দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : আমি বোকা টাইপের মানুষ। আমার মধ্যে ভয়-ভীতি কাজ করে না। আমাকে আঘাতের সময়ও ভয় পাইনি, এখনও পাই না। ভবিষ্যতেও পাব না বলে জানিয়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

বুধবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমইএইচ) চিকিৎসা শেষে সিলেটে যাওয়ার প্রাক্কালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় পাশে ছিলেন তার স্ত্রী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইয়াসমিন হক।

জাফর ইকবাল আরও বলেন, আমার শারীরিক অবস্থা এখন ভালো। কোনো অসুবিধা নেই। ডাক্তার আমাকে ১৮ তারিখে দেখা করতে বলেছেন। আমার মাথায় চারটা সেলাই করা হয়েছে। তাই আমি বাচ্চাদের মতো মাথায় টুপি পড়ে আছি। যাতে আঘাতটা কেউ দেখতে না পারে। মাথার সেলাই কেটে দেয়া হয়েছে। আমার হাতে সেলাই আছে। পিঠে সেলাই আছে। আমি খুবই ভালো রোগী।

জাফর ইকবাল বলেন, আমার বাম হাতটা আঘাতে অচল হয়েছিল। সৌভাগ্যক্রমে ডান হাতটা ভালো ছিল বলে হাসপাতালের বিছানায় থেকে লিখতে পেরেছি।

প্রগতিশীলতার পক্ষে লেখার কোনো বাধা আসছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে জাফর ইকবাল বলেন, বাধা আসবে কেন? আমার মনে হয় উল্টোটা হয়েছে। আমি কোনো বাধা পাচ্ছি না লেখায়।

তিনি আরও বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার ছেলে-মেয়ে থাকে। তারা লিখবে। আমার ছাত্র-ছাত্রীরা অনেকে অনেক কাজ করছে। নতুন নতুন বই লিখছে, গবেষণা করছে।

সিলেটে গিয়ে প্রথম কর্মসূচির জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, মুক্তমঞ্চে যে জায়গায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিলাম সেখানেই আমার শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলবো।

তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তার বক্তব্য কি জানতে চাইলে জাফর ইকবাল বলেন, বাংলাদেশ একটি সুন্দর দেশ। তোমরা দেশকে ভালোবাস। দেশ তোমাদের ভালোবাসবে।
গত ৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে এক অনুষ্ঠানে ছুরিকাঘাতে তিনি আহত হন। সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাকে রাজধানীর সিএমএইচে আনা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।

১৯৯৪ সালের ৪ ডিসেম্বর মুহম্মদ জাফর ইকবাল শাবিপ্রবিতে সিএসই বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। তারপর থেকে তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন।
এদিকে, জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারী ফয়জুরের বড় ভাই এনামুল ও তার বাবা মাওলানা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম এবং মামা ফজলুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মার্চ ১৪, ২০১৮)