দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মিরপুরের দারুস সালাম এলাকার ‘জঙ্গি আস্তানায়’ এখনো প্রচুর ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) ও শক্তিশালী বোমা অবিস্ফোরিত অবস্থায় রয়েছে। এ ঘটনায় ভবনটির মালিক হাবিবুল্লাহ বাহার আজাদ ও নৈশপ্রহরী সিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে এক সাংবাদ সম্মেলনে মুফতি মাহমুদ এ কথা বলেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে র‍্যাব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা ভবনে প্রবেশ করে তল্লাশি শুরু করে।

সাংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ বলেন, বুধবার রাত থেকে ভবনটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছিল। কিছু স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবার অভিযান শুরু হয়। ভবনটিতে এখনো প্রচুর আইইডি ও বোমা অবিস্ফোরিত অবস্থায় রয়েছে। যেহেতু জঙ্গি আব্দুল্লাহ আইপিএস ও ইউপিএস তৈরির ব্যবসা করতেন তাই সেখানে প্রচুর ইলেকট্রিক ডিভাইস রয়েছে। একটি জায়গায় আমরা বেশকিছু ধারাল অস্ত্রও পেয়েছি।

র‍্যাব কর্মকর্তা আরো বলেন, তল্লাশি অভিযান শেষ করতে আরো কিছু সময় লাগবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে শেষ না হলে শুক্রবার আবারও তল্লাশি চালানো হবে।

নিহতদের পরিচয়ের ব্যাপারে সাংবাদকিদের এক প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ বলেন, যেভাবে তাদের মরদেহ পাওয়া গেছে তাতে কাউকে শনাক্ত করা খুব কঠিন। ডিএনএ পরীক্ষা ও ময়নাতদন্তের পরই সবার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এ ঘটনায় দুজনকে আটক করার কথা জানালেও তাদের পরিচয় জানাননি মুফতি মাহমুদ।

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গার মসন্দি এলাকার একটি বাড়ি থেকে গত সোমবার রাতে জঙ্গি সন্দেহে দুই ভাইকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ‘ফলোআপ’ হিসেবে মিরপুরে এ অভিযান চালায় র‍্যাব। যে বাড়িটিতে অভিযান চালায় এর নম্বর ২/৩/বি। মালিক টিঅ্যান্ডটির কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজাদ। বাড়িটির নাম ‘কমলপ্রভা’।

গত মঙ্গলবার দিনভর আবদুল্লাহকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়। দুপুরে ‘জঙ্গি’ আবদুল্লাহর বোন মেহেরুন্নেসা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে র‍্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে র‍্যাব। এ সময় ওই বাড়ির ২৩টি ফ্ল্যাট থেকে ৬৫ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়। ‘জঙ্গি’ আব্দুল্লাহ আত্মসমর্পণে রাজিও হয়।

পরে রাতে র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কর্মকর্তা মুফতি মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, ‘জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ না করে নিজেরাই ওই ভবনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে চার র‍্যাব সদস্য আহত হন।’

বুধবার দুপুরে ওই ভবনের একটি কক্ষ থেকে তিনজনের পোড়া দেহ উদ্ধারের তথ্য দেওয়া হয় র‍্যাবের পক্ষ থেকে। পরে বিকেলে র‍্যাবপ্রধান জানান, বাড়ি থেকে সাতটি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৭)