নূরুজ্জামান তানিম, দ্য রিপোর্ট : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো ঋণ সুবিধা পেতে যাচ্ছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পাশাপাশি কর্মদিবসগুলোতে দুপুরে খাওয়ার টাকা ও উৎসব ভাতা পাবেন তারা।

বিএসইসি’র প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতিক্রমে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (কর্মচারী চাকুরি বিধিমালা), ২০১৪ অনুমোদন দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন তৈরী করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয় তা গেজেট আকারে প্রকাশ করবে বলে জানা গেছে।

এর আগে গত বছরের ২০ অক্টোবর খসড়া বিধিমালার প্রস্তাবিত ধারাগুলোর সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ একমত পোষণ করে বিএসইসিকে চিঠি পাঠায়। চিঠিতে স্বাক্ষর করেন উপ-সচিব সুভাশিষ সাহা।

জানা গেছে, কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শুধুমাত্র গৃহনির্মাণ ও গাড়ি কেনার জন্য ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী গৃহনির্মাণ সুবিধা পাবেন। এর জন্য সর্বোচ্চ ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে ৬০ লাখ টাকা। তবে গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে অর্থাৎ প্রাইভেট কার কিনতে ঋণ সুবিধা পাবেন কমিশনের সহকারি পরিচালক থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এর জন্য সর্বোচ্চ ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে ২০ লাখ টাকা। আর সহকারি পরিচালক থেকে নিম্নপদস্থ কর্মচারীরা (ব্যক্তিগত সহকারি, অফিস সহকারি, রিসিপশনিস্ট, টেলিফোন অপারেটর, ড্রাইভার, এমএলএসএস, ক্লিনার) প্রাইভেট কারের পরিবর্তে মোটরসাইকেল কিনতে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা ঋণ সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী দুপুরের খাওয়া বাবদ ২০০ টাকা করে পাবেন। এর জন্য বেতন কাঠামো অনুসারে একটি নীতিমালা করা হবে।

তবে এসব সুয়োগ সুবিধা কেবল কমিশনের স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভোগ করবেন। আর ঋণ বন্টন কার্যক্রম বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার আদলেই করা হবে। তবে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন স্কেল অনুসারেই ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ৯ এর ৩ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রদেয় বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা সামঞ্জস্যপূর্ণ করে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও সুবিধা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রজ্ঞাপনের সেকশন ৩৩-এ বলা আছে, আইনের ৯ এর ৩ ধারা অনুয়ায়ী কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রদেয় বোনাস, উৎসব ভাতা, গৃহ নির্মাণ ঋণ, অগ্রিম বেতন ও অন্যান্য আগাম সুবিধা সামঞ্জস্যপূর্ণ করে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও সুবিধা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিএসইসি’র একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, নতুন এ আইনটি এসআরও’র (প্রজ্ঞাপন) মাধ্যমে গেজেট আকারে প্রকাশ করতে ৪ ফেব্রুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে বিএসইসিতে একটি চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট নথিপত্রে স্বাক্ষর করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন বিএসইসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম খায়রুল হোসেন। পরবর্তী সময়ে অর্থ মন্ত্রণালয় তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে এসআরও জারি করার জন্য। এর পরেই তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে।

এ বিষয়ে বিএসইসি’র কমিশনার প্রফেসর হেলাল উদ্দিন নিজামী দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি তার জবাব দিয়েছে। এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশের পরেই তা চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। এর ফলে বিএসইসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা পাবেন। তবে এর জন্য বেতন কাঠামো অনুসারে একটি নীতিমালা করা হবে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন তৈরী করা হয়েছে। আর আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয় তা গেজেট আকারে প্রকাশ করবে।’

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (কর্মচারী চাকুরি বিধিমালা), ২০১৪ আইনের পূর্বের নাম ছিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (কর্মচারী চাকুরি প্রবিধানমালা), ১৯৯৫।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/ডব্লিউএন/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৪)