জুয়েল সাহা বিকাশ, ভোলা : ভোলার উৎপাদিত শুটকি এখন বিদেশে রফতানি হচ্ছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে মালয়েশিয়া, সৌদিআরব, কাতার, ওমান, বাহরাইন, দুবাই, ইরাক, কুয়েত, লিবিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে।

ভোলার চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলার প্রায় কয়েকহাজার পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস শুটকি। তারা বর্ষার ৬ মাস নদী ও সাগরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করে রোদে শুকাতে থাকে। পরের ৬ মাস তারা এসব শুটকি বাজারে বিক্রি করতে শুরু করে। আর এ পেশায় নিয়োজিত থেকে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন নদী ও সাগর থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করে ভোলার মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট, ফকিরহাট, তালতলি, কলাতলি, চরফ্যাশন উপজেলার কুকরী-মুকরী, মনুরা, বকশি, ঢালচর, চর পাতিলায় বিভিন্ন পয়েন্টে অসংখ্য শুটকিপল্লী গড়ে উঠেছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পুরুষ ও নারীরা খোলা আকাশের নিচে মাছ রোদে শুকিয়ে শুটকি প্রস্তুত করছে। ওই সব শুটকি বাজারে বিক্রি করা হয়।

চরফ্যাশন উপজেলার চর কুকরী-মুকরী শুটকি ব্যবসায়ী মো. ইসমাইল হোসেন দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কার্তিক থেকে চৈত্র মাস শুটকির মূল মৌসুম। আমাদের থেকে শুটকি নিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আসেন।

ঢালচরের শুটকি ব্যবসায়ী আবদুল হালিম জানান, ‘ভালো মানের শুটকি উৎপাদন করায় আমাদের শুটকির অনেক চাহিদা। চট্টগ্রামে পাইকারি বিক্রি করি। এছাড়াও আমরা ঢাকা আড়ৎদারের মাধ্যমে বিদেশে শুটকি রফতানি করি। শুটকি বিক্রি করে আমি স্বাবলম্বী হয়েছি। এখন আমার শুটকিপল্লীতে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক কাজ করছে।’

দুলারহাটের শুটকি আড়ৎদার মিজানুর রহমান জানান, প্রতি মণ ওলুপা শুটকি দুই হাজার থেকে ২৫০০ টাকা, সেওলা ১৪০০ থেকে দুই হাজার টাকা, রাবিশ ১২০০ থেকে দুই হাজার টাকা ও চিংড়ি গুঁড়া ২৫০০ থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। শুটকি মাছের মান ভেদে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ গ্রেডে বাছাই করা হয়। ‘এ’ গ্রেডের শুটকি বিদেশে ভালো দামে বিক্রি করা হয়।

ঢাকার শুটকি পাইকারি আড়ৎদার মো. আবু সালাম মিয়া জানান, ‘ভোলায় ভালো মানের শুটকি উৎপন্ন হয়। তাই সেখানকার শুটকির দাম একটু বেশি। ভোলার শুটকির চাহিদা বিদেশে রয়েছে। তাই আমাদের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন দেশে শুটকি রফতানি করে।’

এ ব্যাপারে ভোলা জেলা মৎস্য অফিসার মো. রেজাউল করিম দ্য রিপোর্টকে জানান, ‘ভোলায় অনেক শুটকিপল্লী গড়ে উঠেছে। অনেক পরিবার দেশ ও বিদেশে শুটকি রফতানি করে স্বাবলম্বী হয়েছে। আমরা শুটকি ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি।’

(দ্য রিপোর্ট/একেএ/এপি/জানুয়ারি ০৮, ২০১৭)