চট্টগ্রাম অফিস: চট্টগ্রামে মো. মহিউদ্দিন (৩২) নামে এক যুবলীগকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নগরীর বন্দর থানার সল্টগোলা এলাকায় মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয়ে সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মো. মহিউদ্দিন দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর এলাকার বাসিন্দা। তিনি এলাকায় যুবলীগকর্মী হিসেবে পরিচিত।

মহিউদ্দিনের মা নূর সেহের বেগম জানান, দুই ভাইয়ের মধ্যে মহিউদ্দিন ছোট। সল্ট গোলা ক্রসিং এলাকায় তার একটি মোবাইল ফ্লেক্সিলোডের দোকান আছে।

তিনি বলেন, ‘সকাল ১০ টার দিকে এলাকায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়েছিল মহিউদ্দিন। দুপুরে সে মেহের আফজল স্কুলে গিয়েছিল। প্রতিবেশী এক যুবক বেলা আড়াইটার দিকে মহিউদ্দিনকে কোপানোর খবর দিলে সবাই বাসা থেকে স্কুলে যায়।’

নিহতের পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীরা এ ঘটনার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হাজী ইকবালকে দায়ী করেছেন।

নিহতের ভাই আবু ইউসুফ বলেন, ‘আগে মহিউদ্দিনের সাথে হাজী ইকবালের সখ্যতা ছিল। কিন্তু হাজী ইকবালের বিভিন্ন কাজের জন্য তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়।’

পক্ষ পরিবর্তন করায় হাজী ইকবালের নির্দেশে তাকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৩১ মার্চ স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে দুপুরে স্কুলে মিটিং চলছিল। হাজী ইকবালের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি দল প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে মহিউদ্দিনকে কুপিয়ে জখম করে।

মো. মাঈনুদ্দিন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হাজী ইকবাল, তার ছেলে আলী, ভাই মুরাদসহ বেশ কয়েকজন মিলে কুপিয়ে মহিউদ্দিনকে জহম করে।

লোকজন এগিয়ে যাওয়ায় তারা কয়েকটি মোটরসাইকেল ও একটি মাইক্রো বাসে করে পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, বছরখানেক আগে হাজী ইকবাল মেহের আফজল স্কুলের এক শিক্ষকে ছুরিকাঘাত করেছিল। সেসময় মহিউদ্দিন ওই স্কুল শিক্ষকের পক্ষ নেওয়ায় হাজী ইকবালের সাথে তার দূরত্ব তৈরি হয়। সে বিরোধের জেরে মহিউদ্দিন খুন হয় বলে ধারণা স্থানীয়দের।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘মেহের আফজল স্কুলের প্রাক্তণ শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী নিয়ে দুপুরে স্কুলে বৈঠক ছিল। সেখানে যোগ দিতে গিয়েছিল মহিউদ্দিন। এসময় স্থানীয় হাজী ইকবালের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় মহিউদ্দিনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ‘তার মাথা, বুক, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কোপানোর দাগ ছিল এবং পায়ের রগও কেটে গিয়েছিল।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/মার্চ ২৬, ২০১৮)