১১ জানুয়ারি ২০০৭ সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই রাজনীতিবিদদের আটক করতে শুরু করে। তখন থেকেই কারাবরণ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন বিএনপির বর্তমান সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ল্যাগেজও রেডি করে রেখেছিলেন। তারেক রহমানকে আটক করার জন্য ৭ মার্চ দিবাগত রাতে যৌথবাহিনীর সদস্যরা তৎকালীন ক্যান্টনমেন্টের শহীদ মইনুল রোডের বাসভবন ঘিরে ফেলে। তারেক রহমানকে আটক করার সময় যৌথবাহিনীর যেসব সদস্য ক্যান্টনমেন্টের বাসভবনে গিয়েছিলেন তাদের ভিডিও করছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সদস্যরা খালেদা জিয়াকে ভিডিও করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানালেও তিনি তা অব্যাহত রাখেন। এক পর্যায়ে উত্তেজিত সদস্যরা খালেদা জিয়ার কাছ থেকে হ্যান্ডি ক্যাম নিয়ে আছড়ে ভেঙ্গে ফেলে।

২০০৭ সালের ৭ মার্চ বিনা অভিযোগে তারেক রহমানকে ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ মঈনুল রোডের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। ৭ মার্চ রাতে তারেক রহমান পরিবারের সদস্যদের বলেছিলেন, ‘ওরা আমাকে নিতে এসেছে। আমি কোনো অপরাধ করিনি, আমার জন্যে দোয়া করবেন।’ এরপর দু’রাকাত নফল নামাজ পড়লেন। মা বেগম জিয়ার অঝোর কান্না আর প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে তারেক রহমানকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা গ্রেফতার করে নিয়ে যান।

 

ওয়ান ইলেভেনের দুঃসহ নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে তারেক রহমান বলেছিলেন, ‘২০০৭-এর ৩১ ডিসেম্বর রিমান্ডে থাকাকালে আমার ওপর নানা রকমের দৈহিক নির্যাতন করা হয়। এর মধ্যে একটি ছিল অনেক উপর থেকে বার বার ফেলে দেওয়া। অসহ্য যন্ত্রণায় আমি কুঁকড়ে উঠেছি। কিন্তু ওইসব অফিসারের বিন্দুমাত্র মায়া-দয়া হয়নি। ওদের দায়িত্ব ছিল আমাকে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলা। তারপর থেকে দীর্ঘ সময় আমি কারাগারে। কোনো ডাক্তার নেই। চিকিৎসা হয়নি। প্রতিটি দিন কেটেছে নারকীয় যন্ত্রণায়। একজন রাজনীতিকের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে, গ্রেফতার চলতে পারে। কিন্তু নির্যাতন করার, শরীরের অঙ্গ বিকল করার, মানবাধিকার পদদলিত করার অধিকার সভ্যতার কোথায় আছে।’

 

তারেক রহমান ওয়ান ইলেভেনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানিয়েছিলেন, ‘আমাকে নিয়ে তদন্তকারীরা যে সিরিয়াসলি তদন্ত করেছে, তা মনে হয় না। চারশ স্যুটকেস ডলারে ভরে সৌদি আরবে পাচারের অভিযোগ তুললে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, একটি ডিসি-১০ বিমানের কার্গোহোলে কত স্যুটকেস আঁটে বা একজন যাত্রী অত স্যুটকেস কীভাবে নিয়ে যেতে পারে সে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা আছে কিনা। এরপর তারা আর সে বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করেনি। সরকার ব্যবস্থা বা রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ ওইসব বিপথগামী অফিসার স্রেফ আক্রোশের বশে আমাকে নির্যাতন করেছে। তদন্তকারীদের কিছু জ্ঞান তো থাকতে হয়। আমাকে নিঃসাড় করে দেয়াই ছিল তাদের লক্ষ্য।’

 

আইনজীবীদের সংগঠন ‘আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব জুরিজ’র কানাডা চ্যাপ্টারের সভাপতি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নিয়ে কর্মরত ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্রেটিক ল ইয়ার্স’র এক কর্মকর্তা ১৬ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ পর্যন্ত ঢাকা সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন ৮ মার্চ নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পাকিস্থানে জেনারেল মোশাররফকে ক্ষমতায় বসানোর স্বার্থে যেভাবে বেনজির ভুট্টো ও নওয়াজ শরিফকে দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত করে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল, ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের দুই বেগমকেও নির্বাসনে পাঠানোর কথা সে সমযয় তিনি শুনেছেন। ওয়ান-ইলেভেনের আগের কয়েক সপ্তাহে ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং কানাডা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনারদ্বয়ের তৎপরতার মধ্যেও এ ধরনের সংঘবদ্ধ পরিকল্পনার আভাস প্রতিভাত হয়।

