দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি অবহিত করতে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। চিঠিটি মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) আইন মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে।

প্রধান বিচারপতির চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চত করেছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। সন্ধ্যায় গণমাধ্যম কর্মীদের তিনি বলেছেন, ‘আমরা যখন বিদেশে যাই, তখন একটি জিও (সরকারি আদেশ) করতে হয়। মাননীয় প্রধান বিচারপতি যখন বিদেশ যান, তখন তার জন্যও জিও করতে হয়। তিনি জিও করার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে আমি শুনেছি।’

আইনমন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘চিঠি আমার মন্ত্রণালয়ে পৌঁছার পর সচিব মহোদয় আমাকে জানিয়েছেন যে এটা পৌঁছেছে। এখন প্রসেস করা হচ্ছে। আমার কাছে না আসা পর্যন্ত এটার কনটেন্ট (বিষয়বস্তু) কী আমি বলতে পারব না।’

আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক মিডিয়াকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকালে প্রধান বিচারপতির ওই চিঠি মন্ত্রণালয়ে পৌঁছায়।

চিঠির বরাত দিয়ে আইন সচিব বলেছেন, ‘আগামী ১৩ তারিখ (চলতি মাসের) তিনি (প্রধান বিচারপতি) বিদেশে যাবেন, ফিরবেন ১০ নভেম্বর।’

চলতি বছর আগস্টে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায় প্রকাশের পর থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তোপের মুখে পড়েন প্রধান বিচারপতি। এই দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে উঠে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে হঠাৎ করেই শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে গত ৩ অক্টোবর থেকে এক মাসের (১ নভেম্বর পর্যন্ত) ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি। ২৫ দিনের অবকাশ শেষে ৩ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট খোলার দিন থেকেই ছুটি নেন তিনি।

এ নিয়ে রাজনৈতিকমহল ও আইনজীবীদের মধ্যে আলোচনার ঝড় ওঠে। সরকারের সঙ্গে মতপার্থক্য দেখা দেওয়ায় প্রধান বিচারপতিকে জোর করে ছুটিতে পাঠানোর অভিযোগ তোলেন বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদসহ আইনজীবী সমিতির একাংশ। তবে সরকার ও আওয়ামী লীগ এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। প্রধান বিচারপতি বা আদালতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এর মধ্যেই প্রধান বিচারপতি সস্ত্রীক অস্ট্রেলিয়ায় যেতে পাঁচ বছরের ভিসার জন্য দূতাবাসে আবেদন করেন। দেশটিতে বর্তমানে তাদের বড় মেয়ে সূচনা সিনহা অবস্থান করছেন। তাদের তিন বছরের ভিসা দেয় অস্ট্রেলিয়া দূতাবাস। এরপর মঙ্গলবার তিনি রাষ্ট্রপতিকে তার বিদেশ ভ্রমণের বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে অবহিত করলেন।

২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারিতে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া প্রধান বিচারপতির আগামী ৩১ জানুয়ারি অবসরে যাওয়ার কথা।

(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/অক্টোবর ১০, ২০১৭)