দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, গার্মেন্টস শ্রমিকদেরকে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র ও হঠকারীতার ব্যাপারে সজাগ থেকে যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে রেডিমেট গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। রেডিমেট গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন এ সম্মেলন আয়োজন করে।

গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে শাজাহান খান বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠী। বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র হযে থাকে। এতে বিভ্রান্ত হয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকরা কখনো কখনো ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়ে হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্দোলনের নামে রাজপথে নেমে আসে। দেশের গার্মেন্টসশিল্প ও শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় হঠকারিতার পথ পরিহার করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ এখন শুধু দক্ষিণ এশিয়াতেই নয় সারা বিশ্বের আলোচিত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। কোনো চক্রান্তই এই অগ্রযাত্রাকে ব্যর্থ করতে পারবে না। কায়েমি স্বার্থবাদীরা বোমার আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মেরে, বাস জ্বালিয়ে এবং সম্পদ ধ্বংস করেও দেশে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা থামাতে পারেনি।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য হাজেরা সুলতানা, ভারতের মানিক সমাজদার ও অভিষেক রনজিত সিং এবং নেপালের রমেশ চন্দ্র সোনার। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগরের সভাপতি ও শ্রমিক নেতা আবুল হোসাইন, অগ্নিবীণার সভাপতি এইচএম সিরাজ প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের সভাপতি লাভলী ইয়াসমীন। সম্মেলনে লাভলী ইয়াসমীনকে সভাপতি ও সুমি আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক করে রেডিমেট গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের নতুন কমিটি গঠন করা হয়।

হাজেরা সুলতানা বলেন, জাতীয় সংসদকে প্রাণহীন মনে হয়। তাই মানুষের মাঝে থাকতেই ভাল লাগে। যারা দেশের উন্নয়ন করছে সেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের বাদ রেখেই নারীদের জন্য ছয় মাসের মাতৃকালীন ছুটির ব্যবস্থা করা হয়। গর্মেন্টস মালিকদের বাড়ির অন্ত নেই। অথচ গার্মেন্টস শ্রমিকরা বস্তিতে থেকে ৪-৫ মাইল দূর থেকে পায়ে হেঁটে গার্মেন্টস এর কাজে আসে। গ্রাম থেকে গরীব মেয়েদের এনে নানাভাবে শোষণ করা হচ্ছে। উন্নয়নের চাবিকাঠি যারা সেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঘরে খাবার নেই। গলাবাজি না করে সত্যিকারভাবে গার্মেন্টস শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করতে হবে।

আবুল হোসাইন বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনেই তিন বছর পর বেতন বাড়ানোর দাবিতে আশুলিয়ায় গার্মেন্টস শ্রমিকরা কর্মবিরতি করেছে। এই আন্দোলনে ষড়যন্ত্রের গন্ধ খোঁজার কোনো অবকাশ নেই। শ্রমিকরা কারো দয়ার পাত্র নয়। তারা তাদের অধিকার চায়। দেশে সম্পদের প্রশংসা করা হয়। শ্রমিকদের কাজের প্রশংসা করা হয় না।

(দ্য রিপোর্ট/এমএম/এপি/ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৭)