‘রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তারেক রহমানের ওপর নির্মম নির্যাতনের পাশাপাশি তাকে মেরে ফেলতে পারে’-এমন আশঙ্কায় যৌথবাহিনীর সদস্যদের ছবি তুলে রেখে দিতে চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া। কিন্তু ডিভিক্যাম ভেঙ্গে ফেলার কারণে সে ছবি তিনি তুলে রাখতে পারেননি। শুধু তাই নয়, মোবাইল ফোন দিয়ে ছবি তুলতে চাইলে মোবাইল ফোন খালেদা জিয়ার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া হয়। তবে তারেক রহমানকে আটকের পর কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কিভাবে রাখা হচ্ছে তার নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখতেন খালেদা জিয়া।

তারেক রহমানকে আটকের সময়ে তার মেয়ে জাইমা রহমান তার দাদি খালেদা জিয়াকে বলেন, ‘দাদু তুমি না অনেক শক্তিশালী মানুষ। দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলা। তুমি আমার বাবাকে ওদের কাছে থেকে রেখে দিতে পারলা না।’ নাতির এমন কথায় আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েছিলেন খালেদা জিয়া। কিন্তু তার কিছুই করার ছিল না।

 

ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের একটি অংশ তারেক রহমানকে হত্যা করার মতো চক্রান্তও করেছিলেন। তবে সে সময় খালেদা জিয়াপন্থী নেতাদের পাশাপাশি প্রশাসনের একটি অংশ তারেক রহমানকে বাঁচিয়ে রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করে। এ বিষয়ে সবচাইতে শক্তিশালী ও কার্যকরী প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। তিনি বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ঝাপ করে তারেক রহমানকে হত্যার করার ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করতে পেরেছিলেন। ওয়ান-ইলেভেনে তারেক রহমানকে আটকের পর ১২ দফা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয়েছিল। তখন তার ওপর নির্যাতন করা হয়। সে সময় কারাগারে আটক বিএনপি নেতাদের অনেকেই বিভিন্ন সময় আলোচনায় বলেছিলেন, তাকে যখন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয়েছিলো তখন তিনি সুস্থ ছিলেন। কিন্তু পরে যখন আবার সেলে আনা হয় তখন তিনি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এসেছিলেন।  

 

রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য তারেক রহমানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলে। এক সময় কোন একটি টেষ্ট বাইরে থেকে করাতে হবে এমনটা শুনে তিনি হতাশ হয়েছিলেন। এক হাসপাতালে রোগীর সকল চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার মাজহারুল ইসলাম দোলনকে এ নিয়ে ভাবতে বলেছিলেন। ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এরকম সুবিধা সম্মলিত হাসপাতাল তৈরি করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন তাকে।

 

বিএনপির অভিযোগ, ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিনের সরকারের মতো বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আগামী দিনের প্রধান প্রতিপক্ষ ভেবে রাজনীতি থেকে তাকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্র করছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ আনা হলেও এখন পর্যন্ত একটি মামলায়ও সাজা দিতে পারেনি।

খালেদা জিয়া গ্রেফতার

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আটকের আগে কয়েকদফা তার ক্যান্টনমেন্টের বাসভবন ঘিরে রেখেছিলেন যৌথবাহিনীর সদস্যরা। তবে সর্বশেষ ৭ সেপ্টেম্বর তাকে আটক করা হয়। একইদিন তার ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোকেও গ্রেফতার করা হয়। এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলা করার পর দিবাগত রাতে যৌথবাহিনীর সদস্যরা তাদের ক্যান্টনমেন্টের বাসভবন ঘিরে রাখে। সকালে তাকে আটকের বিষয়টি জানানো হয়। তাকে আটকের পর নি¤œ আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সরাসরি সংসদ ভবন এলাকার সাবজেলে নিয়ে যাওয়া হয়। মুক্তি পাবার আগ পর্যন্ত তিনি সেখানেই ছিলেন। তবে গ্রেফতার হওয়ার আগে কারাবরণের জন্য প্রস্তুত ছিলেন খালেদা জিয়া। ল্যাগেজ প্রস্তুত ছিল। আটকের আগে দলের নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলেছেন তিনি। তাকে আটকের পর কোথায় রাখা হতে পারে, কি ধরণের মামলা দেয়া হচ্ছে সে বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন নেতাদের কাছ থেকে।

