গাজীপুর প্রতিনিধি : আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে তাবলিগ জামাতের ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপ। আখেরি মোনাজাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনাসহ ইহকালে শান্তি ও পরকালের মাগফেরাত এবং বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি, সংহতি কামনা করেছেন মুসল্লীরা।

রবিবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় শুরুর কথা থাকলেও প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। ঢাকার কাকরাইল মসজিদের ইমাম হাফেজ মোহাম্মদ জোবায়ের আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন।

এদিন সকাল থেকে বাংলাদেশের মাওলানা প্রকৌশলী আনিসুর রহমানের বয়ানের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের তৃতীয় তথা শেষ দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। পরে হেদায়াতি বয়ান করেন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল মতিন।

এরপর অনুষ্ঠিত হয় আখেরি মোনাজাত। ইজতেমা ময়দানে বিদেশি নিবাসের পূর্বপার্শ্বে বিশেষভাবে স্থাপিত মঞ্চ থেকে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। বিশ্ব ইজতেমায় সমবেত দেশি-বিদেশি মুসল্লিদের পাশাপাশি রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর ও আশপাশের জেলার মুসল্লিরা আখেরি মোনাজাতে শরিক হন।

এদিকে আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান এলাকায় বিপুল সংখ্যক মুসল্লির সমাগম এবং তাদের চলাচলের সুবিধার্থে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করে জেলা পুলিশ।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে ট্রাফিক ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে। মুসল্লিদের বিশ্ব ইজতেমাস্থলে আসা-যাওয়া নির্বিঘ্ন করতে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর, আশুলিয়ার কামাড়পাড়া, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোগড়া বাইপাস ও টঙ্গীর নিমতলী পর্যন্ত সড়ক-মহাসড়কে টঙ্গীগামী সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। মুসল্লিদের সুবিধার্থে ভোগড়া বাইপাস ও নিমতলী থেকে ইজতেমা মাঠ পর্যন্ত ১৫টি শাটল বাস মুসল্লিদের আনা-নেওয়ার জন্য চলাচল করছে।

তিনি বলেন, ‘পুরো ইজতেমা ময়দান এলাকা আমরা কর্ডন করে রাখব। ইজতেমা ময়দানে খিত্তায় ও বিদেশি নিবাসে, ইজতেমা মাঠের চারপাশে, ওয়াচ টাওয়ারে পোশাকে-সাদা পোশাকে বেশ সংখ্যক পুলিশ অবস্থান করবে। আশপাশ এলাকায় টহল, চেকপোস্ট অব্যাহত থাকবে।’

যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ থাকায় মোনাজাতে অংশ নিতে ওই সব এলাকা দিয়ে ভোর থেকেই হাজার হাজার মুসল্লি পায়ে হেঁটে ইজতেমাস্থলের দিকে যান। অনেকে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার রাতেই ইজতেমা প্রাঙ্গনে এসে পৌঁছান।

এবার বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে ঢাকার একাংশসহ দেশের ১৪ জেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন। এসব এলাকার মুসল্লি আগামী বছরের বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে পারছেন না।

আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। চার দিন বিরতির পর আগামী ১৯ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে। আগামী ২১ জানুয়ারি ওই পর্বের আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/জানুয়ারি ১৪, ২০১৮)