পাভেল রহমান, দ্য রিপোর্ট : ‘অনেক চেষ্টা করেছি। পাঁচ বছর ধরে অনেক কিছু সহ্য করেছি সংসার টিকিয়ে রাখতে। তার কথাতে গান থেকেও দূরে সরে গিয়েছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর একসঙ্গে থাকতে পারলাম না’- বললেন ক্লোজআপ ওয়ান তারকা সঙ্গীতশিল্পী সালমা।

রাজধানীর ধানমণ্ডির একটি রেস্তোরাঁয় গত ২০ নভেম্বর সংসদ সদস্য শিবলী সাদেকের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় সালমার। দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে তাদের তালাকের কার্য সম্পন্ন হয়েছে। ডিভোর্স পেপারে স্বাক্ষরের পরপরই সালমাকে দেনমোহরের ২০ লাখ ১ টাকা বুঝিয়ে দেন শিবলী।

বিবাহবিচ্ছেদের প্রসঙ্গ নিয়ে আজ শনিবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা বলেন সালমা। তার সেই আলাপচারিতার কিছু অংশ প্রকাশ করা হলো পাঠকদের জন্য।

দ্য রিপোর্ট : স্বামীর সঙ্গে কি আপনার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে? এই খবরটির সত্যতা জানতেই ফোন করেছি।

সালমা : হ্যাঁ, যা শুনেছেন। সেটা ঠিক আছে। অনেক চেষ্টা করেছি সংসার টিকিয়ে রাখতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আলাদা হতে বাধ্য হয়েছি।

দ্য রিপোর্ট : আপনাদের সংসার তো ভালোই চলছিল। হঠাৎ কেন বিবাহবিচ্ছেদ?

সালমা : বিয়ের পর থেকে ভালোই ছিলাম। শুরুর দিকে তো আমার গানের জন্যই সে আমাকে পছন্দ করেছে। সে নিজেও গান করত। কিন্তু পরে সে আমাকে গান ছাড়তে বলে। তার কথা রাখতে গানের ব্যস্ততাও কমিয়েছি।

দ্য রিপোর্ট : তাহলে বিবাহবিচ্ছেদ কেন?

সালমা : আমার পক্ষ থেকে চেষ্টা করেছি। আমার মেয়েটার দিকে তাকিয়ে সংসার করার চেষ্টা করেছি। পাঁচ বছর ধরে অনেক কিছুই সহ্য করেছি। আমার সাড়ে চার বছরের একটা মেয়ে আছে। মেয়েটাকেও তিন মাস ধরে তার কাছে রেখে দিয়েছে। ফলে অনেক কিছুই আমি বলতে পারছি না। শুধু বলবো, একসঙ্গে থাকতে পারছিলাম না। সে-ও চাইছিল না একসঙ্গে থাকি।

দ্য রিপোর্ট : হঠাৎ করেই কি তার মধ্যে পরিবর্তন এসেছে?

সালমা : সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকে তার মধ্যে অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছে। আমি গানের মানুষ, সে রাজনীতির মানুষ। তার অনেক পরিবর্তন মানতে পারছিলাম না। আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতো, আমার বাবা-মাকে গালমন্দ করতো। আরো অনেক কিছু বলতে পারছি না। সেটা বুঝে নিয়েন। আপনারা সেটা বুঝতে পারবেন। বিষয়গুলো সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। প্রায় পাঁচ মাস ধরে আমি আলাদা থাকছি। তিন মাস ধরে মেয়েটাকে তার কাছে রেখে দিয়েছে।

দ্য রিপোর্ট : বিষয়গুলো নিয়ে তো আইনের আশ্রয় চাইতে পারতেন?

সালমা : আমি আইনের কাছে কি দাঁড়াতে পারতাম? সে সংসদ সদস্য। অনেকভাবে চেষ্টা করেছি সংসার বাঁচাতে। গান ছেড়েছি। তার কথামতো চলেছি। সে আসলে আমাকে আর পছন্দ করছিলো না। তাই বাধ্য হয়েই আলাদা হয়ে গেছি। আমার মেয়েটার দিকে তাকিয়ে তার অনেক কিছুই সহ্য করেছি। এখন মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আর কিছু বলতে চাই না। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

উল্লেখ্য, ‘ক্লোজআপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’-শিরোনামে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তারকখ্যাতি পান সালমা। এরপর ২০১১ সালে দিনাজপুরের শিবলী সাদিকের সঙ্গে পারিবারিকভাবেই তার বিয়ে হয়।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৬ আসন থেকে সালমার স্বামী শিবলী সাদিক আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার পিতা মুস্তাফিজুর রহমান ফিজুও একই আসনে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। পিতার মৃত্যুর পর উত্তরসূরি হিসেবে রাজনীতিতে তার আগমন ঘটে।

(দ্য রিপোর্ট/পিএস/কেআই/জেডটি/নভেম্বর ২৬, ২০১৬)