এছাড়া ওয়ান-ইলেভেন আসার পর থেকে বনানীর হাওয়া ভবন থেকে তৃণমূল নেতাদের নাম ও মোবাইল নম্বর সম্বলিত তালিকা নিজের কাছে নিয়ে রেখেছিলেন। সে তালিকা ধরে ধরে নিয়মিত তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথা বলতেন খালেদা জিয়া। এর ফলে তিনি নিজে যেমন মানসিকভাবে শক্তি পেয়েছিলেন তেমনি তৃণমূল নেতারাও চাঙ্গা হয়েছিলেন। এ জন্য মুড়ির মতো মোবাইল সিম সরবরাহ করতেন ঢাকার অবস্থানরত দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এসব মোবাইল ফোন দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতেন তিনি। শুধু তাই নয়, ঐ সময়ে যারা ক্যান্টনমেন্টের বাসভবনে যেতেন তাদের মোবাইল দিয়েও নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতেন খালেদা জিয়া। এভাবে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে দৃঢ় বন্ধন গড়ে তুলেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। দলের তৎকালীন মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভূঁইয়াসহ দলের সিনিয়র নেতাদের অনেকেই যখন সেনা প্রধান মইনের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন তখন তৃণমূল নেতাকর্মীরাই খালেদা জিয়ার মুল শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হন। এই সব নেতাকর্মীরাই খালেদা জিয়াকে শেষ পর্যন্ত রক্ষা করেন। শুধু দেশেই নয়, প্রবাসী নেতাদের সঙ্গেও মোবাইল ফোন কথা বলতেন খালেদা জিয়া। কারাবরণ থেকে বাঁচতে দলের বেশ কিছূ নেতা বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন। আবার কোন কোন প্রবাসী নেতা দেশে ফিরে এসেছিলেন খালেদা জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য। পাশাপাশি প্রবাসী নেতারা ফখরুদ্দিনের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জনমত তৈরি করেন। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামিনে কারামুক্ত হন। এদিন কারামুক্ত হয়ে খালেদা জিয়া প্রথমে শেরে বাংলানগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে যান। সেখান থেকে তিনি যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন তার বড় ছেলে তারেক রহমানকে দেখতে। পরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় হয়ে ক্যান্টনমেন্টের বাসভবনে চলে যান। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সিনিয়র নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া।

শেখ হাসিনা গ্রেফতার

ওয়ান-ইলেভেনের পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসুস্থ পুত্রবধু ও মেয়েকে দেখতে ১৫ মার্চ বিদেশ যান। তখন তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও খুনের মামলা দেয়া হয়। পরে দেশে আসতে চাইলে তাকে দেশে ফিরতে বাধা দেয়া হয়। সকল বাধা ডিঙ্গিয়ে তিনি দেশে ফেরেন ৭ মে। ১৬ জুলাই তাকে সুধা সদন থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর আদালত থেকে তাকে সংসদ ভবন এলাকার সাবজেলে নেয়া হয়। তিনিও গ্রেফতারের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। ২০০৮ সালের ১১ জুন তাকে মুক্তি দেয়া হয়।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আটক করে আদালতে নেয়ার পর সেখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর ব্যর্থতায় আদালতের সিড়ি দিয়ে ওঠানো ও নামানোর সময় চরম হেনস্থা হতে হয়। এসব দৃশ্য টিভিতে দেখে রাজনীতিবিদসহ সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার ধিক্কার জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন। জানা গিয়েছিল বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাবজেলে থাকার জন্য যে খাট দেয়া হয়েছিল তাতে বসামাত্র সে খাট ভেঙ্গে গিয়েছিল। পরে তাকে অন্য একটি খাট দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, ওয়ান-ইলেভেনের পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছিলেন, তাকে হত্যার জন্য শ্লো পয়জনিং করা হয়েছিল।

লেখক: সাংবাদিক