দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:  সারাবিশ্বে একশ্রেণির ব্যবসায়ীর মধ্যে কর না দেওয়ার প্রবণতা আছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের সব দেশেই এ সমস্যা আছে। নিজের পকেট থেকে কোনো ব্যবসায়ী পয়সা দিতে চান না। কিন্তু আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের লোভটা একটু বেশি। তাঁরা প্রায় বিনা মাশুলে ব্যবসা করতে চান।’

সচিবালয়ে রবিবার দুপুরে বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন এবং বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিল নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) আইন দুই বছরের জন্য স্থগিত হলেও এফবিসিসিআইয়ের পাশাপাশি অন্য ব্যবসায়ীরাও বলছেন যে এর বাস্তবায়ন আসলে শুরু হয়ে গেছে এবং নতুন ভ্যাট আইন বলতে আর কিছু হবে না।

জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাট আইন তো আছেই। ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইনের পাশাপাশি ২০১১ সালে নতুন ভ্যাট আইনের খসড়া হলো। কিছু ক্ষেত্রে আমরা আগে যেটা ৩ থেকে ৪ শতাংশ ভ্যাট হার ছিল, সেগুলো ঢালাওভাবে ১৫ শতাংশ করে ফেলেছি।’

ভ্যাটের একই হার থেকে সরে আসবেন বলেছিলেন—এ কথা মনে করিয়ে দিলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ। ভ্যাটের একই হার যে ভালো নয়, তা এখন বুঝতে পেরেছি। অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, যুক্তরাজ্যে ভ্যাটের হার আছে ৮ থেকে ১০টি। আমাদের এখন কোনোটি ১৫ শতাংশ হবে, কোনোটি হবে এ রকম।’

বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন এবং বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে যেসব দাবি জানান, সেগুলো হচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সব সদস্যকে গ্রেড-১-এ উন্নীত করা, সব মহাপরিচালক ও গুরুত্বপূর্ণ কমিশনারদের গ্রেড-২-এ উন্নীত করা, কাস্টমস অ্যান্ড এক্সাইজ ক্যাডারের সদস্যদের থেকে একজনকে বোর্ড প্রশাসন পদে নিয়োগ দেওয়া, উপসচিবদের মতো এ ক্যাডার ও আয়কর ক্যাডারের পঞ্চম গ্রেড এবং তার ওপরের পদের কর্মকর্তাদের গাড়ি ঋণের ব্যবস্থা করা এবং বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি খুব বিস্মিত হয়েছি যে বিদেশে প্রশিক্ষণের সুযোগ থেকে তাঁরা বঞ্চিত থাকছেন। এটা কী করে হয়? আমি তো সবাইকেই বড় সুযোগ করে দিয়েছি। তবে তাদের দাবিগুলো পূরণের বিষয়ে আমার সমর্থন আছে। দেখি কী করা যায়। ২০০৯ সালে একবার তাদের অনেক কিছু দিয়েছিলাম। আমার এখন চলে যাওয়ার সময় হয়েছে। দেখি, যাওয়ার আগে কিছু করে যাব।’

অর্থমন্ত্রীর আশ্বাসের পর দুই ক্যাডারের কর্মচারীরা হাততালি দিয়ে অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/মার্চ ১১, ২০১৮)