রাঙামাটি প্রতিনিধি : গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, টেকনাফ ও চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে ১৪৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রাঙামাটিতে সেনা কর্মকর্তাসহ ১০৮ জন, বান্দরবানে ৬ জন, খাগড়াছতিতে ২ জন, কক্সবাজার (টেকনাফ) ২ জন এবং চট্টগ্রামে ৩০ জন মারা গেছেন।

এছাড়া পাহাড় ধস ছাড়াও এ পাঁচ জেলায় দেয়াল চাপা, গাছ চাপা ও পানিতে ভেসে আরও ৭ জন মারা গেছেন। সে হিসেবে সর্বমোট মৃতের সংখ্যা ১৫৫ জন।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ধসে পড়া পাহাড়ের মাটি সরিয়ে হতাহতদের উদ্ধারে কাজ এখনও চলছে।

দ্য রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে ভিত্তিতে মৃতের সংখ্যা ১৫৫ জন বলে জানা গেছে।

পাহাড় ধসে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখনও মাটির নিচে অনেকে চাপা পড়ে আছেন বলে মনে করছে স্থানীয়রা।

তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের হিসেবে পাহাস ধস, দেয়াল চাপা, গাছ চাপা ও পানিতে ভেসে মৃতের সংখ্যা ১৫০। এর মধ্যে রাঙামাটিতে ১০৫ জন, বান্দরবানে ৬ জন, খাগড়াছতিতে ১ জন, এবং চট্টগ্রামে ২৯ এবং দেয়াল চাপা, গাছ চাপা ও পানিতে ভেসে আরও ৭ জন মারা গেছেন।

এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে তিনটি জেলায় (চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও বান্দরবান) সর্বমোট ৬১ লাখ ৪৭ হাজার নগদ টাকা ও ৮৫১ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা ও ৩০ কোজি করে চাল দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

রাঙামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে সোমবার (১২ জুন) মধ্যরাতে থেকে মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকাল পর্যন্ত পাহাড় ধসে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আর বুধবার (১৪ জুন) সকালে টানা বর্ষণের কারণে খাগড়াছড়ি ও টেকনাফে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে রাঙামাটিতে ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনায় নিখোঁজদের সন্ধানে সেনাবহিনী ও ফারার সার্ভিসের সদস্যরা বৃহস্পতিবারও উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন। এ অভিযানে আরও ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মানজুরুল মান্নান দ্য রিপোর্টকে জানান, রাঙামাটি শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় প্রবল বর্ষণের ফলে পাহাড় ধসে কমপক্ষে ১০৮ জন নিহত হয়েছেন। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। পাহাড় ধসে আহত ৫৬ জন রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এদিকে বান্দরবানে পাহাড় ধসের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দমকল বাহিনীর সহকারী স্টেশন অফিসার স্বপন কুমার ঘোষ দ্য রিপোর্টকে জানান, পৃথক তিনটি স্থান থেকে পাহাড় ধসে নিহত ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আর আহত ৫ জনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী দ্য রিপোর্টকে জানান, পাহাড় ধসে চট্টগ্রামের চন্দনাইশে ৪ জন ও রাঙ্গুনিয়ায় ২৬ জনসহ মোট ৩০ জন নিহত হয়েছেন।

টেকনাফ থানার ওসি মো. মাইনুদ্দিন খান জানান, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পশ্চিম সাতগরিয়া পাড়ায় পাহাড় ধসে মোহাম্মদ সলিম (৪৩) ও তার মেয়ে তৃষামনি (১০) মারা গেছে। তারা পাহাড়ের খাদের নিচে কুঁড়েঘর বানিয়ে বসবাস করত। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ করেই পাহাড় ধসে পড়ে। স্থানীয়রা মাটি সরিয়ে তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে বাবা-মেয়ের লাশ পায়।

খাগড়াছড়িরলক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ ইকবাল পাহাড় ধসে ২ জনের মৃত্যুর খবর শুনেছেন বলে জানিয়েছেন।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/এনআই/জুন ১৪, ২০১৭)