দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : স্বল্পোন্নত দেশের স্ট্যাটাস থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্যে ৩টি সূচকেই বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন (বিএনএফ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান। তিনি বলেন, বিএনএফ একটি সফল প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির মডেল সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে।

শনিবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন-এর কনফারেন্স কক্ষে “টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের অবদান” বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনএফ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এ এফ এম ইয়াহিয়া চৌধুরী। সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক, প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও বিএনএফ-এর সাধারণ পরিষদের সদস্য ড. নিয়াজ আহমদ খান।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী সেলিমা খাতুন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ ইউনুসুর রহমান, অর্থ বিভাগের সচিব মোহম্মদ মুসলিম চৌধুরী সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনএফ-এর পরিচালনা পরিষদের সম্মানিত সদস্য ও ফিন্যান্সিয়াল রির্পোটিং কাউন্সিল-এর চেয়ারম্যান সি, কিউ, কে মুসতাক আহমদ (সিনিয়র সচিব, অবঃ) ও নজমুল হক, সাধারণ পরিষদের সদস্য আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী (সাবেক সচিব, অবঃ), বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ শফিকুল ইসলাম, পিএসসি’র সদস্য উজ্জল বিকাশ দত্ত, সাবেক সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায়, এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আব্দুস সালাম, প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী, পরিবীক্ষণ উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোঃ নূরুল ইসলাম, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সদর আলী বিশ্বাসসহ ১১টি সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।

সেমিনারে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী সেলিমা খাতুন বলেন, সরকারের একার পক্ষে উন্নয়ন সম্ভব না, এনজিও সরকারের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। জনগোষ্ঠিকে শিক্ষিত করতে পারলে সহজেই স্বাস্থ্য, সেনিটেশন, ইত্যাদি বিষয়ে সহজেই সচেতন করা সম্ভব হবে। এছাড়া বায়োগ্যাসকে জনপ্রিয় করতে পারলে একদিকে রান্নার কাজে গ্যাস ব্যবহার করা যাবে, অন্যদিকে পরিবেশ নিরাপদ থাকবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং জমিতে ব্যবহারের জন্য জৈব সার পাওয়া যাবে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ ইউনুসুর রহমান বলেন, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব রবার্ট ম্যাকনমারা উন্নয়নের জন্য এনজিও গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তার এ বক্তব্যের পর বিশ্বে এনজিও’র সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এখন এনজিও সরকারের উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।

অর্থ বিভাগের সচিব মোহম্মদ মুসলিম চৌধুরী বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও সমন্বয় ইস্যু মূল সমস্যা। এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যই সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে বাস্তবায়ন না করে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সমন্বয় করে বাস্তবায়ন করতে হবে।

এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আব্দুস সালাম বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে এনজিওদের ভূমিকা কি হবে এবং বাস্তবায়ন করতে গেলে অর্থ কোথা থেকে আসবে সে বিষয়ে সরকার চিন্তাভাবনা করছে।

বিএনএফ’র সাধারণ পরিষদের সদস্য আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, অন্য প্রতিষ্ঠানে টাকা দিলে টাকা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু বিএনএফ এ টাকা দিলে টাকা শেষ হয় না। এখানে একদিকে টাকা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হতদরিদ্রদের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি পায়।

এছাড়া সেমিনারে অন্যান্য বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন একটি স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান। অর্থ পেলে এ প্রতিষ্ঠান আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারবে। সে কারণে বিএনএফ-এর ফান্ড বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাক মুক্ত ঘোষণার লক্ষ্যে এক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এ কর্মসূচিতে বিএনএফ-কে অন্তর্ভূক্ত করার অনুরোধ জানানো হয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন এ যাবৎ ১ হাজার ১২০টি সহযোগী সংস্থার মধ্যে সর্বমোট ১২২.০৫৫ কোটি টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে।

এ সেমিনারে ৬টি সহযোগী সংস্থার মধ্যে ১৫.৫০ লক্ষ টাকার অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়। এ অনুদানের অর্থে সহযোগী সংস্থাসমূহ হতদরিদ্রদের কোমর তাঁতে সহায়তা, বিনামূল্যে গাভী ও ছাগল প্রদান, ভ্যান গাড়ি প্রদান, ওয়াটসান ও সেলাই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে।

এছাড়া কর্মমানে অনন্য অবদানের জন্য ৫টি সহযোগী সংস্থাকে পুরস্কৃত করা হয়।

বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অধীন একটি স্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য সরকারের অর্থে দেশের জাতীয় পর্যায়ে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে আঞ্চলিক ও স্থানীয় পর্যায়ে কর্মরত এনজিওসমূহের মধ্যে অনুদান প্রদান করে থাকে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/এপ্রিল ১০, ২০১৮)