বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) এর অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধি করা হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ। প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় ১৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে মোট ৩৩২ কোটি ১২ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। একই সঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে আরও ২ বছর।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে। অনুমোদন পেলে ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হলো কৃষি। কৃষিজাত উৎপাদনের ক্ষেত্রে দানাদার খাদ্যে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করলেও বিভিন্ন পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্যের চাহিদা পূরণে পিছিয়ে আছে। ফলে দেশের বিপুলসংখ্যক জনগণ অপুষ্টিতে আক্রান্ত। নিম্নমানের খাদ্য গ্রহণের ফলে ব্যক্তির মানসিক বিকাশ ও শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।

পুষ্টি জরিপের প্রতিবেদনে দেখা যায়, দারিদ্র্যের কারণে কম আয়, পরিবার এবং পরিবারের বাইরে অসম খাদ্য বণ্টন ও অভাব, খাদ্য সংগ্রহ করে সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তির অভাব এবং খাদ্য ও পুষ্টি সম্পর্কে সচেতনতা ও জ্ঞানের অভাব মূলত বাংলাদেশে অপুষ্টির অন্যতম কারণ। কাজেই পুষ্টি উপাদানের অভাবজনিত রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের জন্য টেকসই কৌশল অবলম্বন করা প্রয়োজন। এ জন্য সুলভ, সহজভাবে, সহজে উৎপাদন উপযোগী পুষ্টি খাদ্যদ্রব্য সঠিক নিয়মে ও সুষম মাত্রায় হাতে নেওয়া দরকার।

সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে ভূমি অধিগ্রহণ ও ভূমি উন্নয়ন বাবদ পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধি, প্রধান এবং আঞ্চলিক কার্যালয়ের অফিস ও ডরমিটরি ভবনের আয়তন বৃদ্ধি, নতুনভাবে প্রকল্প দলিলে অন্তর্ভুক্ত করে এবং প্রকল্পের মেয়াদ ২ বছর করে মোট ৩৩২ কোটি ১২ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য দ্বিতীয় সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে, যা প্রথম সংশোধিত অনুমোদিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবের (ডিপিপি) ব্যয়ের চেয়ে ১৫৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা বেশি।

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে-১ হাজার ৮০ জনকে পুষ্টি বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান, ৬০ দশমিক ৫০ একর ভূমি অধিগ্রহণ এবং ৬৬ দশমিক ৮৮ একর ভূমি উন্নয়ন, ৭ হাজার ৯৯১ মিটার বাউন্ডারি ওয়াল, ৮ দশমিক ৪০ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ৯ দশমিক ৫০ কিলোমিটার ড্রেন ও ১৪টি ভবন নির্মাণ করা।

এ বিষয়ে কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এ. এন. সামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরী পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘খাদ্যভিত্তিক পুষ্টি, খাদ্য নিরাপত্তা, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং সংরক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পুষ্টিহীনতা দূর করার জন্য প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ।’

(দ্য রিপোর্ট/জেজে/জেডটি/এনআই/মে ১৫, ২০১৭)