দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রাডার ক্রয় দুর্নীতি মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদসহ সব আসামি খালাস পেয়েছেন। বুধবার (১৯ এপ্রিল) হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের উপস্থিতিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা এই রায় দেন। 

এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান সুলতান মাহমুদ, বিমান বাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও ইউনাইটেড ট্রেডার্সের পরিচালক একেএম মুসা। এরমধ্যে মামলার শুরু থেকে মুসা পলাতক রয়েছেন।

এর আগে গত ১২ এপ্রিল উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা মামলার রায়ের জন্য ১৯ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।

দুই যুগ আগের করা এই মামলাটি বিচারের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর পর ২০১৪ সালে ঢাকার তৎকালীন বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবদুর রশীদ শুনানিতে বিব্রত বোধ করেন। এরপর মামলাটি কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে আসে।

১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো মামলাটি দায়ের করে। অভিযোগে বলা হয়, তৎকালীন বিমান বাহিনী প্রধান সদর উদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কাছে বাহিনীর জন্য যুগোপযোগী রাডার ক্রয়ের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কোম্পানি নির্মিত অত্যাধুনিক একটি হাই পাওয়ার রাডার ও দুটি লো লেভেল রাডার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।

তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান এরশাদসহ অপর আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে থমসন সিএসএফ কোম্পানির রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিং কোম্পানির রাডার কেনে। এতে সরকারের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়।

১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। ১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট এরশাদসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয় পরবর্তীতে উচ্চ আদালতের আদেশে দীর্ঘদিন মামলার কার্যক্রম স্থগিত ছিল। সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে মামলার বিচার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়। এরপর ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়।

বিচারিক আদালত ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তা সমাপ্ত ঘোষণার পর পুনরায় সাক্ষ্য নিতে দুদকের একটি আবেদন হাইকোর্ট মঞ্জুর করেছিলেন। তবে আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায় বাতিল হয়ে গেলে বিচারিক আদালতে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে মামলার বিচার শেষ হয়।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এপি/এনআই/এপ্রিল ১৯, ২০১৭)