী শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। কেউ দলে-দলে আবার কেউ একা ফুল হাতে শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।

প্রথম প্রহরে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও কাউন্সিলররা, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, বিভাগীয় কমিশনার রুহুল আমিন, সাবেক মেয়র মো. মনজুর আলম, সিএমপি কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল, জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন, ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আকতার, জেলা পরিষদের প্রশাসক এম এ সালাম, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, জাপা নেতা সোলায়মান আলম শেঠ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ান, চট্টগ্রাম ফটো জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশন, জেলা আইনজীবী সমিতি, সিভিল সার্জন, পরিবেশ অধিদফতর, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ, মহানগর ছাত্রলীগ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডসহ বিভিন্ন সংগঠন শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

মেহেরপুর

মেহেরপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুরে একুশের প্রথম প্রহরে পুস্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্যে দিয়ে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। রাত ১২টা ১ মিনিটে মেহেরপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে ফুল দেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন, মহিলা এমপি সেলিনা আখতার বানু, জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার হামিদুল আলম। এরপর শহীদ মিনার সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

খুলনা

খুলনা শহীদ হাদিস পার্কের শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে খুলনায় অমর একুশে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন শুরু হয়।

রাত ১২টা ১ মিনিটে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রথম পুস্পস্তবক অর্পণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। পরে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী, নজরুল ইসলাম মঞ্জু নেতৃত্বে বিএনপি এর অংগ সংগঠন, খুলনা প্রেস ক্লাব, খুলনা সিটি কপোলেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আনিসুর রহমান বিশ্বাসের নেতৃত্বে খুলনা চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজ, খুলনা আইনজীবী সমিতি, খুলনা পুলিশ কমিশনার, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজিসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানান।

কুষ্টিয়া

শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কুষ্টিয়ায় একুশের প্রথম প্রহরেই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বিভিন্ন স্তরের মানুষ। কুষ্টিয়া ডিসি কোর্ট চত্ত্বরে শহীদ মিনারে রাত ১২টা ১ মিনিটে জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন ও পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে জেলা আওয়ামী লীগ, কুষ্টিয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ শহীদ মিনারে তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

একই সময়ে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে শহীদ মিনারে জেলা বিএনপি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

নড়াইল

নড়াইল জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাত ১২টা ১ মিনিটে ভাষা শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ, নড়াইল পৌরসভাসহ বিভিন্ন সরকারি দফতর, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

এর আগে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে হাজারো মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্যদিয়ে ভাষা শহীদদের স্মারণ করা হয়। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ, জেলা পরিষদ প্রশাসক সুবাস চন্দ্র বোস, পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু উপস্থিত ছিলেন।

মৌলভীবাজার

একুশের প্রথম প্রহরে মৌলভীবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে বলে জানিয়েছেন দ্য রিপোর্ট প্রতিনিধি।

মৌলভীবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাত ১২টা ১ মিনিটে ভাষা শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর শহীদ বেদীতে একে একে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মৌলভীবাজার সদর আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সায়রা মহসীন, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ প্রশাসক, জেলা আওয়ামী লীগ, মৌলভীবাজার পৌরসভার পক্ষে মেয়র, পুলিশ প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা পরিষদের প্রতিনিধিরা।

এছাড়া জেলা শিল্পকলা একাডেমী, জেলা সাংস্কৃতিক কর্মী সংসদ, সৈয়দ শাহ মোস্তফা কলেজ, পৌর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জেলা ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, সিভিল সার্জন অফিস, জাসদ, যুবজোট, পূজা উদযাপন পরিষদ, জুলিয়া শপিং সিটি, জেলা আইনজীবী সহকারী সমিতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

এছাড়াও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে জগৎসী গোপালকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ, প্রজন্মলীগ, মৌলভীবাজার সদর ফারিয়া, আওয়ামী শিল্পী গোষ্ঠী, হোয়াইট পার্ল কলেজ, বিজনেস ফোরাম, জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস সমিতি, সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, মণিপুরী মুসলিম অর্গানাইজেশন।

জয়পুরহাট

জয়পুরহাটে রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদু, জেলা প্রশাসক আব্দুর রহিম, পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের প্রশাসক এস এম সোলাইমান আলী, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, জেলা আওয়ামী লীগ ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

একুশের প্রথম প্রহরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। রাত ১২টা ১টি মিনিটে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ড. মো. আলী আশরাফ, ট্রেজারার প্রফেসর কুন্ডু গোপীদাসসহ একে একে সকল বিভাগের পক্ষ থেকে শহীদ বেদীতে পুস্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।

১৯৫২ সালে পাকিস্তানি শাসকদের উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে নামে পূর্ব বাংলার মানুষ। ১৪৪ ধারা ভেঙে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। এতে রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত, সফিউরসহ কয়েকজন তরুণ শহীদ হন।

ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর। ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলোতে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।

মাগুরা

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শহীদ মিনারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মো: মাহবুবর রহমান , পুলিশ সুপার একে এম এহসান উল্লাহ, জেলা পরিষদ প্রশাসক সৈয়দ শরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মাগুরা জেলা শাখা ও এর অঙ্গসংগঠন , মাগুরা জেলা বিএনপি, মাগুরা প্রেসক্লাব , জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ , বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়।

এছাড়া সকাল ৭টায় কালেক্টরেট চত্বর থেকে প্রভাতফেরি বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ বেদীতে এসে মিলিত হয়।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৬)