দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, টেকনাফ ও চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে ১৪১ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রাঙামাটিতে সেনা কর্মকর্তাসহ ১০১জন, বান্দরবানে ৬ জন, খাগড়াছতিতে ২ জন, টেকনাফে ২ জন এবং চট্টগ্রামে ৩০জন মারা গেছেন। নিহতদের পরিবারকে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখনও মাটির নিচে অনেকে চাপা পড়ে আছেন বলে মনে করছে স্থানীয়রা।

রাঙামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে সোমবার (১২ জুন) মধ্যরাতে থেকে মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকাল পর্যন্ত পাহাড় ধসে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আর বুধবার (১৪ জুন) সকালে টানা বর্ষণের কারণে খাগড়াছড়ি ও টেকনাফে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (১৪ জুন) দুপুর ২টা পর্যন্ত দ্য রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধিরা পাহাড় ধসে মৃতের সংখ্যা ১৪১ জন বলে জানিয়েছে।

এদিকে রাঙামাটিতে ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনায় নিখোঁজদের সন্ধানেসেনাবহিনী ও ফারার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার কাজ শুরু করেন।এ অভিযানে আরও ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর বুধবার সকালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় আরও ৫ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। এছাড়াখাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার দুর্গম বর্মাছড়ি ইউনিয়নে পাহাড় ধসে ২ জন ও টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নে ২ জনেরনিহতের খবর পাওয়া গেছে।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মানজুরুল মান্নান দ্য রিপোর্টকে জানান, রাঙামাটি শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় প্রবল বর্ষণের ফলে পাহাড় ধসে কমপক্ষে ১০১ জন নিহত হয়েছেন। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। রাঙামাটি সদরে দুই সেনা কর্মকর্তা ও দুই সেনা সদস্যসহ ৫৬ জন মারা গেছেন। এছাড়া কাপ্তাইয়ে ১৮ জন ও কাউখালীতে ২৩ জন, বিলাইছড়িতে ২ জন ও জুরাছড়িতে ২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পাহাড় ধসে আহত ৫৬ জন রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এদিকে বান্দরবানে পাহাড় ধসের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দমকল বাহিনীর সহকারী স্টেশন অফিসার স্বপন কুমার ঘোষ দ্য রিপোর্টকে জানান, পৃথক তিনটি স্থান থেকে পাহাড় ধসে নিহত ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আর আহত ৫ জনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী দ্য রিপোর্টকে জানান, পাহাড় ধসে চট্টগ্রামের চন্দনাইশে ৪ জন ও রাঙ্গুনিয়ায় ২৬ জনসহ মোট ৩০ জন নিহত হয়েছেন।

রাঙামাটিতে সোমবার থেকে শুরু হওয়া বর্ষণে পাহাড়ের ধসে পড়া মাটির নিচে এখনও অনেকে চাপা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

টেকনাফ থানার ওসি মো. মাইনুদ্দিন খান জানান, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পশ্চিম সাতগরিয়া পাড়ায় পাহাড় ধসে মোহাম্মদ সলিম (৪৩) ও তার মেয়ে তৃষামনি (১০) মারা গেছে। তারা পাহাড়ের খাদের নিচে কুঁড়েঘর বানিয়ে বসবাস করত। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ করেই পাহাড় ধসে পড়ে। স্থানীয়রা মাটি সরিয়ে তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে বাবা-মেয়ের লাশ পায়।

খাগড়াছড়িরলক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ ইকবাল পাহাড় ধসে ২ জনের মৃত্যুর খবর শুনেছেন বলে জানিয়েছেন।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/এনআই/জুন ১৪, ২০১৭)