মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, নীলফামারী : জীবন সংগ্রামের শুরুর দিকের কথা। বাবার অভাবের সংসারের হাল ধরেন আশরাফ সিকদার। দেশের বিভিন্ন নাম করা হোটেল রেস্তোরাঁয় মিষ্টি বানানোর কারিগর হিসেবে জীবন শুরু করেন তিনি। তারপর পরের অধীনে কিছু সময় পার করার পর মনের ইচ্ছাশক্তি পুঁজি করে সামান্য অর্থে ফুটপাতে গড়ে তোলেন নিজ হাতের তৈরি রসগোল্লার দোকান। পথে বসে হাড়িতে করে বিক্রি করতেন রসগোল্লা। আর তারপর দিনে-দিনে সুনাম ছড়িয়েছে দেশ জুড়ে।

আশরাফ সিকদারের খাঁটি রসগোল্লা এখন সবার মুখে মুখে। অদম্য এ মিষ্টি কারিগরের বাড়ি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ১০ নং পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে। বাবা মোহাম্মদ আলী মৃত্যুর পর মাসহ ৯ সদস্যের সংসারের রোজগারের একমাত্র মাধ্যমে এই রসগোল্লার দোকান।

রসগোল্লা কিনতে আসা ক্রেতা মো. আজিজার রহমান, মধু মিয়া, আব্দুল মান্নান, হাশেম আলী, যাদু মিয়াসহ কথা হয় কৃষক মো. জাহান আলীর সঙ্গে। তারা জানান, দেশের অনেক জায়গায় তারা কাজ করতে যান, সেখানেও মিষ্টি খান। কিন্তু আশরাফের তৈরি মিষ্টির মতো স্বাদ কোথাও পান না তারা।

কথা হয় ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল লতিফ খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আশরাফ ভাই আমাদের অহংকার। তার মিষ্টি একবার যে মুখে দিয়েছে, তার প্রশংসা তাকে করতেই হবে। তার দোকানে পাওয়া যায় চমচম, পন্স, মিষ্টি ও রসগোল্লা।’

আশরাফ শিকদারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, দৈনিক কত কেজি মিষ্টি বিক্রি হয় এবং দুধ সংগ্রহ করেন কিভাবে?

তিনি বলেন, ‘যদিও গ্রামের হাট বাজার, তারপরও বহু দূর-দূরান্ত থেকে গ্রাহক আসে। তাতে ৮০ থেকে ১২০ কেজি বিক্রি হয়। আর পাইকারী ও খামারিদের কাছ থেকে ৫০ টাকা দরে দুধ সংগ্রহ করি।’

‘যদি কোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান পাশে দাঁড়াতো তাহলে আজকের এই ছোট পরিসরে দোকানটি বড় করা যেতো। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের অনুপাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে, আশা ছাড়ি নাই। একদিন না একদিন দোকান বড় হবেই।’ যোগ করেন রসগোল্লা কারিগর আশরাফ।

(দ্য রিপোর্ট/এজে/এনআই/জুলাই ২৬, ২০১৭)