দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : গ্রাহকের বায়োমেট্রিক সিমের তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষণ ও বিটিআরসির অনুমোদন নিয়ে সিম বিক্রিতে শুক্রবার থেকে চালু হচ্ছে সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্ল্যাটফরম।

নতুন এই ব্যবস্থা চালু করতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ১৮ ঘণ্টা সিম বিক্রি কার্যক্রম বিঘ্নিত হতে পারে।

সচিবালয়ে বুধবার (১৪ জুন) ‘সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্লাটফর্ম স্থাপন’ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এ সব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘শুক্রবার থেকে মনিটরিং প্ল্যাটফর্ম চালু হলেও আজই আমরা এর উদ্বোধন ঘোষণা করছি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন সফলভাবে মাত্র ৫ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আমরা বলেছিলাম এই পদ্ধতিটিকে আমরা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নিছিদ্র করতে চাই। বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের ধারাবাহিকতায় আরও একটি ধাপ যুক্ত হচ্ছে সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্ল্যাটফরম।’

‘এই প্ল্যাটফরমে যুক্ত হয়েছে সব অপারেটর। অপারেটররা ইতোমধ্যে বায়োমেট্রিক সিমের তথ্য বিটিআরসিতে (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন) ইতোমধ্যে পাঠিয়েছেন। ৩০ মে পর্যন্ত ডাটাবেজ সিস্টেমে লোড করা আছে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে ডাটা আপডেট শুরু হবে শুক্রবার দুপুরে তা শেষ হবে। এ ১৮ ঘণ্টা সময়ে সিম বিক্রিতে বিঘ্ন ঘটতে পারে।’

তারানা হালিম বলেন, ‘ডাটা আপডেট করার পর শুক্রবার বিকেল থেকে আমরা অনলাইন হয়ে যাব।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে কেউ সিম কিনতে চাইলে অপারেটরের সেই তথ্য যাবে বিটিআরসির সেন্ট্রাল মনিটরিং সিস্টেমে। সিস্টেম এনআইডির সঙ্গে যাচাই করে দেখবে ওই গ্রাহকের এনআইডির বিপরীতে কয়টি সিম আছে। এক্ষেত্রে একটি এনআইডির বিপরীতে ২০টি (প্রিপেইড ১৫টি ও ৫টি পোস্টপেইড) সিম থাকতে পারে।’

‘তারপর বিটিআরসির সিস্টেম থেকে সিমটি রেজিস্ট্রেশন করা যাবে কিনা সে তথ্য অপারেটরের কাছে যাবে। অপারেটর তথ্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে সিমটি ভেরিফাই ও রেজিস্ট্রেশন করবে। গ্রাহকদের কোন প্রকার হয়রানীতে না ফেলেই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে।’

সেন্ট্রাল মনিটরিং প্ল্যাট ফরমের সুবিধাগুলো তুলে ধরে তারানা হালিম বলেন, ‘প্র্রত্যেক এনআইডির বিপরীতে সব অপারেটর মিলিয়ে কয়টি সিম আছে তা জানা যাবে। প্রতিটি সিম বিক্রির আগে ক্লিয়ারেন্স (অনুমোদন) দেওয়া যাবে যে এই এনআইডির বিপরীতে সিমটি বিক্রি করা যাকে কিনা?’

তিনি আরও জানান, ‘মোবাইল গ্রাহকদের নিয়ে যে কোন পরিসংখ্যান দেওয়া যাবে। যেমন- কোন অপারেটরের গ্রাহক মাসে কত বাড়ল বা কমল। কোন ডাটা নিয়ে সন্দেহ হলে বিটিআরসি তা ভেরিফাই করে নিতে পারবে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্স সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমদাদ উল বারী জানান, এখন পর্যন্ত যে সিমগুলো বিক্রি হচ্ছে সিমগুলো এনআইডি তথ্যভান্ডারের সাথে ভেরিফাই করে সরাসরি বিক্রি করছে। ইচ্ছা করলে আমরা চেক করতে পারছি। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে জানার সুযোগ ছিল না।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক অপারেটরের সাথে আলাদা আলাদা করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। মাস খানেক এই জিনিসটা দেখে সিস্টেম স্ট্যাবালাইজ হয়ে গেলে অতিরিক্ত সিম যাদের আছে সেগুলো ডিঅ্যাক্টিভ (বন্ধ) করা হবে।’

বিটিআরসির মহাপরিচালক বারী বলেন, ‘এই সিস্টেম হলে দেখতে পারব একটি এনআইডির বিপরীতে ২০টির বেশি সিম আছে কি না। প্রত্যেক গ্রাহককে তথ্য দেওয়া হবে ২০টির বেশি সিম থাকলে ডিঅ্যাক্টিভেট করতে হবে। না করলে আমাদের ফোর্সলি ডিঅ্যাক্টিভেট করতে হবে।’

গত ৩০ মে পর্যন্ত ১৩ কোটি ৩১ লাখ সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার উপস্থিত ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এআরই/জুন ১৪, ২০১৭)