দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রাত পোহালেই পহেলা বৈশাখ, ১৪২৫। বাংলা নতুন বর্ষবরণে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা আর উল্লাসের কমতি নেই। দিনভর নানা আয়োজনে বাঙালি জাতি কাল মেতে উঠবে উৎসবে।

‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমোঘ আহ্বানে বৈশাখের ভোরে জেগে উঠবে নগর-গ্রাম, পাড়া-মহল্লা।

‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’- বাউল সম্রাট সাঁইজি লালনের অমর সৃষ্টিকে এবার মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য করা হয়েছে।

রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ আর চারুকলায় আনন্দ শোভাযাত্রায় নামবে ঢল।

চারুকলা অনুষদ ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের দম ফেলার ফুরসত নেই। তুলির শেষ আঁচড় নিয়ে সবাই ব্যস্ত। কেউ মোটিফ তৈরির কাজ করছেন। কেউবা রং-তুলি দিয়ে ফুটিয়ে তুলছেন মনের সব ক্যানভাস।

বাঁশের চটা বেঁধে তৈরি বাঘ, হাঁস, বিড়াল, শখের হাঁড়ি, শিশু হরিণ, পেঁচা, কাগুজে বাঘ, ছোট বড় মাঝারি আকৃতির তুহিন পাখিসহ দারুণ সব মোটিফ রয়েছে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজনে।

এসবের পাশাপাশি কেউবা আবার হাঁড়ি-পাতিলের ওপর কারুকার্য তৈরি করছেন। কেউবা ব্যস্ত মঙ্গল শোভাযাত্রায় ব্যবহার্য বেতের তৈরি বিভিন্ন প্রতিকৃতি অঙ্কনে।

এই কাজে শিশুরাও পিছিয়ে নেই। শিশুরাও তাদের কোমল হাতে রাঙ্গিয়ে তুলছে সব ক্যানভাস।

আয়োজকরা জানায়, এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় বরাবরের মতো বাংলা সংস্কৃতির সব কিছুই থাকবে। আর সে লক্ষ্যেই গত ২৭ মার্চ থেকে চারুকলার শিক্ষার্থীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

এবার মোট ৮টি মোটিফ তৈরির প্রস্তুতি ছিল তাদের। যদিও কোটা সংস্কারের আন্দোলনের কারণে একটি মোটিফ তৈরি করা সম্ভব হয়নি। ফলে ৭টি মোটিফ থাকবে মঙ্গল শোভাযাত্রায়।

এগুলো হলো- মা পাখি সাথে ছানা, হাতি, মাছ ও বক, মহিষ, সূর্য, টেপা পুতুল, সাইকেলে মা ও মেয়ে।

শনিবার সকাল নয়টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। শাহবাগ মোড় হয়ে শেরাটন হোটেলের সামনে দিয়ে টিএসসি ঘুরে আবার চারুকলা অনুষদের সামনে এসে শেষ হবে শোভাযাত্রা।

মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রস্তুত কমিটির সদস্য জাহিদুল হক গণমাধ্যমকে জানান, এবার শোভাযাত্রার প্রস্তুতিতে নানা বাধা-বিপত্তি এসেছে। ঝড়-বৃষ্টি আর কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে সঠিক সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। তারপরও সবাই প্রচুর কাজ করেছে। আশা করছি ভাল কিছুই হবে।

তিনি আরও বলেন, এবার শোভাযাত্রায় নতুন একটি মোটিফ থাকছে, তাহলো মহিষ। মহিষ আসলে শান্ত ও নিরীহ একটি প্রাণী। মানুষের ধীরস্থিরের প্রতি নজর দিতে এটা করা হয়েছে। মূলত মানুষকে বুঝতে পরলেই সোনার মানুষ হওয়া যাবে, এটাই এবারের মূল উপজীব্য।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/এপ্রিল ১৩, ২০১৮)