দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অষ্টম আসরের শিরোপা জিতেছে আন্ডারডক পাকিস্তান। রবিবার (১৮ জুন) ফাইনাল ম্যাচে তারা ১৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফেভারিট ভারতকে। এই জয়ের মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ২৫ বছর পর আইসিসির কোন টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতলো পাকিস্তান।

লন্ডনের ওভালে ঐতিহাসিক এ ম্যাচটিতে পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেওয়া ৩৩৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে এদিন শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ভারত। এই ধারাবাহিকতায় ৮০ রান তোলার আগেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এ অবস্থায় প্রথম সারির কোন ব্যাটসম্যান না থাকলেও কিছুটা সময় দলের হাল ধরেন আইপিএল কাঁপানো হারদিক পান্ডিয়া। ঝড়ো ব্যাটিং করে ভারত ইনিংসে তিনিই করেন সর্বোচ্চ ৪৩ বলে ৭৬ রান। আর এতেই হারের ব্যবধান কমে ভারতীয়দের। তবে, পান্ডিয়া রান আউট হওয়ার পর ৩০.৩ ওভারে ১৫৮ রানেই গুটিয়ে যায় ভারতীয় ব্যাটিং শিবির।

ভারতীয় ইনিংস শুরুর ওভারের তৃতীয় বলেই এদিন আমিরের এলবিডাব্লিউলের ফাঁদে পড়ে শূন্ রানে বিদায় নেন ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা। এর পরপরই আমিরের শিকার হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন দলপতি বিরাট কোহলি। ফেরার আগে তিনি করেন মাত্র ৫ রান। এছাড়া, যুবরাজের ব্যাট থেকে আসে ২২, শেখর ধাওয়ানের ব্যাট থেকে আসে ২১ এবং রবিন্দ্র জাদেজার ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান।

প্রথম তিন উইকেট তুলে নিয়ে এদিন ভারত শিবিরে ধস নামান পাক পেসার মোহাম্মদ আমির। এরপরই ২ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে বিপর্যয়ের মহাসমুদ্রে ঠেলে দেন পাক স্পিনার শাদাব খান। তবে শেষ অব্দি ৩ উইকেট তুলে নিয়েছেন পেসার হাসান আলী। আর একটি উইকেট নিয়েছেন জুনাইদ খান।

এর আগে এদিন টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এই সুবাদে আমন্ত্রণ পেয়ে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরাই এদিন দারুণ সূচনা করে ভিত গড়ে দিয়েছিল শিরোপা জয়ের। ওপেনিং জুটিতে (ফখর জামান ও আজহার আলী) তারা এদিন সংগ্রহ করে ১২৮ রান। যা ২০০৫ সালের পর দলটির ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ রান। অভিষেকের পর তৃতীয় ম্যাচে এসে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন নবীন পাক ওপেনার ফখর জামান। সেঞ্চুরির পর ১০৬ বলে ১১৪ রান করে হারদিক পান্ডেয়ার শিকার হয়েছেন ফখর। জাদেজার হাতে ক্যাচ তোলার আগে এই ইনিংসটিতে তিনি হাঁকিয়েছেন ১২ চার ও ৩ ছক্কা। আর ৫৯ রানে রান আউটের শিকার হয়েছেন অপর ওপেনার আজহার আলী। সাজঘরে ফেরার আগে তিনি সংগ্রহ করেছেন ৫৯ রান।

মোহাম্মাদ হাফিজ করেছেন হার না মানা ৫৭ রান। এসময় তার সঙ্গি হয়েছেন অপরাজিত ২৫ রান করা ইমাদ ওয়াসিম। এছাড়া বাবর আজম ৪৬ ও সোয়েব মালিক করেছেন ১২ রান।

ভারতের পক্ষে একটি করে উইকেট নিয়েছেন কেদার যাদব, ভুবেণেশ্বর কুমার ও হারদিক পান্ডেয়া।

টুর্নামেন্টের সেরা উইকেট শিকারী হিসেবে গোল্ডেন বল পেয়েছেন পাক পেসার হাসান আলী। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ রান পাওয়ায় গোল্ডেন ব্যাট পেয়েছেন শেখর ধাওয়ান। আর ফাইনাল ম্যাচে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন এই ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ফখর জামান।

পাকিস্তান একাদশ : আজহার আলি, ফখর জামান, বাবর আজম, মোহাম্মদ হাফিজ, শোয়েব মালিক, সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), ইমাদ ওয়াসিম, মোহাম্মদ আমির, শাদাব খান, হাসান আলি, জুনাইদ খান।

ভারত একাদশ : রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), যুবরাজ সিং, মহেন্দ্র সিং ধোনি (উইকেটকিপার), কেদার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ভুবনেশ্বর কুমার, জাস্প্রিত বুমরাহ।

(দ্য রিপোর্ট/এজে/এনআই/জুন ১৮, ২০১৭)