জোসনা জামান, দ্য রিপোর্ট : গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (জিসিসি) আওতাভূক্ত বিভিন্ন নতুন এলাকার অবকাঠামোগত সুবিধা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এসব এলাকায় নতুন পাকা সড়ক নির্মাণ ও বিদ্যমান সড়ক প্রশস্ত করা হবে। এতে যানজট কমে আসবে। এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে নতুন করে ড্রেন নির্মাণ এবং বিদ্যমান ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার করা হবে। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৬০ কোটি ৮২ লাখ টাকা।

একনেকের অনুমোদন পেলে জিসিসি কর্তৃপক্ষ ২০১৯ সালের সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৫৭ ওয়ার্ড ও ৩২৯ বর্গকিলোমিটার বিস্তীর্ণ জিসিসির ভোটার সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ ২৬ হাজার। সীমানা আয়তনে জিসিসি দেশের সবচেয়ে বড় সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রতি বিএনপির নির্বাচিত মেয়র এম এ মান্নানের অসহযোগিতামূলক মনোভাব সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কিছুটা বাধাগ্রস্ত করেছে।

এ প্রসঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ সোমবার দ্য রিপোর্টকে বলেন, নির্বাচিত মেয়র ১৮ মাস নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করেছেন। এসময়ে তেমন কোন উন্নয়ন কাজ হয়নি। বিভিন্ন মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি হওয়ায় তিনি কয়েকবার বরখাস্ত হয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে সিটির রাস্তাঘাট ও ড্রেন উন্নয়নে সাড়ে ৬শ’ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনাটি সরকারের কাছে পেশ করা হয়েছে। প্রকল্পটি পাশ হলে সিটি কর্পোরেশনের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে এবং বিভিন্ন এলাকার জলাবদ্ধতা সমস্যার নিরসন হবে।

জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারী তহবিল (জিওবি অনুদান) হতে দেওয়া হবে ৫২৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। অবশিষ্ট ১৩২ কোটি ১৬ লাখ টাকা সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব তহবিল হতে খরচ করা হবে। প্রকল্পটি গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) বরাদ্দহীনভাবে সংযুক্ত অননুমোদিত প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভূক্ত ছিল।

প্রকল্পের পটভূমিতে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে গাজীপুর ও টঙ্গী পৌরসভা এবং ছয়টি ইউনিয়ন (কাশিমপুর, কোনাবাড়ি, বাশন, কাউলতিয়া, গাছা ও পুবাইল) নিয়ে সিটি কর্পোরেশন গঠন করা হয়। সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে নতুনভাবে যুক্ত হওয়া ছয়টি ইউনিয়ন (প্রায় ৮৫ বর্গ কিলোমিটার) পশ্চাতপদ ও অনুন্নত। এসব এলাকার বেশিরভাগ রাস্তা কাঁচা। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের বিদ্যমান পাকা সড়কগুলোর প্রশস্ততা কম হওয়ায় যানজট লেগেই থাকে। বর্ষাকালে কাদাপানিতে এসব রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হয় এবং অনুন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থার দরুণ সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। এমন প্রেক্ষিতেই সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রাক মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিইসি সভার সুপারিশের আলোকেই প্রকল্প ব্যয় ৬৬০ কোটি ৮২ লাখ টাকা চূড়ান্ত করা হয়।

বছরভিত্তিক জিওবি অর্থের চাহিদা হিসেবে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চলতি অর্থবছরে ৩০০ কোটি টাকা, আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৭৭ কোটি টাকা এবং প্রকল্পের শেষ বছরে ৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। একই সময়ে জিসিসির নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে যথাক্রমে ৭৫, ৪৪ এবং ১৩ কোটি টাকা। জানা গেছে, প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে- ৮০ দশমিক ৩৯১ কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং, ১২০ দশমিক ১৫৬ কিলোমিটার আরসিসি সড়ক নির্মাণ, ১১৪ দশমিক ৫২৭ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, তিনটি ডাবল কেবিন পিকআপ ক্রয় ইত্যাদি।

(দ্য রিপোর্ট/জেজে/এপি/জুলাই ১২, ২০১৭)