ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মিশনে দ্বিতীয় পর্যায়ে চালু হচ্ছে ‘তথ্য আপা’ কর্মসূচি। এজন্য ৫৪৪ কোটি ৯০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে। অনুমোদন পেলে ‘তথ্য আপা : ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করবে জাতীয় মহিলা সংস্থা।  ২০২২ সালের মার্চের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘তথ্য আপা: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন শীর্ষক’ একটি প্রকল্প ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালে ডিসেম্বরে বাস্তবায়ন করেছে জাতীয় মহিলা সংস্থা। গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের দোর-গোড়ায় তথ্য-প্রযুক্তি সেবা পৌঁছে দিয়ে দৈনন্দিন সমস্যা সমাধানে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে প্রকল্পটি ।

এই প্রকল্পের আওতায় ১৩টি উপজেলায় ১৩টি তথ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে বর্তমানে গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের বিবিধ সেবা প্রদান করা হচ্ছে। তবে দেশের সমগ্র নারী জনগোষ্ঠী বিবেচনায় এই সংখ্যা অপ্রতুল। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার উদ্দেশ্যে তাই সারাদেশে তথ্য-প্রযুক্তি সেবা প্রদানের জন্য ৪৯০টি উপজেলায় তথ্য-প্রযুক্তি কেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রকল্পটির দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হচ্ছে, তথ্য-প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার এবং তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক সেবাপ্রদানের মাধ্যমে গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত নারীদের ক্ষমতায়ন, ৪৯০টি উপজেলায় ৪৯০টি তথ্য কেন্দ্র স্থাপন, তথ্য-প্রযুক্তি সম্পর্কে এক কোটি গ্রামীণ নারীকে উদ্বুদ্ধকরণ এবং তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে দৈনন্দিন সমস্যা সমাধানে সাহায্য করা, তথ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে ই-কমার্স সহায়তা প্রদান, ই-লার্নিং পদ্ধতির মাধ্যমে প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দল গঠন করা এবং ওয়েব পোর্টল, তথ্য ভান্ডার, তথ্য আপা আইপি টিভির উন্নয়ন করা।

এ বিষয়ে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, ‘সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জেন্ডার ভিশন হলো এমন একটি সমাজ বিনির্মাণ, যেখানে পুরুষ ও নারীর জন্য সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত হবে এবং সমতার ভিত্তিতে উভয়েই সকল মৌলিক অধিকার ভোগ করবে। এই প্রকল্পটি গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত নারীদের তথ্য-প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার এবং তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক সেবা দানের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়নে সহায়ক হবে।’

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে-তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, প্রশিক্ষণ, ওয়েব পোর্টাল, তথ্য ভান্ডার, তথ্য আপা আইপি টিভির উন্নয়ন, জনবল নিয়োগ, গাড়ি ক্রয়, আসবাবপত্র, কম্পিউটার ও অফিস যন্ত্রপাতি ক্রয় করা।

এ বিষয়ে আর্থ সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মো. নজরুল ইসলাম পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত নারী সহজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা, কৃষি,আইনি সহায়তা ও জেন্ডার বিষয়ে তথ্য সুবিধা পাবেন। তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীদের প্রবেশাধিকার এবং তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়নে সহায়ক হবে, তাই প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য।’

(দ্য রিপোর্ট/জেজে/জেডটি/মে ০৯, ২০১৭)